ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে বাবার সামনেই ছটফট করতে করতে মারা যায় ছোট্ট সালমা
ইসরায়েলি বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারায় ছোট্ট সালমা । ছবি-আলজাজিরা
হুসেইন জাবের পেশায় একজন ফটোগ্রাফার। ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক জাতিসংঘ রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সিতে (ইউএনআরডব্লিউএ) কাজ করেন তিনি। গত ৫ ডিসেম্বর পরিবারের সদস্যদের জন্য নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে গাজা সিটি থেকে পালানোর চেষ্টা করছিলেন তিনি। ওই সময়ে তিনি তার ছোট্ট মেয়ে সালমাকে চিরতরে হারান।
মেয়েকে হারানোর ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কণ্ঠ ধরে আসছিল বাবা হুসেইন জাবেরের। ইসরায়েলি বাহিনীর যে হামলায় সালমা মারা যায়, একই হামলার ঘটনায় জাবেরও আহত হন।
জাবের বলেন, ‘আমরা যে ভবনে থাকতাম, সেনারা সেটির বাসিন্দাদের সরে যেতে বলে। এরপরই আমরা ভবনটি থেকে বেরিয়ে আসি। অন্য বাসিন্দারা গাজা সিটির পশ্চিম এলাকা অভিমুখে হাঁটছিলেন। এ সময় সেই সড়কে আর কেউ ছিলেন না।
ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক থেকে নির্বিচার গুলি চালিয়ে ওই এলাকার বাড়িঘর, লোকজনকে কেমন করে ঝাঁজরা করে দেওয়া হয় তা নিয়ে পরে সামাজিক মাধ্যমে লেখেন জাবের। বলেন, ‘সালমাই ছিল প্রথম। আমার কাছে আসতে সে তার বোন সারাহর পেছন পেছন দৌড়ে রাস্তার মোড়ে আসে। শুরু হয় হঠাৎ প্রচণ্ড গোলাগুলি।’
জাবের বলেন, চোখের সামনেই সালমার ঘাড়ে এসে গুলি লাগল। সে অবস্থায়ও সে দৌড়াচ্ছিল। পরে তাকে কোলে তুলে নিয়ে সেখান থেকেই গাড়ি তুলি। কোলে তুলে নেয়ার সময় সে যন্ত্রণায় ছটফট করছিল।
ওই গুলিতে সালমা যখন মারা যায়, তখন ৯ বছরের সারাহ অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়। একটি গুলি সারাহর গায়ে থাকা জ্যাকেট এফোঁড়–ওফোঁড় করে বেরিয়ে যায়। ছোট্ট শরীরের কয়েক মিলিমিটার দূর দিয়ে বেরিয়ে যায় গুলিটি।
‘আমার ৩ বছরের ছেলে ওমর এখনো আমাকে জিজ্ঞাসা করে, সালমা কোথায়। সে বোঝে না, সালমা বেঁচে থাকলে কীভাবে তার সঙ্গে হাঁটতে পারত, আর এখন সে নেই।’
সূত্র: আল জাজিরা