ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে গণঅভ্যুত্থানের দ্বারপ্রান্তে মণিপুর
ছবি: সংগৃহীত
বিপ্লব ও স্বাধীনতার নেশায় মত্ত যে জাতি, সে জাতিকে থামানোর সাধ্য কার। জুলাইয়ের গণঅভ্যুথানের যে বারুদ জ্বলেছিলো বাংলাদেশের বুকে, তার আঁচেই যেনো উত্তপ্ত হচ্ছে ভারতের মণিপুর রাজ্য।
মণিপুর রাজ্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তনের দাবিতে রাজধানী ইম্ফলের রাস্তায় নেমেছে হাজার হাজার শিক্ষার্থী। মুখে তাদের প্রতিবাদের স্লোগান, চোখে তাদের আন্দোলনের আগুন। যে আগুন সামাল দিতেই নাজেহাল নিরাপত্তা বাহিনীর সসদ্যরা। লাগাতার ছোড়া হচ্ছে টিয়ার শেল, চলছে লাটিচার্জ। তবুও থামানো যাচ্ছেনা মণিপুরের তরুণ তুর্কিদের।
শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করেছে। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা রাজভবন ও থৈবালের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে হামলা চালিয়েছে। সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এক ভিডিওতে পুলিশের গাড়ি লক্ষ্য করে ছাত্রদের ধাওয়া দিতে দেখে যায়। আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায়, ভারতের পতাকা নামিয়ে সেখানে উড়ানো হচ্ছে সাতরঙ্গা পতাকা। যা ইঙ্গিত দিচ্ছে বড় কোন পরিবর্তনের। মেইতি জাতিগোষ্ঠীর সাতটি বংশের প্রতিনিধিত্বের কথা তুলে ধরতে মণিপুরে অনেকেই এই পতাকা ব্যবহার করেন।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের দাবি, রাজ্যের বর্তমান নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে অপসারণ ও মণিপুরে শান্তি ফেরাতে রাজ্য সরকারের হাতে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিতে হবে। এই দাবিতে ছাত্রদের পাশপাশি রাস্তায় নেমে আন্দোলনে সামিল হয়েছেন সাধারণ জনগণও। শুধু তাই নয় মশাল হাতে রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার নারী।
মণিপুরে গত কয়েক দিনে দফায় দফায় গুলিবিনিময়, বোমা বিস্ফোরণ, ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা ও বেসামরিক নাগরিকের মৃত্যু নতুন সকটের জন্ম দিয়েছে। এছাড়া মণিপুর রাইফেলসের দুটি ব্যাটালিয়নের অস্ত্রাগার থেকে অস্ত্রশস্ত্র লুটের চেষ্টাসহ একাধিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুরো রাজ্যে এক উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
গত বছর মে থেকে কুকি ও মেইতি সম্প্রদায়ের মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকে মণিপুরে উত্তেজনা বিরাজ করছে। গত ৮ সেপ্টেম্বর সামাজিক মাধ্যমে মণিপুরের স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার একটি ছবি ভাইরাল হয়। যদিও ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়া টুডের তথ্য বলছে, ২০২৪ সালের ৮ সেপ্টেম্বর নয়; বরং ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর লন্ডন থেকে মণিপুরকে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেছিলেন বিচ্ছিন্নতাবাদী দুই নেতা।