বহুবিবাহ সম্পর্কে হাইকোর্টের রুল
সমান অধিকার নিশ্চিত না করে বহুবিবাহের আইনি প্রক্রিয়া কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বুধবার (৫ জানুয়ারি) এই রুল জারি করেন।
রুলে বহুবিবাহের নীতিমালা তৈরি করতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
এর আগে বহুবিবাহের অনুমতি সংক্রান্ত মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট দায়ের করেন। আইনসচিব, সংসদ বিষয়ক সচিব এবং ধর্মসচিবকে বিবাদী করা হয়েছে রিটে।
রিটের পক্ষে আজ আদালতে শুনানি করেন তিনি। রিটে বহুবিবাহের অনুমতি সংক্রান্ত মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারা অসাংবিধানিক ঘোষণার আবেদন জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়, ইসলাম ধর্মে এক স্ত্রী থাকাবস্থায় পুরুষের একাধিক বিয়ের বিধান রয়েছে। একসঙ্গে চারজন পর্যন্ত স্ত্রী রাখার অনুমতি থাকলেও পবিত্র কুরআনে সব স্ত্রীর সমান অধিকার নিশ্চিতের জন্য জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। তবে ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের ৬ ধারায় বহু বিবাহের যে বিধান করা হয়েছিল, তাতে সব স্ত্রীর সমান অধিকার নিশ্চিতের বিষয়টি উপেক্ষিত। যদিও স্বামীর বহুবিবাহের ফলে বর্তমান স্ত্রীর ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি, তবুও সালিশি কাউন্সিলকে অনুমতি দেওয়ার সর্বময় ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে, যা বর্তমান স্ত্রীর সাংবিধানিক অধিকারকে ক্ষুণ্ন করে।
আইনজীবী ইশরাত হাসান আরও বলেন, মুসলিম পারিবারিক আইনের বিষয়ে পারিবারিক আদালত উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ; কিন্তু এখানে বহুবিবাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু কেবল সালিশি কাউন্সিলের হাতে দেওয়া হয়েছে, যা নারীর মৌলিক অধিকারের পরিপন্থী।
মুসলিম অধ্যুষিত উন্নত দেশে বহুবিবাহের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য পরীক্ষার সনদ, আর্থিক সক্ষমতার সনদ ইত্যাদি দাখিল করে বর্তমান স্ত্রীর বক্তব্য শুনানি করে আদালতের অনুমতি নিতে হয়। তিনি বলেন, আমাদের দেশে সালিশি কাউন্সিলের সাক্ষ্য-প্রমাণ নেওয়ার আইনগত সুযোগ নেই। বহুবিবাহের বর্তমান যে বিধান রয়েছে, তা সংশোধন করে আরও কঠোর বিধান করা উচিত। এজন্য এই রিট দায়ের করা হয়েছে।
এমএ/এসএ/