ফিলিস্তিনিদের পক্ষে লন্ডনের রাস্তায় লাখো মানুষ
ছবি সংগৃহিত
ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলের নির্বিচার হামলার প্রতিবাদে যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে বিক্ষোভ করেছেন লাখো মানুষ। স্থানীয় সময় শনিবার দুপুরে এ বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ।
শনিবার সেন্ট্রাল লন্ডনের পোর্টল্যান্ড স্ট্রিট ব্রিটিশ ব্রডকাস্টি করপোরেশন (বিবিসি) অফিসের সামনে থেকে পোর্টল্যান্ড স্ট্রিট, রিজেন্ট স্ট্রিট, পিকাডোলি স্কয়ার, হে-মার্কেট, ট্রাফলগার স্কয়ার, হোয়াইটহল ও পার্লামেন্ট স্ট্রিট, প্রধানমন্ত্রীর অফিস ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে কমপক্ষে ১ লাখ মানুষ বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
ফিলিস্তিনের পক্ষে লন্ডনের বিক্ষোভ বিগত কয়েক বছরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য। স্থানীয় সময় বেলা দুইটার দিকে লন্ডন মেট্রোপলিটন পুলিশ জানায়, অন্তত এক লাখ মানুষ এ বিক্ষোভে অংশ নেন। তাঁরা ডাউনিং স্ট্রিটের দিকে এগোতে থাকেন। এর দেড় ঘণ্টা পরও বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন মানুষ।
বিক্ষোভকারীরা প্রথমে মার্বেল আর্চের সামনে জড়ো হন। এ সময় তাঁদের হাতে ‘মুক্ত ফিলিস্তিন চাই’ ও ‘গাজায় বোমাবর্ষণ বন্ধ করো’ ইত্যাদি লেখা প্ল্যাকার্ড দেখা যায়। প্যালেস্টাইন সলিডারিটি ক্যাম্পেইন এ বিক্ষোভের সহ-আয়োজক। তাঁরা গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছেন। এ ছাড়া সেখানে পুরোদমে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে বিশ্ব সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
ফিলিস্তিনের পতাকা হাতে বিক্ষোভে অংশ নেন বিভিন্ন বয়সী মানুষ। এ সময় পুরো এলাকা যেন জনসমুদ্র পরিণত হয়। চারদিকে অনবরত একটি স্লোগান ভেসে বেড়াচ্ছিল, ‘ফিলিস্তিন মুক্ত হবে।’
বিক্ষোভকারীদের হাতে থাকা অনেক ব্যানারে ইসরায়েল বিরোধী স্লোগান ছিল। এক বিক্ষোভকারীর হাতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী রিশি সুনাক, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর ছবি সম্বলিত ব্যানার ছিল, যাতে ‘যুদ্ধাপরাধের জন্য তাদের গ্রেপ্তার চাই।’
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন গাজাভিত্তিক হামাস ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলে ঢুকে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এর পর থেকে গাজায় ইসরায়েলের বিমানবাহিনীর নির্বিচার বোমা হামলায় ৪ হাজার ৩৮৫ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে হামাসের হামলায় ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর নির্বিচার এই হত্যাকাণ্ডকে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ ও গণহত্যা’ আখ্যা দিয়ে অনেকে এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছেন। তবে এরই মধ্যে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজায় হামলা জোরদার করতে যাচ্ছে।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় অস্ট্রেলিয়া, নেদারল্যান্ডস, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও বেশ কয়েকটি আরব দেশে ফিলিস্তিনের ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছেন সাধারণ মানুষ।
এর আগে এ সমাবেশ নিয়ে সতর্কতা জারি করেছিল যুক্তরাজ্য পুলিশ। তারা বলেছিল, এই মিছিলে হামাসের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করে এমন কিছু কেউ প্রদর্শন করলে তাকে গ্রেপ্তার করা হবে। তবে গতকালের সমাবেশ ও মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপরও সেখান থেকে ১০ জনকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।