ডা. সাবরিনার জামিন প্রশ্নে হাইকোর্টের রুল
জেকেজি হেলথ কেয়ারের ডা. সাবরিনা শারমিন হোসেনের জামিন প্রশ্নে রুল জারি করেছে হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) সাবরিনার জামিন সংক্রান্ত আবেদনের শুনানি নিয়ে এই রুল জারি করে বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ।
রুলে করোনা ভাইরাস শনাক্তের ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ার অভিযোগের মামলায় ডা. সাবরিনাকে কেন জামিন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছেন আদালত। দুই সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী জেড আই খান পান্না। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল রেজাউল করিম ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান লিখন।
বিচারিক আদালতে মামলটি সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষে মোট ৪৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। পরবর্তী সাক্ষ্যের জন্য আগামী ৬ জানুয়ারি দিন ধার্য রয়েছে।
গত বছর ২০২০ সালের ২০ আগস্ট ঢাকা মহানগর হাকিম সারাফুজ্জামান আনছারী আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে মামলার বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। একই বছরের ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী।
মামলার অভিযোগপত্রে সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফুলকে জালিয়াতি ও প্রতারণার মূল হোতা এবং বাকি ছয় আসামিকে অপরাধে সহায়তাকারী হিসেবে উল্লেখ করা হয়।
করোনা সংক্রমণের ভুয়া প্রতিবেদন দেওয়ায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারের কর্ণধার আরিফুল চৌধুরীর স্ত্রী ডা. সাবরিনা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের একজন চিকিৎসক ছিলেন। মামলার পর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। সাবরিনা জেকেজির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে আছেন বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ।
এরপর একই বছরের (২০২০ সাল) ১২ জুলাই সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও বিভাগীয় উপ-পুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে নেওয়া হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন জেকেজির প্রতারণা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ডিসিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সদুত্তর দিতে না পারায় তাকে তেজগাঁও থানায় আগেই আরিফুলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সাবরিনা ও তার স্বামী আরিফুল ছাড়াও এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন- আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৩ জুন করোনার ভুয়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে আরিফুলসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর থানা হাজতে থাকা অবস্থায় আরিফুলের ক্যাডার বাহিনী থানায় ভাঙচুর ও হামলা চালায়। তারা মারধর করে পুলিশকে।
এ ছাড়াও রাজধানীর মহাখালীর তিতুমীর কলেজে করোনার নমুনা সংগ্রহের বুথ বসিয়ে সেখানে প্রশিক্ষণের নামে নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগও পাওয়া যায়। কলেজ কক্ষে নারী-পুরুষের আপত্তিকর অবস্থানসহ নানা অনৈতিক কাজে বাধা দিলে তিতুমীর কলেজের শিক্ষক, কর্মচারী ও ছাত্রদের ওপরও হামলা করে আরিফুলের লোকজন।
এমএ/এসআইএইচ/