বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে ভারতের চার-পাঁচটা ড্রোনই যথেষ্ট: শুভেন্দু
ছবি: সংগৃহীত
ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতা ও পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভার বিরোধীদলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী সম্প্রতি এক বিতর্কিত মন্তব্য করে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছেন। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশের মতো একটি দেশকে ধ্বংস করতে ভারতের মাত্র চার থেকে পাঁচটি ড্রোনই যথেষ্ট। কলকাতার ফোর্ট উইলিয়াম থেকে এমন ড্রোন পাঠালেই বাংলাদেশের সামরিক ক্ষমতা ধ্বংস হয়ে যাবে বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।
রোববার (১২ জানুয়ারি) পশ্চিমবঙ্গের সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে শুভেন্দু এই বক্তব্য দেন। তিনি বলেন, বাংলাদেশ যুদ্ধের খেলা খেলতে চাইছে, কিন্তু তাদের ভারতের সামরিক ক্ষমতা সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই। শুভেন্দু আরও বলেন, "ভারত অত্যন্ত দায়িত্বশীল একটি দেশ, দুর্বল দেশকে আক্রমণ করে না। তবে পিপীলিকার ডানা গজায় মরিবার তরে।"
তিনি দাবি করেন, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) কিংবা সেনাবাহিনী পাঠানোর দরকার হবে না। ড্রোন পাঠিয়েই বাংলাদেশের পুরো সামরিক শক্তি ধ্বংস করা সম্ভব।
শুভেন্দু অধিকারী মন্তব্য করেন, বাংলাদেশ এখনো ৬০-৭০-এর দশকের সামরিক ধারণায় আটকে আছে। "ওরা আমাদের সীমান্তে ট্যাংক এনে খড়ের গাদায় ঢেকে রাখে। কিন্তু যুদ্ধ করতে এখন ট্যাংক বা বন্দুক লাগে না। ভারত ড্রোনের ব্যবহারে অত্যন্ত উন্নত।"
তিনি আরও বলেন, "ভারতের ফোর্ট উইলিয়াম থেকে বোতাম টিপলেই ড্রোন বের হবে। তাতে বাংলাদেশের কোনো সুযোগ থাকবে না।"
শুভেন্দু তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনিদের প্রসঙ্গও টেনে আনেন। তিনি বলেন, মুজিব হত্যাকাণ্ডে জড়িত কয়েকজন দণ্ডপ্রাপ্ত খুনি পশ্চিমবঙ্গে লুকিয়ে ছিল। তাদের মধ্যে একজন হাওড়ায় হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার সেজে ছিলেন এবং সেখানেই মারা যান। আরেকজন ২০২২ সালে বাংলাদেশ সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং পরে তার ফাঁসি কার্যকর হয়।
শুভেন্দু অধিকারীর এই মন্তব্যে দুই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া না পাওয়া গেলেও এমন মন্তব্য দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কে প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ভারতের বিভিন্ন মহল থেকেও এই ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্যের সমালোচনা করা হচ্ছে।
শুভেন্দু অধিকারীর এমন মন্তব্য দুই দেশের জনগণের মধ্যে অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দীর্ঘদিনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখতে উভয় পক্ষকেই দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। রাজনীতিবিদদের মন্তব্যে সংযম ও কূটনৈতিক শিষ্টাচার মেনে চলা এই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করতে সহায়ক হবে।