সমুদ্র পথে প্রথম গাজায় গেল ত্রাণবাহী জাহাজ
ছবি সংগৃহিত
মানবিক সহায়তা নিয়ে সমুদ্র পথে প্রথমবার গাজায় পৌঁছেছে একটি জাহাজ। স্প্যানিস জাহাজ ওপেন আর্মস মঙ্গলবার ২০০ টন খাদ্যপণ্য নিয়ে সাইপ্রাস ছেড়ে গাজায় পৌঁছায়। খবর বিবিসি
ইসরায়েলি বাহিনীর প্রায় ৬ মাস ধরে চলমান অভিযানে বিধ্বস্ত-বিপর্যস্ত গাজা উপত্যকার উপকূলে এই প্রথম পৌঁছাল কোনো ত্রাণবাহী জাহাজ।
গত মঙ্গলবার (১২ মার্চ) ভূমধ্যসাগরের তীরবর্তী অন্যতম দেশ সাইপ্রাসের লারনাকা বন্দর থেকে রওনা হওয়ার তিন দিন পর গাজার উপকূলে নোঙ্গর করল ওপেন আর্মস। গাজায় কোনো সমুদ্রবন্দর না থাকায় উপকূল থেকে বেশ দূরেই নোঙ্গর করতে হয়েছে জাহাজটিকে। তবে স্বেচ্ছাসেবীদের উদ্যোগে গাজার বিভিন্ন ভবনের ধ্বংসাবশেষ দিয়ে গাজা সিটির শেখ আজলিন এলাকায় একটি অস্থায়ী জেটি নির্মাণ করা হয়েছে। জাহাজ থেকে ত্রাণপণ্যের কার্টন খালাসের পর নৌকার মাধ্যমে সেগুলো নিয়ে আসা হয়েছে জেটিতে।
বিবিসি জানিয়েছে, এই ২০০ টন ত্রাণের মধ্যে রয়েছে চাল, ময়দা, শিম, ক্যানজাত সবজি এবং ক্যানজাত মাংস। স্পেনের দাতব্য সংস্থা ওপেন আর্মস, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক দাতব্য সংস্থা ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রাল কিচেন এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের যৌথ উদ্যোগ ও অর্থায়নে পাঠানো হয়েছে এসব খাদ্যপণ্য। যে জাহাজটিতে ত্রাণ পাঠানো হয়েছে, সেটির মালিক ওপেন আর্মস।
ইসরায়েলি বাহিনী অভিযান শুরুর আগে দারিদ্র্য ও বেকারত্বপীড়িত গাজা উপত্যকায় বসবাসকারী ২০ লাখেরও বেশি ফিলিস্থিনির এক তৃতীয়াংশই ত্রাণের ওপর সরাসরি নির্ভরশীল। স্বাভাবিক অবস্থায় গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ সীমান্ত দিয়ে উপত্যকায় ত্রাণের সরবরাহ পৌঁছাত।
ওয়ার্ল্ড সেন্ট্রারাল কিচেন (ডব্লিউসিকে) এ খাদ্য সরবরাহ করেছে। এ কাজে সহযোগিতা করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। জাহাজে চাল, ময়দা, লেবু, টিনজাত শাকসবজি এবং টিনজাত প্রোটিন পাঠানো হয়েছে। যদিও গাজায় কোনো বন্দর নেই। এজন্য অস্থায়ীভাবে ডব্লিউসিকে দল একটি জেটি বানিয়েছে। যার মাধ্যমে জাহাজ থেকে খাদ্য নামানো হচ্ছে। তবে এসব খাবার কীভাবে বিতরণ করা হবে সে সম্পর্কে কিছু বলা নেই।
ডব্লিউসিকে’র প্রতিষ্ঠাতা সেফ জোস অ্যান্ড্রেস এক্স পোস্টে বলেন, জাহাজের খাদ্যগুলো পরিবহনে ১২টি ট্রাকে লোড করা হবে। আগামীতে আরও খাদ্য পাঠানো হবে।
নতুন সামুদ্রিক পথ চালু হলে গাজায় ক্ষুধার্ত মানুষের সংকট কিছুটা কমতে পারে বলে আশাবাদী সংশ্লিষ্টরা। যদিও সাহায্য সংস্থাগুলো বলেছে, সমুদ্রপথ ও বিমান থেকে ফেলে এই অঞ্চলের বিশাল চাহিদা মেটানো যথেষ্ট হবে না।
গাজায় সমুদ্রে পথে খাদ্য আনার ক্ষেত্রে প্রথমবার সফল হলে, এখানে আন্তর্জাতিকভাবে সহযোগিতার হার বেড়ে যাবে। কারণ অন্যান্য দেশগুলো তখন গাজায় সমুদ্র পথে জাহাজে পণ্য পাঠাবে।
এদিকে গাজায় অস্থায়ী বন্দর নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েল জানিয়েছে, ওপেন আর্মস জাহাজটি সাইপ্রাস থেকে এসেছে। এটির নিরাপত্তার ইসরায়েল বাহিনী কাজ করছে।