করোনা নিয়ে চীনের বিরুদ্ধে তথ্য দিলেন এফবিআই পরিচালক!
কোভিড-১৯ ‘খুব সম্ভবত’ চীনের সরকার নিয়ন্ত্রিত কোনো গবেষণাগার থেকেই বেখেয়ালে ছড়িয়েছে বলে দাবি করেছে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (এফবিআই)।
মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ফক্স নিউজে প্রচারিত এক সাক্ষাৎকারে এমনটা জানিয়ে এফবিআই এর পরিচালক ক্রিস্টোফার রে বলেছেন, বেশ কিছুদিন ধরে এফবিআইয়ের পর্যালাচনা বলছে, মহামারীটির উৎপত্তি খুব সম্ভবত কোনো গবেষণাগারের ঘটনা থেকে।
রে আরও বলেন, বৈশ্বিক মহামারীটির উৎস শনাক্তের প্রচেষ্টাগুলোকে ভণ্ডুল করতে ও আটকাতে চীন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। তবে এটা সবার জন্যই দুর্ভাগ্যের।
প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের উদ্ভব নিয়ে এফবিআইয়ের গোপন মূল্যায়নের ব্যাপারে এটিই সংস্থাটির শীর্ষ কোনো কর্মকর্তার প্রথম প্রকাশ্য মন্তব্য। এ মন্তব্যের একদিন আগেই কোভিডের উৎস নিয়ে ‘সত্য বলতে’ বেইজিংকে আহ্বান জানিয়েছিলেন চীনে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত। তবে উহানের কোনো ল্যাব থেকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে চীন। বরং বেইজিং এর সম্মান নষ্ট করতেই এই ধরনের অভিযোগ তোলা হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগও করেছে তারা।
অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রের অনেক সরকারি সংস্থার সঙ্গে এফবিআইয়ের মন্তব্যের মিল পাওয়া যায়নি। অনেক গবেষণাতেই প্রাণঘাতী এই ভাইরাস সম্ভবত উহানের সামুদ্রিক খাবার ও বন্যপ্রাণী বেচাকেনার মার্কেটেই প্রাণীদেহ থেকে মানবদেহে ছড়াতে পারে বলে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল। গেল রবিবার মার্কিন গণমাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের কোভিডের উৎস সংক্রান্ত মূল্যায়নও প্রকাশিত হয়েছিল, এবং সেখানে গবেষণাগার থেকে করোনাভাইরাস লিক হওয়ার সম্ভবনা ‘খুবই কম’ বলে তারা ধারণাও দিয়েছেন।
সোমবার হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিলের মুখপাত্র জন কারবি বলেছেন, কোভিডের যাত্রা কীভাবে শুরু হয়েছিল, তা বের করতে ‘সরকারের সর্বাত্মক চেষ্টার’ পক্ষেই প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অবস্থান। করোনাভাইরাস কীভাবে ছড়িয়েছে, সে ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র এখনও স্পষ্ট কোনো ধারণা পায়নি জানিয়ে তিনি বলেছেন, আমরা এখনও সেখানে পৌঁছাইনি, যদি মার্কিন জনগণ ও কংগ্রেসকে বলার মতো কিছু পাই, আমরা অবশ্যই তা জানাবো।
এর আগে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক তদন্ত প্রতিবেদনে জানানো হয়েছিল গবেষণাগার থেকে ভাইরাস লিক হওয়ার ‘সম্ভাবনা নেই বললেই চলে’। ওই প্রতিবেদন তুমুল সমালোচনার মুখে পড়ার পর আন্তর্জাতিক এই সংস্থাটির মহাপরিচালক এ নিয়ে নতুন তদন্তের ঘোষণা দিয়ে বলেছিলেন, কোনো অনুমানই বাদ দেওয়া হচ্ছে না, এর জন্য আরও গবেষণা দরকার।
২০১৯ সালের শেষ থেকে শুরু হওয়া করোনা মহামারিতে এখন পর্যন্ত সারাবিশ্বে প্রায় ৭০ লাখ মানুষ মারা গেছেন।
/এএস