কক্সবাজারে পর্যটক ধর্ষণ
র্যাব-পুলিশের আলাদা বক্তব্য কাম্য নয়: হাইকোর্ট
সম্প্রতি কক্সবাজারে এক নারী পর্যটককে ধর্ষণের ঘটনায় পুলিশ ও র্যাবের আলাদা বক্তব্য প্রকাশিত হয়েছে গণমাধ্যমে। বিষয়টি এক আইনজীবী হাইকোর্টের নজরে আনলে মামলার সঠিক তদন্তের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর এমন আলাদা বক্তব্য কাম্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
আদালত বলেছেন, ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য এলে পরে সত্য ঘটনা উদঘাটন হলেও সাধারণ মানুষ নানা রকম ধারণা পোষণ করে।
ওই অভিযোগের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা রিটের শুনানিতে মঙ্গলবার (৪ জানুয়ারি) রিটকারী আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন ভূইয়া রাসেল আদালতকে বলেন, ‘কক্সবাজারের ঘটয়ায় পুলিশ ও র্যাবের বক্তব্য অসামঞ্জস্যপূর্ণ। বিভিন্ন মিডিয়ায় তাদের ভিন্ন বক্তব্য এসেছে। তাই এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশনা চাচ্ছি।’
এর পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বলেন, মিডিয়া তথ্য খুঁজবেই তাই মিডিয়াকে দোষ দিয়ে লাভ নেই।
আদালত বলেন, গ্রেপ্তার ও মামলা কিংবা তদন্তের স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একটি এজেন্সি আরেকটি এজেন্সিকে সহযোগিতা করতে পারে। তবে তদন্ত চলাকালে তদন্ত কর্মকর্তাদের কথা কম বলাই ভালো।
এরপর আদালত কোনো আদেশ না দিয়ে রিটটি রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমারকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে যোগাযোগ করে এটা বলতে বলেন যে, তারা যেন ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য না দেয়।
এদিন রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আবদুল্লাহ আল হারুন ভূইয়া রাসেল ও আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী নিলু। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ ও দেলোয়ার হোসেন।
কক্সবাজারে পর্যটককে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আবদুল্লাহ আল হারুন ভূইয়া রাসেল হাইকোর্টে রিটটি করেন। রিটে স্বরাষ্ট্রসচিব, আইজিপি, পর্যটনসচিব, জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারসহ ছয়জনকে বিবাদি করা রিটে ধর্ষণের অভিযোগে জড়িতদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপের নির্দেশনার পাশাপাশি রুল চাওয়া হয়।
গত ২২ ডিসেম্বর কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের লাবণী পয়েন্ট থেকে ২৫ বছর বয়সী এক নারীকে তুলে নিয়ে তার স্বামী-সন্তানকে জিম্মি করে একটি আবাসিক হোটেলে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে। পরদিন ওই নারীর স্বামী চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত পরিচয়ের আরও তিনজনের বিরুদ্ধে কক্সবাজার সদর থানায় মামলা করেন।
পরে ওই ঘটনা নিয়ে পুলিশ ও র্যাব ভিন্ন বক্তব্য দেয়। ঘটনার শিকার নারী ও তার স্বামী গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, পুলিশের শেখানো কথা তাদের বলতে বাধ্য করা হয়েছে আদালতে।
এমএ/এসএন