বাইডেনের অবৈধ অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে আট অঙ্গরাজ্যে মামলা
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের অবৈধ অভিবাসন নীতির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আটটি অঙ্গরাজ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে। টেক্সাসের অ্যাটর্নি জেনারেল কেন পাক্সটন জো বাইডেন প্রশাসনের বিরদ্ধে তার ২০তম মামলা শুরু করেছেন। তার এই মামলার প্রতি আরও সাতটি অঙ্গরাজ্য সমর্থন জানিয়েছে।
মামলাটি সেন্ট্রাল আমেরিকান নাবালক উদ্বাস্তু এবং প্যারোল প্রোগ্রামের পুনঃস্থাপনের বিরুদ্ধে। যা সেন্ট্রাল আমেরিকান মাইনরস প্রোগ্রাম (সিএএম) নামে পরিচিত। সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই নীতিটি বাতিল করেছিলেন। এটি পুনরায় চালু হওয়ায় হন্ডুরাস, এল সালভাদর ও গুয়াতেমালা থেকে কিছু অপ্রাপ্তবয়স্ক অভিবাসীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের অনুমতি দেবে এবং তাদের স্থায়ী নাগরিকত্বের পথে রাখা হবে।
সিএএম-এর যোগ্যতা অর্জনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আইনত অবস্থানকারী পিতামাতা বা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের অবশ্যই তাদের পক্ষে প্রমাণ দাখিল করতে হবে। গত ২৮ জানুয়ারি শুক্রবার এক বিবৃতিতে প্যাক্সটন দাবি করেন, সিএএম পুনঃস্থাপনের বিষয়ে ফেডারেল আইনে কোনো ভিত্তি নেই।
প্যাক্সটন লিখেছেন, ‘বাইডেন প্রশাসন তার অবৈধ, অসাংবিধানিক অভিবাসন নীতির মাধ্যমে আমাদের দেশের জন্য বিপর্যয় ছাড়া আর কিছুই বপন করেনি। বাইডেনের সর্বশেষ রাউন্ডের সুস্পষ্ট আইন ভঙ্গের মধ্যে রয়েছে তার সেন্ট্রাল আমেরিকান মাইনরস প্রোগ্রাম, যা অনেক রাজ্যকে আরও বেশি অভিবাসী নিতে বাধ্য করার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্যভাবে অবদান রেখেছে। আমার সহযোগী অ্যাটর্নি জেনারেল এবং আমি এটি বন্ধ করার জন্য মামলা করছি।’
টেক্সাস ছাড়াও বাইডেন প্রশাসনের বিরুদ্ধে মামলা করবে আরকানসাস, আলাস্কা, ফ্লোরিডা, ইন্ডিয়ানা, মিসৌরি, মন্টানা এবং ওকলাহোমা। শুক্রবার (৫ ফেব্রুয়ারি) প্রতিটি রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেলরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মেক্সিকোর মধ্যে দক্ষিণ সীমান্ত পরিদর্শন করার পরে মামলা করার কথা ঘোষণা করেন। সেখানে থাকাকালে অনেকে সীমান্ত শক্তিশালী করার জন্য বিবৃতিও দিয়েছেন।
ফ্লোরিডার অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাশলে মুডি বলেছেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে বিশৃঙ্খলা দেখার পরে আমার কাছে এখন আরও স্পষ্ট যে বাইডেন এবং মায়োরকাস আমাদের দেশে এবং এর আশপাশে অবৈধ অভিবাসীদের পরিবহনের জন্য তাদের নিজস্ব অবৈধ সংস্থা তৈরি করছেন।
পৃথক এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘আমি শুধু এই অবৈধ কাজগুলো বন্ধ করার জন্য আক্রমণাত্মকভাবে কাজ করব না, আমি ফ্লোরিডিয়ানদের তাদের ফেডারেল সরকার আসলে কী করছে এবং সেই সিদ্ধান্তগুলোর সঙ্গে সম্পর্কিত বিপদগুলো সম্পর্কে অবহিত করব।’
আরকানসাসের অ্যাটর্নি জেনারেল লেসলি রুটলেজ সীমান্ত পরিদর্শনের পর মামলার বিষয়ে কিছু বলেননি। তিনি বলেন, ‘বাইডেন প্রশাসন সীমানা সুরক্ষিত করতে ব্যর্থতার মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে আমেরিকান জনগণকে ব্যর্থ করেছে। বাইডেন প্রশাসনের প্রথম বছরে বেআইনি সীমান্ত ক্রসিং ১৪০ শতাংশ এরও বেশি বেড়েছে; যার ফলে ফেন্টানাইলের মতো অবৈধ ওষুধের আগমন ঘটেছে। আরকানসাসের অফিসাররা মেথামফেটামিন এবং কোকেনের মতো মাদকও বাজেয়াপ্ত করেছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে, আমি আমাদের সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সারাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে শক্তভাবে দাঁড়াব।’
ইন্ডিয়ানা অ্যাটর্নি জেনারেল টড রোকিতা সিএএম প্রোগ্রামের নিন্দা করে বলেছেন, ‘যারা এখানে এসে কৃতজ্ঞ এবং এই দেশটি যে মূল্যবোধের উপর গড়ে উঠেছে তার ভিত্তিতে তাদের জীবন পুনরায় শুরু করতে চাই আমরা সেই অভিবাসীদের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্বাগত জানাই।’
ওকলাহোমা অ্যাটর্নি জেনারেল জন ও’কনর যোগ করেন, ‘অবৈধ অভিবাসনের বিষয়ে বাইডেন প্রশাসনের নেতৃত্বের অভাব সরাসরি আমাদের জাতিকে প্রভাবিত করছে। সিএএম প্রোগ্রামটি ওকলাহোমা ও টেক্সাসের প্রভাব এবং দক্ষিণ সীমান্তে ক্রমাগত সংকট বিবেচনা না করেই তৈরি করা হয়েছিল। প্রেসিডেন্ট বাইডেন যে সমস্যাটি তৈরি করেছেন তা সমাধান করার সময় এসেছে।’
টিটি/