উত্তরপূর্ব ভারতের ৫৫ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পক্ষে

উত্তরপূর্ব ভারতের ৫৫ শতাংশ মানুষ শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর পক্ষে। ছবি: সংগৃহীত
ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেদিন তিনি ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে পৌঁছান এবং এরপর থেকেই সেখানে অবস্থান করছেন।
দেশ ছাড়ার পর তার বিরুদ্ধে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধসহ বিভিন্ন অভিযোগে শতাধিক মামলা হয়েছে। এসব মামলার বিচারের জন্য বাংলাদেশ সরকার শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর আহ্বান জানালেও ভারত সরকার এখন পর্যন্ত কোনো ইতিবাচক সাড়া দেয়নি। ঢাকার পক্ষ থেকে একাধিকবার নোট ভার্বাল ও আনুষ্ঠানিক কাগজপত্র পাঠানো হলেও দিল্লির অবস্থান অপরিবর্তিত রয়েছে।
এদিকে, ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না ঠিকই, তবে দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলের জনগণের বড় একটি অংশ চান, তাকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়া হোক। ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডে পরিচালিত ‘মুড অব দ্য নেশন’ জরিপের তথ্য অনুযায়ী, উত্তরপূর্ব ভারতের ৫৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন, শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো উচিত।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের কাছে প্রশ্ন রাখা হয়েছিল— “বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারত সরকারের আশ্রয় দেওয়ার বিষয়ে আপনার মতামত কী?”
জবাবে, উত্তরপূর্ব ভারতের ২৩ শতাংশ মানুষ বলেছেন, শেখ হাসিনা ভারতের মিত্র ছিলেন, তাই তাকে আশ্রয় দেওয়া সঠিক সিদ্ধান্ত ছিল। পুরো ভারতের ক্ষেত্রে এই মত পোষণ করেছেন ৩৭.৬ শতাংশ মানুষ। তবে উত্তরপূর্বাঞ্চলের ৫৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন, বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠানো উচিত। অন্যদিকে, পুরো ভারতের ২১.১ শতাংশ নাগরিকও এই মত পোষণ করেছেন।
এছাড়া, পুরো ভারতের ২৯ শতাংশ মানুষ মনে করেন, শেখ হাসিনার ভারতে অবস্থান করা উচিত নয়। তবে তারা চান না যে তাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হোক, বরং অন্য কোনো দেশে চলে যেতে বলা হোক। উত্তরপূর্ব ভারতের ১৬ শতাংশ মানুষও এই মতামতের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
ভারতের অভ্যন্তরে শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে এমন বিভক্ত মতামত প্রকাশ পেলেও, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তাকে ফেরত পাঠানোর জন্য কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। তবে ভারত সরকার শেষ পর্যন্ত কী সিদ্ধান্ত নেয়, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
