গাজায় ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার ঘোষণা ইলন মাস্কের
ছবি সংগৃহিত
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক। তিনি বলেছেন, গাজায় আন্তর্জাতিক দাতা সংস্থাগুলোর জন্য ইন্টারনেট সংযোগ দেবে তার প্রতিষ্ঠান স্টারলিঙ্ক।
ইসরাইলের হামলায় গাজা উপত্যকায় মোবাইল ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে বিশ্ব থেকে এক প্রকার বিচ্ছিন্ন ও অন্ধকারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে হয়েছে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডটি। এই অবস্থায় স্থানীয় অধিবাসীরা কেউ কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। এর মধ্যেই বিমান হামলার পাশাপাশি স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইলি বাহিনী। এমন পরিস্থিতিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই গাজায় ইন্টারনেট সরবরাহের জন্য ইলন মাস্কের প্রতি আহ্বান জানান। এরপরই শনিবার (২৮ অক্টোবর) এক ঘোষণায় ইন্টারনেট সংযোগ দেয়ার বলেন মার্কিন বিলিয়নিয়ার ব্যবসায়ী ও প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্ক।
তবে এ ব্যাপারে গাজা থেকে এখনও কেউ তার সঙ্গে বা তার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে জানিয়েছেন তিনি। এক্স-এ (সাবেক টুইটার) দেয়া এক পোস্টে মাস্ক বলেন, ‘গাজায় ইন্টারনেট সংযোগের কর্তৃপক্ষ কারা তা আমাদের জানা নেই। তবে আমরা জানি, এখন পর্যন্ত কেউ ইন্টারনেট সংযোগ চেয়ে কেউ আবেদন করেনি।’ এদিকে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় যোগাযোগ ও বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে স্থল অভিযান চালাচ্ছে ইসরাইল। বিমান হামলার পাশাপাশি শনিবার (২৮ অক্টোবর) ভোরে স্থল অভিযান শুরু করে ইসরাইলি সেনারা। হামাসের প্রতিরোধের মধ্যদিয়ে শুরু হয় স্থল যুদ্ধ যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।
তুরস্কের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থা আনাদোলু এজেন্সির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গতকাল শনিবার টেসলা, স্পেসএক্স ও এক্সের (সাবেক টুইটার) মতো প্রতিষ্ঠানের মালিক ইলন মাস্ক গাজায় আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলোকে ইন্টারনেট সরবরাহের ঘোষণা দেন। নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে শেয়ার করা এক টুইটে এই ঘোষণা দেন।
টুইটে ইলন মাস্ক লেখেন, ‘গাজায় কর্মরত আন্তর্জাতিক সহায়তা সংগঠনগুলোকে ইন্টারনেট সংযোগ সুবিধা দেবে স্টার লিংক।’ এই টুইটের ঘণ্টাখানেক পর তিনি আরও লেখেন, ‘আমরা জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক স্বীকৃত সহায়তা গোষ্ঠীগুলোকে সহযোগিতা দেব।’
এর আগে বিদ্যুতের সংযোগ কিংবা বিদ্যুৎ উৎপাদনের কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় গাজার অভ্যন্তরে তো বটেই, গাজা থেকে বহির্বিশ্বের সঙ্গে যোগাযোগ করারও কোনো পথ খোলা নেই। সব ধরনের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের জ্যেষ্ঠ প্রযুক্তি মানবাধিকারবিষয়ক গবেষক ডেবোরাহ ব্রাউন বলেছেন, গাজায় একপ্রকার কমিউনিকেশন ব্ল্যাকআউট চলছে। গাজাবাসী নিজের প্রিয়জনদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছে না। এমনকি চিকিৎসাসহ অন্য কোনো নিত্যপ্রয়োজনীয় সেবাও গ্রহণ করতে পারছে না।
ডেবোরাহ ব্রাউন এ সময় ইসরায়েলের দিকে ইঙ্গিত করে বলেন, ‘এই ইনফরমেশন ব্ল্যাকআউটের ফলে ব্যাপক নৃশংসতা আড়াল ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের জন্য (ইসরায়েলের) দায়মুক্তিতে অবদান রাখার ঝুঁকি রয়েছে।’
গাজায় স্থল অভিযান ক্রমেই প্রসারিত হচ্ছে বলে জানিয়েছে ইসরাইলি সেনাবাহিনী। এদিকে হামাসও জানিয়েছে, বেশ কিছু এলাকায় ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে তাদের যোদ্ধাদের সংঘর্ষ হয়েছে। পবিত্র আল আকসা মসজিদের অবমাননা ও ফিলিস্তিনিদের ওপর অব্যাহত নিপীড়নের জবাবে গত ৭ অক্টোবর ভোরে ইসরাইলে আকস্মিক অভিযান চালায় হামাস। এরপর ফিলিস্তিনের এই মুক্তিকামী গোষ্ঠীটির বিরুদ্ধে যু্দ্ধ ঘোষণা করে গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরাইল। বিমান হামলার পাশাপাশি গাজায় স্থল অভিযানের ঘোষণা দেয় এর সেনাবাহিনী।