হাইকোর্টের রায়ে দেড় বছর পর শিশু ফিরলো মায়ের কোলে
বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের কারণে মাত্র সাড়ে তিন বছর বয়সেই মায়ের কোলবিচ্ছিন্ন হয়েছিল শিশুটি। দেড় বছর পর পাঁচ বছর বয়সে আবার মায়ের কোল ফিরে পেলো সে। তবে নিরবচ্ছিন্নভাবে নয়, ভাগাভাগি করে।
শিশুকন্যাটিকে মায়ের কাছে সপ্তাহে তিনদিন (বৃহস্পতি-শুক্র ও শনিবার) রাখার আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া বাকি দিনগুলো সে বাবার পরিবারের কাছে থাকবে। একইসঙ্গে এ বিষয়ে পারিবারিক আদালতে থাকা মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি মাহমুদুল হকের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার (১৪ ডিসেম্বর) এ আদেশ দেন।
মায়ের আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান, সাবরিনা জেরিন ও এম আব্দুল কাইয়ুম। আর বাবার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মেহেদী হাছান চৌধুরী। শিশুটির মা রাজধানীর গুলশানের বাসিন্দা। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষিকা। বাবা রাজধানীর আদাবরের বাসিন্দা।
এ বিষয়ে এম আব্দুল কাইয়ুম জানান, শিশুটিকে সপ্তাহের বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার মায়ের কাছে রাখার আদেশ দিয়েছেন আদালত। অন্যদিনগুলোতে সে বাবার পরিবারে থাকবে। তবে আদালতের অনুমতি ছাড়া কেউ তাকে বিদেশ নিতে পারবে না। পারিবারিক আদালতে থাকা মামলা ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
মায়ের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ অক্টোবর শিশুটিকে দেশের বাইরে নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয় হাইকোর্ট।
২০১৫ সালের ২০ অক্টোবর শিশুটির বাবা-মায়ের বিয়ে হয়েছিল। ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর একটি কন্যাসন্তানের জন্ম দেন ওই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষিকা। পরে তাদের মধ্যে বিভিন্ন বিষয়ে বনিবনা না হলে শিশুটির মা আদালতের দ্বারস্থ হন। পরে চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি স্ত্রীকে ডিভোর্স নোটিশ পাঠান শিশুটির বাবা। এই সময়ে শিশুকন্যা বাবার কাছেই ছিল।
এ অবস্থায় বাবার কাছে থাকা মেয়েকে দেখতে চেয়ে নিম্ন আদালতে মামলা করেন মা।
আইনজীবী খুরশীদ আলম খান গত ২৫ অক্টোবর জানিয়েছিলেন, নিম্ন আদালত শিশুটিকে ভার্চুয়ালি দেখার সুযোগ দিয়ে আবেদনটি খারিজ করে দেয়। এর বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন শিশুটির মা। আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করে। সেই সঙ্গে রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত শিশুটিকে বিদেশে নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়।
এমএ/এএস
