যুক্তরাষ্ট্রে তুষারঝড়ে ১২ জনের মৃত্যু, ১৫ লাখ বিদ্যুৎহীন
যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় তুষারঝড়ে অন্তত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তুষারঝড় ও বরফে ঢেকে থাকার কারণে ভোগান্তিতে পড়েছেন অন্তত ২০ কোটি মানুষ। এ ছাড়া বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহে বিঘ্ন ঘটায় ১৫ লাখ মানুষ ভোগান্তিতে রয়েছেন। একই সঙ্গে কয়েক হাজার ফ্লাইটও বাতিল করা হয়েছে।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তর ন্যাশনাল ওয়েদার সার্ভিসের (এনডব্লিউএস) বরাত দিয়ে বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্য টেক্সাস থেকে সর্ব উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য মাইন পর্যন্ত ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকাজুড়ে বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবার তুষারঝড় বয়ে গেছে। এ ঝড়কে ‘যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের অন্যতম বৃহৎ প্রাকৃতিক দুর্যোগ’ বলে শুক্রবার এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে এনডব্লিউএস।
শুক্রবার দিনের শেষ দিকে ঝড়ের তেজ খানিকটা কমে এলেও এখনো দেশটির বেশিরভাগ অঙ্গরাজ্যে আবহাওয়া পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি। লাখ লাখ বাড়িঘর ও প্রতিষ্ঠান এখনো বিদ্যুৎবিহীন রয়েছে। বিমানবন্দরগুলোতে ইতোমধ্যে বাতিল হয়েছে ৮ হাজারেরও বেশি ফ্লাইট।
দেশটির বেশ কয়েকটি অঙ্গরাজ্যে ঝড়ো হাওয়া ও তুষারপাত এখনো অব্যাহত। পশ্চিমাঞ্চলীয় রাজ্যে মনটানায় তাপমাত্রা ওঠা-নামা করছে হিমাংকের নিচে ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে। রাজ্যের অধিকাংশ এলাকা ঢেকে গেছে বরফের পুরু স্তরে। এ ছাড়া মিশিগান, বাফেলো, নিউইয়র্ক, সাউথ ডাকোটা, কলরাডো, কানসাস, ওয়াইওমিং, টেনেসি, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, কেন্টাকি, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওকলাহোমা রাজ্যে বেশ কিছু অঙ্গরাজ্যে এখনো অব্যাহত তুষারপাত। একই সঙ্গে তাপমাত্রা ওঠানামা করছে হিমাংকের নিচে ৩২ ডিগ্রি থেকে ৪২ ডিগ্রির মধ্যে।
কানসাস, টেনেসি ও ওয়াইওমিং অঙ্গরাজ্যের আবহাওয়া বিভাগের তথ্য মতে, গত ২৬ বছরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এটি।
ঝড়ো হওয়া, তাপমাত্রা হ্রাস ও তুষারপাতের কারণে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়েছে নিউইয়র্ক, ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া, কেন্টাকি, জর্জিয়া, নর্থ ক্যারোলাইনায়। সেই সঙ্গে জ্বালানি সংকটের কারণে জ্বালানিগত জরুরি অবস্থাও ঘোষণা করেছে সাউথ ডাকোটা ও উইসকনসিন।
এ ছাড়া ঝড়ের প্রভাবে দেশটির নিউ ইংল্যান্ড, নিউ ইয়র্ক ও নিউজার্সির উপকূলীয় অনেক এলাকায় বন্যাও শুরু হয়েছে।
সাউথ ডাকোটার রেড ইন্ডিয়ানদের অন্যতম নেতা ফ্র্যাঙ্ক স্টার বিবিসিকে বলেন, ‘বৈরী আবহাওয়া ও ভারী তুষারপাতের কারণে বহুসংখ্যক লোকজন বাড়িতে গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন এবং তাদের এ পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে জ্বালানি সংকট।
এসএন