ইমরান খানের ৩ বছরের কারাদণ্ড
ইমরান খান। ফাইল ছবি
তোষাখানা মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দেশটির হয়ে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ইমরান খানকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। আজ শনিবার দেশটির রাজধানী ইসলামাবাদের একটি আদালত দুর্নীতির অভিযোগে এই কারাদণ্ড দিয়েছেন। পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডনের প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
দুর্নীতি মামলায় ৩ বছরের কারাদণ্ডের পর পাকিস্তানের লাহোর থেকে ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়ার পাশাপাশি আদালত পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ পার্টির (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খানকে ১ লাখ পাকিস্তানি রুপি অর্থদণ্ডও দিয়েছেন।
ইমরান খানের বিরুদ্ধে চলতি বছরের ১০ মে তোষাখানা মামলা দায়ের করে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন (ইসিপি)। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়—তিনি তোষাখানা থেকে গৃহীত উপহারের তথ্য গোপন করেছেন।
আজকের শুনানির সময় ইসলামাবাদের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক হুমায়ুন দিলাওয়ার ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণ হওয়ায় তাঁকে ৩ বছরের কারাদণ্ড এবং ১ লাখ পাকিস্তানি রুপি অর্থদণ্ড দেন।
রায়ে বিচারক বলেন, ‘ইমরান খান ইচ্ছাকৃতভাবে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশনে মিথ্যা বিবরণ জমা দিয়েছেন এবং দুর্নীতির জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন।’ এই অভিযোগে পাকিস্তানের নির্বাচনী আইনের ১৭৪ ধারা অনুসারে পিটিআই প্রধানকে তিন বছরের জন্য কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
বিচারপতি দিলাওয়ার আরও নির্দেশ দিয়েছেন যে, আদালতের আদেশ কার্যকর করার জন্য আদেশের একটি অনুলিপি ইসলামাবাদের পুলিশ প্রধানের কাছে পাঠাতে হবে।
তোষাখানায় থাকা উপহার সামগ্রী এবং বিক্রয় থেকে আয়ের বিশদ বিবরণ প্রকাশ না করার অভিযোগে ক্ষমতাসীন জোট সরকার গত আগস্টে ইমরানের বিরুদ্ধে স্পিকারের কাছে অভিযোগ দেয়। তিনি পরে সেটি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) সিকান্দার সুলতান রাজার কাছে পাঠান।
পাকিস্তানে তোষাখানা প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। এটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণাধীন একটি বিভাগ। সরকার ও অন্যান্য রাজ্যপ্রধান এবং বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিরা শাসক, সংসদ সদস্য, আমলা ও কর্মকর্তাদের যেসব উপহারসামগ্রী দেন, সেগুলো সংরক্ষণের দায়িত্বে থাকা একটি দপ্তর এটি।
তোষাখানার নিয়ম অনুসারে, প্রযোজ্য ব্যক্তিদের দেওয়া উপহার এবং অন্যান্য উপকরণ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে নিয়মিত রিপোর্ট করতে হয়।
২০১৮ সালে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পিটিআই সরকার ইমরানকে দেওয়া উপহারের বিবরণ প্রকাশ করতে অনিচ্ছুক ছিল। যুক্তি ছিল, এটি আন্তর্জাতিক সম্পর্ককে হুমকির মুখে ফেলবে।
গত ৮ সেপ্টেম্বর নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া লিখিত জবাবে ইমরান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর প্রাপ্ত কমপক্ষে চারটি উপহার বিক্রি করার কথা স্বীকার করেন।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী তাঁর জবাবের সপক্ষে যুক্তি দেখিয়ে বলেন, তিনি রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে ২১ দশমিক ৫৬ মিলিয়ন রুপি দিয়ে উপহারগুলো সংগ্রহ করেছিলেন, তা বিক্রি করে প্রায় ৫৮ মিলিয়ন রুপি পাওয়া গেছে। উপহারগুলো মধ্যে রয়েছে—একটি গ্রাফ হাতঘড়ি, এক জোড়া কাফ লিংক, একটি দামি কলম এবং একটি আংটি—এসব মিলিয়ে একটি সেট; অন্য তিনটি উপহারের মধ্যে রয়েছে চারটি রোলেক্স ঘড়ি।