উত্তরখণ্ডে সুড়ঙ্গ ধসে ২ দিন ধরে আটকা ৪০ শ্রমিক
ছবি:সংগৃহীত
ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য উত্তরাখণ্ডের উত্তরকাশী জেলার সিলকিয়ারা এলাকায় একটি নির্মাণাধীন সুড়ঙ্গে ধসের জেরে গত দু’দিন ধরে আটকে আছেন অন্তত ৪০ জন শ্রমিক। যে বিপুল পরিমাণ পাথর ও মাটির স্তূপের তলায় চাপা পড়েছেন তারা, তাতে খুব শিগগিরই এই শ্রমিকদের মুক্তির সম্ভাবনা কম।
ইতোমধ্যে উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে। মাটি ও পাথরের স্তূপের ফাঁক দিয়ে পাইপলাইনের মাধ্যমে আটকা পড়া শ্রমিকদের অক্সিজেন, খাবার ও পানি সরবরাহ করা হচ্ছে বলেও জানা গেছে।
উত্তরাখণ্ড রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বেশ কয়েকটি পবিত্র স্থান রয়েছে। প্রতি বছরই বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ও ভারতের রাজ্যগুলো থেকে লাখ লাখ তীর্থযাত্রী এসব স্থানে আসেন। তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের সুবিধা ও সময় কমানোর জন্য এই সুড়ঙ্গটি নির্মাণের করা হচ্ছিল। ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের সার্বিক তত্ত্বাবধানে এটির নির্মাণকাজ চলছে।
উত্তরকাশী জেলার জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা অর্পণ যদুবংশী বিবিসি হিন্দিকে জানান, সোমবার ভোর ৫ টার দিকে সুড়ঙ্গমুখ থেকে ৩০০ মিটার দূরে হঠাৎ ধস নামে এবং বিপুল পরিমাণ পাথর ও মাটির স্তুপের কারণে সুড়ঙ্গ থেকে বের হওয়ার পথ বন্ধ হয়ে যায়।
এ ঘটনার অল্প সময়ের মধ্যেই শুরু হয় উদ্ধার তৎপরতা শুরু করে পুলিশ ও রাজ্যের দুর্যোগ মোকাবিলা বিভাগের কর্মীরা। ভারী সব যন্ত্র দিয়ে তৎপরতা চালানো হচ্ছে। তবে ধ্বংস্তূপের পরিমাণ বিপুল হওয়ায় আটক শ্রমিকদের উদ্ধার সময়সাপেক্ষ ব্যাপার বলে বিবিসি হিন্দিকে জানিয়েছেন উত্তরকাশীর অপর জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা প্রশান্ত কুমার।
সোমবার সন্ধ্যায় বিবিসি হিন্দিকে তিনি বলেন, ‘আমরা মাটি-পাথরের স্তূপ সরিয়ে ৪৯ ফুট আগাতে পেরেছি। আটকে পড়া শ্রমিকদের কাছে পৌঁছাতে আরও সময় লাগবে।’
সোমবার এক বিবৃতিতে উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেছেন, সিলকিয়ারা সুড়ঙ্গের দুর্ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে তার কথা হয়েছে এবং আটকা পড়া শ্রমিকদের উদ্ধারে উত্তরাখণ্ড রাজ্য সরকারকে সম্ভাব্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
যে ৪০ শ্রমিক আটকা পড়েছেন, তাদের কেউ উত্তরপ্রদেশের, কেউ বিহারের, কেউ বা পশ্চিমবঙ্গের। রাম সুন্দর সিং নামের উত্তর প্রদেশের এক শ্রমিক জানিয়েছেন, সুড়ঙ্গটিতে রাতের শিফটের কাজ চলছিল এবং তিনিও শ্রমিকদের সঙ্গে ছিলেন।
‘ভোর ৫ টার দিকে প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে সুড়ঙ্গের বাইরে বের হয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি এই ভয়াবহ ঘটনা,’ বিবিসি হিন্দিকে বলেন রাম সুন্দর।