রমজানে ছোলা পিঁয়াজুর চল এলো কোত্থেকে
রমজান মাসে বাংলাদেশের ইফতারে পেঁয়াজু, বেগুনি, ছোলা, চপ, এবং মাংসের তৈরি কাবাবসহ নানা মুখরোচক খাবার অনেকটা যেন অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। কিন্তু আমরা কি জানি এসব মুখরোচক খাবার আমাদের দেশে চল হলো কিভাবে?
শরবত: ইফতারে শরবত খাওয়ার রীতি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো ছাড়াও আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও ভারতে রয়েছে। পানির পিপাসা থেকে স্বাদ, মিষ্টি ও সুগন্ধি শরবত খাওয়ার চল চালু হয়েছে বলে মনে করেন ইসলামী ইতিহাসবিদরা।
খেজুর: বিশ্ব নবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) ইফতারের সময় খেজুর খেতেন। ফলে ইফতারের সময় খেজুর খাওয়াকে সুন্নত বলে মনে করা হয়। মধ্যপ্রাচ্যের থেকে এই রীতিটি সারা পৃথিবীতেই ছড়িয়ে পড়েছে। সারা বিশ্বেই ইফতারের সময় খেজুর অন্যতম প্রধান অনুষঙ্গ বলে মনে করা হয়। সেজন্যই বাংলাদেশের মানুষ মনে করে ইফতারিতে সুন্নত হিসেবে খেজুর খাওয়া"।
ছোলা: এটা আফগানদের প্রিয় খাবার, তাদের কাছ থেকে ভারতবর্ষের, বাংলাদেশের মুসলমানরা গ্রহণ করেছে। তারা কাবুলি চানা বা কাবুলি ছোলা খেয়ে থাকে। সেখান থেকেই এটা খাওয়ার চল এসেছে। তবে ভারত বা বাংলাদেশে এসে সেটা আরও মশলা, পেঁয়াজ ইত্যাদি দিয়ে মুখরোচক করে রান্না করা হয়ে থাকে। সেটার সাথে মুড়ি খাওয়ার চলও এই অঞ্চলের মানুষের নিজস্ব উদ্ভাবন।
পেঁয়াজু, বেগুনি, চপ: এটা উত্তর ভারত থেকে বাংলাদেশসহ বিভিন্ন এলাকার খাবারে ছড়িয়ে পড়েছে। 'এই অঞ্চলে ইসলাম ছড়ানোর সময় অ্যারাবিক প্রভাব ছিল, পার্সিয়ান প্রভাব ছিল, পরবর্তীতে সেটা একপ্রকার ভারতীয়করণও হয়। ভারতে এসে, মূলত উত্তর ভারত থেকে ইফতারের সময় মুখরোচক খাবারের অংশ হিসাবে নানা রকমের ভাজাপোড়া খাওয়ার চল যোগ হয়েছে। তখন পেঁয়াজু, বেগুনি, নানা ধরনের চপ খাওয়ার চল যুক্ত হলো। সেটাই পরবর্তীতে আমরাও গ্রহণ করেছি।
কাবাব, হালিম, বিরিয়ানি: মুঘল খাবারের মধ্যে পারসিক খাবারের প্রভাবটা অনেক বেশি ছিল। তারাই ইফতারে বিরিয়ানি, কাবারের মতো খাবার খেতো। সেটা দেখে এই অঞ্চলের বনেদি মানুষজনও খেতে শুরু করে। এখনো ইরান, আরব আমিরাত, সৌদি আরব ইত্যাদি মধ্যপ্রাচ্যের দেশে ইফতারির সময় কাবাব সহযোগে বিরিয়ানি বা পোলাও খাওয়ার চল রয়েছে।
এসব মুকরোচক খাবারের সঙ্গে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি থাকা ও মিষ্টি জাতীয় খাবার রাখা উচিৎ। তবে প্রতিদিন তেলে ভাজা খাবার না খেয়ে তার বদলে চিড়া, ফলমূল জাতীয় খাবার খাওয়া শরীরের জন্য ভালো।