ভারতে স্কুলের মঙ্গল কামনায় ১১ বছরের ছাত্রকে বলি
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের উত্তর প্রদেশের হাতরসে এক মর্মান্তিক ও ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে। ১১ বছরের এক ছাত্রকে নৃশংসভাবে বলি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, যা দেশজুড়ে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ডিএল পাবলিক স্কুলে, যেখানে স্কুলের মালিক ও শিক্ষকরা এক ঘৃণ্য তান্ত্রিক বিশ্বাসে মত্ত হয়ে ছাত্রটিকে বলি দেয়। তারা বিশ্বাস করেছিল যে, এই বলি তাঁদের স্কুলের উন্নতি ও পরিবারে সমৃদ্ধি বয়ে আনবে।
এই জঘন্য ঘটনা ঘটে ২৩ সেপ্টেম্বর, যখন কৃতার্থ নামে ১১ বছরের এই ছাত্রকে স্কুলের হোস্টেল থেকে অপহরণ করা হয়। পরে তাকে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে হত্যা করা হয়। স্কুলের মালিক যশোধন সিং এবং পরিচালক দীনেশ বাঘেলসহ তিন শিক্ষককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে। তারা দাবি করেছিল, কালো জাদুর মাধ্যমে বিদ্যালয়ের মঙ্গল কামনা করতেই এই বলি দেওয়া হয়।
পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, অভিযুক্তরা বহুদিন ধরে এই পরিকল্পনা করছিল। তারা স্কুলের শৃঙ্খলা ও সাফল্য রক্ষার জন্য এই বলির আচার সম্পন্ন করতে চেয়েছিল। ছাত্রটির নিখোঁজ হওয়ার পর তার পরিবার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পেরে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে দোষীদের গ্রেপ্তার করে।
এই নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর স্থানীয় এলাকাবাসীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। সাধারণ মানুষ বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে এবং দাবি করেছে যে, ধর্মীয় কুসংস্কার ও অন্ধবিশ্বাসের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। অনেকেই বলছেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে এমন বিশ্বাস ও নৃশংস কর্মকাণ্ড রোধে জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।
পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে এবং কৃতার্থের পরিবারের পক্ষ থেকে দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়েছে। ঘটনার খবর দ্রুত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে এবং দেশজুড়ে তীব্র নিন্দা জানানো হচ্ছে।
এই ঘটনায় ভারত জুড়ে ধর্মীয় কুসংস্কার, অন্ধবিশ্বাস ও কালো জাদুর প্রভাব নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। সবাই বলছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে কুসংস্কার মুক্ত রাখতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সূত্র: এনডিটিভি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, হিন্দুস্তান টাইমস