পিটার হাসকে পেটানোর হুমকি ইউপি চেয়ারম্যানের, যা বললো যুক্তরাষ্ট্র
ফাইল ছবি
বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে পেটানোর প্রকাশ্য হুমকিকে ‘সহিংস বক্তব্য’ ও সমর্থন অযোগ্য আচরণ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। গতকাল বুধবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ব্রিফিংয়ে এক প্রশ্নের জবাবে এসব মন্তব্য করেন উপপ্রধান মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল।
গত সোমবার এক সমাবেশে বক্তব্য দেওয়ার সময় রাষ্ট্রদূত পিটার হাসকে পেটানোর হুমকি দেন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক মুজিবুল হক চৌধুরী। তাঁর ওই বক্তব্যের ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নিয়েও কটূক্তি করেন।
১৮ মিনিটের ওই ভিডিওতে চেয়ারম্যান মুজিবুল হককে বলতে শোনা যায়, ‘পিটার হাস বলেছেন, এখানে সুষ্ঠু নির্বাচন হবে। এই পিটার হাস, আমরা খাই পাঁচ আঙুলের ভাত। আর তুই খাস ফিডার। পিটার হাস তুই হলি বিএনপির ভগবান। আর তোরে এমন পিটুনি দেব...’
মুজিবুল হক আরও বলেন, ‘বিএনপির একজন ভাইস চেয়ারম্যান বললেন, পিটার হাস তাঁদের জন্য ভগবান হয়ে এসেছেন। এদিকে আমরা পিটার হাসকে ভগবান মানি না, আমরা সৃষ্টিকর্তাকে ভগবান মানি। বিএনপির সঙ্গে এখন আবার যুক্ত হয়েছেন আরও একজন। তাঁর নাম সুদি ইউনূস, যাকে আমরা ডাক্তার ইউনূস বলি।’
বিষয়টি তুলে ধরে পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বেদান্ত প্যাটেলকে প্রশ্ন করা হয়, বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ও দূতাবাসের কর্মীদের দেওয়া হুমকির মাত্রা ও নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগকে তিনি কীভাবে মূল্যায়ন করবেন? বাংলাদেশে কূটনীতিক মিশন ও দূতাবাসকর্মীদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট কী পদক্ষেপ গ্রহণ করছে যুক্তরাষ্ট্র?
জবাবে বেদান্ত প্যাটেল বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি একটু বড় পরিসরে কথা বলতে চাই। আর তা হলো, আমাদের কূটনৈতিক কর্মকর্তা-কর্মচারী ও স্থাপনা নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিত করাকে আমরা সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে থাকি। আমি মনে করি, এ ধরনের সহিংস বক্তব্য খুবই সমর্থন অযোগ্য।’
বেদান্ত প্যাটেল আরও বলেন, ‘তবে এসবের বাইরে গিয়ে আমরা আশা করি, ‘যেকোনো স্বাগতিক দেশের সরকার মার্কিন কূটনীতিক ও স্থাপনার নিরাপত্তা বজায় রাখতে সব ধরনের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। ভিয়েনা কনভেনশন ও কূটনৈতিক কনভেনশন অনুসারে একটি দেশের জন্য বাধ্যতামূলক।’
এর আগে গত মঙ্গলবার পররাষ্ট্র দপ্তরের এই মুখপাত্র বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘এটা মনে রাখা জরুরি যে, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করে না। এটি আমরা আগেও বলেছি, আপনার বন্ধুর প্রশ্নের জবাবে আমরা এটি পুনরুল্লেখ করেছি। আমরা কোনো একটি রাজনৈতিক দলের ওপর অন্য রাজনৈতিক দলকে প্রাধান্য দেওয়ার পক্ষপাতী নই। এই মুহূর্তে আমাদের ফোকাস জানুয়ারির নির্বাচন পর্যন্ত বাংলাদেশে নির্বাচনী পরিবেশ নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা।’
এ সময় তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশি জনগণের কল্যাণে সরকার, বিরোধী দল, নাগরিক সমাজ ও অন্যান্য অংশীদারের একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাতে উল্লিখিত পক্ষগুলোর সঙ্গে যথাযথভাবে জড়িত হওয়ার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে।