সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে ১৫ সাক্ষ্য সম্পন্ন
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় ক্যাসিনোকাণ্ডের অন্যতম হোতা হিসেবে পরিচিত সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে এ যাবত ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার (৩ আগস্ট) এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য ছিল।
সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ধার্য দিনে জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং পেপার্সের চেয়ারম্যান সেলিম প্রধানকে এদিন আদালতে হাজির করা হয়। এরপর তার উপস্থিতিতে রেজাউল করিম নামে একজন ব্যাংকার এই মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন। এই মামলায় মোট ৩৯ সাক্ষীর মধ্যে মোট ১৫ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে।
এদিকে এদিন আদালতের অনুমতি নিয়ে রাশিয়ান স্ত্রী আনা প্রধানের সঙ্গে কথা বলেছেন সেলিম প্রধান। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত ৬-এর বিচারক আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে তিনি কথা বলেন।
আনা প্রধান বলেন, আমি তিন দিন আগে এসেছি, এখন দেশেই থাকব। আমাদের সন্তান আছে। আমার স্বামীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তা সত্য নয়। আমি আমার স্বামীর মুক্তি চাই। আইনের মধ্যে থেকে ন্যায়বিচার চাই।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর দুদকের উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার বাদী হয়ে সেলিম প্রধানের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এই মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছিল। এই উপ-পরিচালকই মামলাটি তদন্ত করে শেষ পর্যন্ত তার নামে মোট ৫৭ কোটির বেশি টাকার অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পেয়েছেন। এর আগে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেলিম প্রধান র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার হন।
মামলাসূত্রে জানা যায়, দুর্নীতির মাধ্যমে ও ক্যাসিনো থেকে সেলিম প্রধান মোট ৫৭ কোটি ৪১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার। ক্যাসিনো থেকে অর্জিত ২১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা পাচার করেছেন থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে।
সেলিম জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং পেপার্সের চেয়ারম্যান। এই কোম্পানিতে তার ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ৬৯ হাজার শেয়ারের বিপরীতে এখানে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। তবে সেলিম প্রধানের নামে শেয়ার মানি ডিপোজিট পাওয়া গেছে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫০ টাকা। এই টাকা তিনি অর্জন করেছেন অবৈধভাবে।
প্রিন্টিং পেপার্স কোম্পানি ২০১০ সালে মুনাফা করে ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৩ টাকা। ২০১১ সালে মুনাফা করে এক কোটি ৪৬ লাখ ২১ হাজার ৭২ টাকা। এখান থেকে ২০১১-১২ অর্থবছরে আট কোটি টাকা ঋণ নেন বলে সেলিম প্রধান তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। তবে এই কোম্পানি থেকে কীভাবে ঋণ গ্রহণ করেছেন এ সংক্রান্ত কোনো রেকর্ডপত্র নেই তার কাছে।
এমএ/