ইউক্রেনে রুশপন্থীদের ক্ষমতায় বসানোর চক্রান্ত চলছে: যুক্তরাজ্য
ইউক্রেন নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলোর সঙ্গে কার্যত রাশিয়ার যুদ্ধাবস্থা চলছে। তবে এবার মস্কোর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে যুক্তরাজ্য। তারা বলছে, কিয়েভে রুশপন্থী নেতাকে ক্ষমতায় বসানোর লক্ষ্যে ষড়যন্ত্র করছে মস্কো। ইউক্রেনে আগ্রাসন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশটির একাধিক সাবেক রাজনীতিকের সঙ্গে যোগসাজশ করছেন রাশিয়ার গোয়েন্দা কর্মকর্তারা। শনিবার এক বিবৃতিতে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এমন অভিযোগ করেছে বলে জানায় ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
দীর্ঘ সময় ধরেই ইউক্রেন সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে রেখেছে ক্রেমলিন। তবে দেশটিতে সামরিক অভিযানের কোনো পরিকল্পনা নেই বলে দাবি করে আসছে মস্কো। এ নিয়ে উত্তেজনা প্রশমনে দফায় দফায় চলছে আলোচনা। গত শুক্রবারই সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আলোচনা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই ক্রেমলিনের বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ আনল যুক্তরাজ্য।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, কিয়েভে সম্ভাব্য রুশপন্থী সরকারের প্রধান হিসেবে ইউক্রেনের সাবেক আইনপ্রণেতা ইয়েভহেন মুরাইয়েভকে বিবেচনা করছে রাশিয়া। এ সংক্রান্ত তথ্য যুক্তরাজ্যের কাছে আছে বলেও দাবি করা হয়েছে। তবে এই দাবির স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দেয়নি যুক্তরাজ্য।
ইউক্রেনে রুশপন্থী সরকার বসাতে রাশিয়া ষড়যন্ত্র করছে বলে অভিযোগ এনে টুইটারে একটি পোস্ট দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রস। টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনে রুশপন্থী নেতৃত্বকে ক্ষমতায় বসাতে ক্রেমলিনের চক্রান্ত তারা কোনোভাবেই সহ্য করবেন না। ক্রেমলিন জানে যে, সামরিক অনুপ্রবেশ কৌশলগতভাবে একটি বড় ভুল হবে। এজন্য রাশিয়াকে চড়া মূল্য দিতে হবে।’
যুক্তরাজ্যের পক্ষ থেকে আরও অভিযোগ করা হয়ে যে, রুশ গোয়েন্দা সংস্থাগুলো ইউক্রেনের বেশ কয়েকজন সাবেক রাজনীতিকের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছে। ইউক্রেনে আগ্রাসন চালানোর পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন রুশ গোয়েন্দারা।
এই অভিযোগের বিপরীতে রাশিয়া জবাব না দিলেও ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম অবজারভারকে ইউক্রেনের সাবেক আইনপ্রণেতা ইয়েভহেন মুরাইয়েভ বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে বিভ্রান্ত মনে হচ্ছে। তারা যে অভিযোগ তুলেছে, তা যৌক্তিক নয়। তাকে রাশিয়া নিষিদ্ধ করেছে। শুধু তা-ই নয়, দেশটিতে তাঁর বাবার অর্থও জব্দ করা হয়েছে।’
৪৫ বছর বয়সী ইয়েভহেন মুরাইয়েভ রুশপন্থী রাজনীতিক হিসেবে পরিচিত। পশ্চিমাদের সঙ্গে ইউক্রেনের ঘনিষ্ঠতার বিরোধী তিনি। গত ডিসেম্বরে একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের চালানো জরিপে ইউক্রেনে ২০২৪ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সম্ভাব্য প্রার্থীদের তালিকায় মুরাইয়েভের নাম সপ্তম স্থানে উঠে আসে। তার পক্ষে ৬ দশমিক ৩ শতাংশ জনসমর্থনও রয়েছে।
পশ্চিমা দেশগুলোর সামরিক জোট ন্যাটোর সদস্য হতে আগ্রহী ইউক্রেন। তবে এ নিয়ে আপত্তি রয়েছে মস্কোর। এই আপত্তির কারণেই ইউক্রেন সীমান্তে রুশ সেনা মোতায়েন করা হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।
এসএ/