পহেলা বৈশাখে শাড়ি পরা নিয়ে ভাবছেন?
১০৮ পদ্ধতিতে পরা যায় শাড়ি। তবে এর মধ্যে নিভি, বাঙালি, গুজরাটি, তামিল, শ্রীলঙ্কান ও মারাঠি হলো স্বতন্ত্র পদ্ধতি। আর বাকি সবগুলোই এগুলোর ধরন।
আসছে পহেলা বৈশাখ। বাঙালি উৎসবের অনন্য রূপ উৎসব অনুযায়ী পোশাক পরিধান। বাংলা বছরের প্রথম দিনে যেমন বাঙালিয়ানা খাবার, আচার-অনুষ্ঠান প্রাধান্য পায়, তেমনি গুরুত্ব পায় পোশাকও। উৎসবকে কেন্দ্র করে বাঙালি নারীর প্রথম পছন্দ শাড়ি। এখন আর শাড়ি শুধু একভাবেই পরিধান করে না। বিভিন্ন সংস্কৃতি ও অঞ্চলের শাড়ি পরার ধরন মিশে গেছে সব সংস্কৃতিতে।
আজকে ছয়টি শাড়ি পরার ধরন আপনাদের সামনে তুলে ধরব। যাতে করে আপনারা যে কোন বিশেষ বিশেষ অনুষ্ঠানে, নিজ নিজ ব্যক্তিত্বের আস্ফালন ঘটাতে পারেন।
১. আটপৌরে শাড়ি
বাঙালি স্টাইলে শাড়ি পরতে হলে, শাড়িটিকে নাভি থেকে শুরু করে কোমর বরাবর বৃত্তাকারে নাভির ওপরে এবং ডান দিক থেকে ঘুরিয়ে পেছনের মাঝামাঝি অংশে, পেটিকোটের মধ্যে গুঁজে দিতে হবে।
শাড়ির বাকি অংশ সরু প্লিট করে বাম কাঁধের ওপর দিয়ে ফেলে দিন, যাতে পায়ের গোড়ালি স্পর্শ করে। ফেলে দেওয়া অংশটি নিয়ে, সামনের দিক থেকে ঘুরিয়ে, ডান কাঁধের ওপর দিয়ে পেছনদিকে ঝুলিয়ে দিন।
২) নিভি স্টাইল শাড়ি
এই স্টাইলে শাড়ি পড়তে হলে প্রথমেই শাড়ি আপনার কোমরের বামদিক থেকে ডানদিকে পেঁচিয়ে পেটিকোটের ভেতর গুঁজে দিতে হবে। এক্ষেত্রে অবশ্যই শাড়ির ঝুলটি যেন ভূমির থেকে দু ইঞ্চি ওপরে থাকে।
পেটিকোটের মধ্যে শাড়িটি গোঁজা যেখানে শেষ হয়েছে, সেখান থেকে আটটি কুচি আপনাকে বানাতে হবে। কুচি বানানো হয়ে গেলে, সবগুলো কুচি একত্রিত করে পেটিকোট এর মধ্যে নাভির ওপরে গুঁজে দিতে হবে।
শাড়ির বাকি অংশ আপনার শরীরের বাম দিক দিয়ে, পেছন থেকে ঘুরিয়ে সামনে এনে কাঁধের ওপরে ফেলতে হবে।
৩. গুজরাটি স্টাইল শাড়ি
প্রাথমিকভাবে গুজরাটি স্টাইলে শাড়ি পরিধান অনেকটাই, নিভি স্টাইলের মতো। এখানে আপনার শাড়ির আঁচলটি বাম হাতের নিচের থেকে ডান কাঁধে আড়াআড়িভাবে উঠে পেছনে না ঝুলে, সামনের দিকে ঝুলবে।
অতঃপর ঝুলন্ত আঁচলটির থেকে একটি কোণা বের করে পরিহিত ব্লাউজের সঙ্গে ডান দিকে, কাঁধের ওপর পিন-আপ করতে হবে।
৪. তামিল স্টাইল শাড়ি
এই স্টাইলে শাড়ি আপনাকে পড়তে হলে, অবশ্যই একটি কুচির মাথা বের করতে হবে । এই মাথাগুলোকে মুন্ডি বলে।
শাড়িটি পড়ার আগেই আপনাকে শাড়ির আঁচলের উল্টোদিকে আটটি কুচি করে নিতে হবে। এই সময়েই আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে যে, মুন্ডি কী ধরনের হবে। যদি মুন্ডি ফ্ল্যাট হয়, তাহলে বড় বড় ভাজ দিয়ে পাখার মতো করতে হবে আর তা না হলে, ভাঁজ ছোট করলেই কাজ মিটবে।
এরপর ওই কুচিটি পেছনের পেটিকোটের সঙ্গে লাগিয়ে শাড়ি পরা শুরু করতে হবে। অতঃপর শাড়িটি পেঁচিয়ে সামনে আনতে হবে আবার কুচির ওপর নিয়ে যেতে হবে।
এবার আঁচলটি, বাম কাঁধের ওপর দিয়ে পেছনে ঝোলাতে হবে। একটি গিট, নাভির কাছে দিতে হবে। এবার পেছনের কুচিগুলোকে পাখার মতো করে সাজাতে হবে।
৫. শ্রীলঙ্কান স্টাইল শাড়ি
এটি খুব অনন্য ধরন। এই পদ্ধতিতে প্রথমেই আঁচলটিকে কুচি করে, আড়াআড়িভাবে বাম কাঁধে ফেলে, টেনে নাভি পর্যন্ত আনতে হবে। অতঃপর আলাদা একটি কাপড়ের বেল্ট দিয়ে আঁচলটিকে কোমরে বেঁধে নিতে হবে।
এখন শাড়ির অবশিষ্ট অংশটি কোমরের ডানদিক থেকে ঘুরিয়ে সামনে এনে পাঁচটি কুচি করতে হবে। কুচির ওপরের অংশটি বেল্টের মধ্যে ঢুকিয়ে, মাথাটি সামনের দিকে ঝুলিয়ে দিতে হবে।
কাপড়ের বাকি আর একটি অংশ কোমরের ডান দিক থেকে ঘুরিয়ে মাজায় গুঁজে দিতে হবে।
৬. মারাঠি স্টাইল শাড়ি
১৯ অথবা ২০ বছর বয়সীদের জন্য এই স্টাইলটা একদম ঠিকঠাক। পুরো ১২ হাতের একটা শাড়ি নিন। এখন শাড়িটি দুটো অংশে এমনভাবে ভাগ করুন, যাতে একটি অংশের তুলনায়, আরেকটি অংশ বেশ বড় হয়।
নাভির নিচ বরাবর শাড়িটি একটা গিঁট দিন। গুঁজার দিক থেকে দুই পায়ের মাঝ বরাবর ধুতির আকারে শাড়ির কম অংশটুকুকে নিয়ে ব্যাক সাইডে গুঁজে দিন।
শাড়ির বেশি অংশ অর্থাৎ আঁচল বরাবর সরু ভাঁজ করে (কমপক্ষে পাঁচটি) দুই পায়ের মাঝ বরাবর কোমর বেশ করে ঘুরিয়ে, বাম কাঁধ বরাবর পেছনে ফেলুন। নিজেকে আরও মোহময়ী করে তুলতে পিনটাকে ধরে, একটা কোমর বন্ধনী বেঁধে ফেলুন।
টিটি/