চীনের মধ্যস্থতায় জান্তার সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি মিয়ানমারের বিদ্রোহী জোট
ছবি: সংগৃহীত
কয়েক মাস যুদ্ধের পর মিয়ানমারের ক্ষমতাসীন সামরিক বাহিনীর সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দেশটির তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত ‘থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স’ জোট। শুক্রবার (১২ জানুয়ারি) অ্যালায়েন্সের এক মুখপাত্র জানিয়েছেন, চীনের মধ্যস্থতায় আলোচনার মাধ্যমে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। খবর রয়টার্সের।
মিয়ানমারের জান্তাবাহিনী ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে অভ্যুত্থানের পর গত বছরের অক্টোবর উত্তর মিয়ানমারের তিন বিদ্রোহী গোষ্ঠী-মিয়ানমার ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স আর্মি (এমএনডিএএ), তা’আং ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মি (টিএনএলএ) এবং আরাকান আর্মি (এএ) সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে সম্মিলিত লড়াই শুরু করে।
মাঝে চীনের মধ্যস্থতায় এই তিন গোষ্ঠীর সঙ্গে একবার সমঝোতার চেষ্টা হলেও তা ব্যর্থ হয়। তবে এবারে এসে যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হলো তারা। মূলত সীমান্তে বাণিজ্যে বাধা এবং শরণার্থী আগমনের সম্ভাবনা নিয়ে চীনে উদ্বেগের কারণেই এ তৎপরতা।
বেইজিং গত মাসে বলেছিল, পক্ষগুলো একটি অস্থায়ী যুদ্ধবিরতি এবং সংলাপ বজায় রাখতে সম্মত হয়েছে। কিন্তু বিদ্রোহীরা গত সপ্তাহে চীনা সীমান্তের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহর, লাউকাইয়ের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে উত্তরাঞ্চলীয় শান রাজ্য এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলে লড়াই অব্যাহত রেখেছে।
থ্রি ব্রাদার অ্যালায়েন্সভুক্ত সশস্ত্র গোষ্ঠী টিএনএলএর এক নেতা বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা শত্রুপক্ষের (সামরিক সরকার) সঙ্গে একটি চুক্তি করেছি। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, ভবিষ্যতে আমরা আর শত্রুপক্ষের সেনাছাউনি বা তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকা এলাকাগুলোতে হামলা চালাব না; আর বিপরীতে তারাও আমাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকাগুলোতে বিমান ও বোমা হামলা থেকে বিরত থাকবে।’
এদিকে শুক্রবার এক ব্রিফিংয়ে চীনরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মাও নিং জানান, গত বুধবার (১০ জানুয়ারি) চীনের দক্ষিণাঞ্চলী প্রদেশ ইউনানের রাজধানী কুনমিংয়ে বৈঠক হয়েছে থ্রি ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্স এবং জান্তা প্রতিনিধিদের মধ্যে। দীর্ঘ সেই বৈঠকের পর চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মত হন দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা।
সাম্প্রতিক সহিংসতার কারণে মিয়ানমারে ৩ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সংঘর্ষে মিয়ানমারের পুলিশ ও সামরিক কর্মীদের বিদ্রোহী গোষ্ঠীর কাছে আত্মসমর্পণ বা সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে পালিয়ে যেতেও দেখা গেছে।