সংসদে দাঁড়িয়ে ‘জয় ফিলিস্তিন’ বলে তোপের মুখে আসাদউদ্দিন ওয়াইসি
ছবি: সংগৃহীত
ভারতের সংসদে দাঁড়িয়ে ‘জয় ফিলিস্তিন’ বলে আওয়াজ তুললেন আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলেমিনের প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি শপথ গ্রহণ শেষে ফিলিস্তিনের নামে জয়ধ্বনি দিয়েছেন। আর এতেই তোপের মুখে পড়তে হয়েছে তাকে।
হায়দরাবাদ আসন থেকে পঞ্চমবারের জন্য নির্বাচিত ওয়াইসি উর্দুতে শপথ নেওয়ার পর ‘জয় ফিলিস্তিন’ স্লোগান তোলেন। এরপরই বিজেপির এক নেতা দাবি করেন যে, ‘বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন’-এর জন্য ওয়াইসিকে লোকসভার সদস্য হিসেবে অযোগ্য ঘোষণা করা যেতে পারে। যদিও শপথ অনুষ্ঠান শেষে ওয়াইসি বলেন, জয় ভীম, জয় মিম, জয় তেলাঙ্গানা, জয় ফিলিস্তিন বলার মধ্যে কোনো ভুল নেই।
ওয়াইসি বলেন, অন্য সদস্যরাও নানা কথা বলছেন। এটা কীভাবে ভুল? পারলে সংবিধানের বিধান বলুন। আর এরপরই সংবিধানের বিশ্লেষণ নিয়ে হাজির হন বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদের একটি স্নিপেট পোস্ট করে তিনি বলেন, বর্তমান নিয়ম অনুসারে, বিদেশি রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শনের জন্য আসাদউদ্দিন ওয়াইসিকে তার লোকসভার সদস্যপদ থেকে অযোগ্য ঘোষণা করা যেতে পারে।
টানা পঞ্চম মেয়াদে লোকসভায় নির্বাচিত হয়ে ইতিহাস গড়েছেন অল ইন্ডিয়া মজলিম-ই-ইত্তেহাদ-উল মুসলিমিন’ বা ‘মিম’ দলের প্রধান এবং হায়দ্রাবাদের প্রভাবশালী রাজনীতিক আসাদউদ্দিন ওয়াইসি। অবশ্য ১৯৮৪ সালের পর থেকে দলটি এ আসনে কোনো নির্বাচনে হারেনি। ২০০৪ সাল থেকে গত চারটি লোকসভা নির্বাচনে ওয়াইসি এই আসনে জিতেছেন।
এবারের নির্বাচনে মুসলিম অধ্যুষিত এই কেন্দ্রে ওয়াইসির আধিপত্যকে চ্যালেঞ্জ জানাতে বিজেপির প্রথম নারী প্রার্থী ছিলেন মাধবী লতা। ওয়াইসির বিরুদ্ধে শাস্ত্রীয় এই নৃত্যশিল্পীকে মাঠে নামিয়েছিল গেরুয়া শিবির। তবে অনেক চেষ্টার পরও ওয়াইসিকে থামাতে পারেননি তিনি।
তিন তালাক রদ করার বিরোধিতা থেকে শুরু করে বাবরি মসজিদ ভাঙার ইস্যু বা নাগরিকত্ব আইন। সব ইস্যুতেই মি. ওয়াইসি ছিলেন সরব। অনেকের মতেই ভারতীয় মুসলিমদের ভবিষ্যতের ''নতুন নেতা''র ভূমিকায় আসতে যাচ্ছেন তিনি।
১৯৬৯ সালের ১৩ মে হায়দরাবাদে জন্ম আসাদউদ্দিন ওয়াইসির। তার বাবা সালাহউদ্দিন ওয়াইসিও ছিলেন একজন সাংসদ। আসাদুদ্দিন পেশায় একজন ব্যারিস্টার। লন্ডনে আইন নিয়ে পড়াশোনা করেছেন তিনি। সংসদে সবেচেয়ে বেশি উপস্থিতির বিশেষ নজিরও রয়েছে হায়দরাবাদের এই সাংসদের। ২০২২ সালে সেরা সাংসদের পুরস্কার দিয়ে সম্মানিত করা হয়েছে আসাদউদ্দিনকে।
তবে ওয়াইসিকে ঘিরে আছে একাধিক বিতর্ক। বিরোধীরা ওয়াইসিকে জিন্নার সাথেও তুলনা করেছেন । যদিও জিন্নার দ্বি-জাতি তত্ত্বের বারবার বিরোধিতা করেতে দেখা গিয়েছে আসাদউদ্দিনকে। তিনি হিন্দুত্ববাদী আদর্শের বিরুদ্ধে, হিন্দুদের বিরুদ্ধে নন সেটি বারবার স্পষ্ট করেছেন।