নির্বাচনের আগে পাকিস্তানে থানায় জঙ্গি হামলা, নিহত ১০ পুলিশ
ছবি সংগৃহিত
পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় খাইবার পাখতুনখওয়া প্রদেশের এক থানায় সশস্ত্র হামলার ঘটনায় অন্তত ১০ পুলিশ নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছেন। সোমবার ভোররাতের দিকে প্রদেশটির ডেরা ইসমাইল খান জেলার চদওয়ান পুলিশ স্টেশনে হামলার এ ঘটনা ঘটে। সোমবার (৫ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার উত্তর-পশ্চিম পাকিস্তানে একটি থানায় জঙ্গি হামলায় কমপক্ষে ১০ পুলিশ সদস্য নিহত এবং আরও ছয়জন আহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। পাকিস্তানে আগামী বৃহস্পতিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা রয়েছে এবং এর মাত্র তিন দিন আগে এই হামলার ঘটনা ঘটল।
আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি পাকিস্তানে (Pakistan)সাধারণ নির্বাচন। যার জন্য প্রস্তুত সব রাজনৈতিক দল। ঠিক তার আগেই পাকিস্তানে লাগাতার হামলা চালাচ্ছে জঙ্গিরা। বালোচিস্তানে নির্বাচন কমিশন অফিসের বাইরে বিস্ফোরণের আগুন ঠান্ডা হতে না হতেই, ফের একবার পাকিস্তানে আতঙ্ক ছড়াল জঙ্গিরা। নির্বাচনের ঠিক আগ মুহূর্তে খাইবার পাখতুনখোয়ার ডেরা ইসমাইল খানের পুলিশ স্টেশনে হামলা চালিয়েছে জঙ্গিরা। এই হামলায় ১০ পুলিশ সদস্য নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন বলে খবর। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আনিসুল হাসান জানান, সোমবার ভোরে জঙ্গিরা এ ঘটনা ঘটায়। প্রথমে স্নাইপারের গুলি চালায় এবং পরে চৌধওয়ান থানায় প্রবেশ করে। এবং সেখানে উপস্থিত পুলিশদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। হামলায় নিহতদের মধ্যে সোয়াবির অভিজাত পুলিশ ইউনিটের ছয় পুলিশ সদস্য রয়েছেন, যারা নির্বাচনের সময় স্থানীয় পুলিশকে সহায়তা করার জন্য ওই এলাকায় মোতায়েন ছিলেন।
এই হামলার পর নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন। দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তান উপজাতীয় জেলা এবং ডেরা গাজি খানের দিকে যাওয়ার রাস্তাগুলিতে ব্যাপক তল্লাশি শুরু হয়েছে এবং প্রতিটি রাস্তায় চেকিং চলছে।
রবিবার, ৪ জানুয়ারি, বালোচিস্তানের নুশকি জেলায় পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনের (ইসিপি) অফিসের বাইরে আরেকটি বোমা বিস্ফোরণ ঘটে। যার জেরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। তবে ইসিপি অফিসের গেটের বাইরে যে বিস্ফোরণ ঘটেছে তাতে কেউ হতাহত হয়নি। বর্তমানে পুলিশ এলাকাটি ঘিরে রেখেছে এবং অপরাধীদের ধরতে তল্লাশি অভিযান চলছে।
অন্যদিকে পৃথক প্রতিবেদনে পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম দ্য ডন জানিয়েছে, খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং বেলুচিস্তানে নিরাপত্তা উদ্বেগ বেড়েছে। মূলত উভয় প্রদেশই গত কয়েকদিন ধরে একাধিক হামলার সাক্ষী হয়েছে।
খাইবার-পাখতুনখাওয়া প্রদেশের তত্ত্বাবধায়ক মুখ্যমন্ত্রী বিচারপতি (অব.) আরশাদ হুসেন শাহ সোমবারের এই হামলার নিন্দা করেছেন এবং প্রাণহানির জন্য শোক প্রকাশ করেছেন।
এক বিবৃতিতে তিনি নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।
আরশাদ হুসেন শাহ বলেছেন, প্রদেশে শান্তির জন্য খাইবার-পাখতুনখাওয়ার পুলিশ ‘সর্বোচ্চ ত্যাগ’ স্বীকার করেছে এবং ‘এই ধরনের কাপুরুষোচিত হামলা তাদের মনোবল নষ্ট করবে না’।
সরকার শোকাহতদের ‘সকল উপায়ে’ সহায়তা করবে বলেও জানান তিনি।