পিতা-মাতার আয়ের উৎস সন্তানদের জানতে চাইতে বললেন প্রধান বিচারপতি
প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, ‘আমি নবীন ছেলে-মেয়েদের উদ্দেশ্যে বলছি, তারা তাদের পিতা-মাতার কাছে বিনয়ের সঙ্গে জানতে চাইবে যে, তাদের বেতন-ভাতা কত? তাদের মাসিক আয় কত? মাসিক ব্যয় কত? তাদের সংসার কীভাবে চলে? তারা কীভাবে বিলাসবহুল জীবন-যাপন করে?’
বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক দুর্নীতিবিরোধী দিবসে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আয়োজনে এক আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দিয়ে তিনি নবীনদের উদ্দেশে এই পরামর্শ দেন।
বাংলাদেশ শিল্পকলা একামেডিতে অনুষ্ঠিত সভার প্রধান অতিথি রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের ধারণকৃত ভিডিও বক্তব্য তুলে ধরা হয়। দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে দুদক কমিশনার মোজাম্মেল হক খান, জহুরুল হক ও দুদক সচিব মু. আনোয়ার হোসেন হাওলাদার বক্তব্য দেন।
বক্তব্যে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘দুর্নীতিবাজদের পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে বয়কট করতে হবে। তরুণ প্রজন্ম দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে দেশ দুর্নীতিমুক্ত হতে বাধ্য।’
শৈশবের স্মৃতি থেকে প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘আমরা শৈশবে দেখেছি, দুর্নীতিবাজদের সমাজ থেকে বয়কট করা হতো। তাদের সঙ্গে আত্মীয়তার সম্পর্ক স্থাপন করতে সংকোচ বোধ করা হতো। বরং এখন তাদের উৎসাহিত করা হয়। দুর্নীতিবাজদের তোষণ করা হয়। আমাদের পূর্বের কালচারে ফিরে যেতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয়, যখন দেখি স্বনামধন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি অর্জনের পর রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়ে কিছু কর্মকর্তা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। দেশের বিদ্বান ব্যক্তিগণ লোভী হলে, ঐশ্বর্যের পেছনে ছুটলে, অসাধু হলে দুর্নীতিকে প্রতিরোধ করা কোনো দিন সম্ভব হবে না।’
কোনো নিরপরাধ ব্যক্তি যাতে দুর্নীতির মামলার শিকার না হন এবং কোনো দুর্নীতিবাজ যাতে পার পেয়ে না যায় সে বিষয়ে দুদক কর্মকর্তাদের সতর্ক নজর রাখার আহ্বান জানান প্রধান বিচারপতি।
দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রসিকিউশন টিমকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানিয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা, প্রসিকিউশন ও বিচারকদের মধ্যে যৌথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে দুদককে উদ্যোগ নিতে বলেন তিনি।
এমএ/এএন