ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চন
এবার কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ
৪৮ ঘন্টা আগে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ঠিক যে ঘটনাটা ঘটেছিল তারই পুনরাবৃত্তি হল কলকাতার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে। জামিয়া এবং জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় বিবিসির তৈরি ডকুমেন্টারি দেখানোর সময় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়। কলকাতায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্ব সঞ্জীব গোয়েঙ্কার সিইএসসি কোম্পানির। পশ্চিমবঙ্গে মূল ব্যবসা হওয়ার সুবাদে তার সঙ্গে সুসম্পর্ক রয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ফলে মোদি বিরোধিতায় গলা ফাটানো তৃণমূল সরকারের এহেন আচরণে তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে কলকাতা তথা পশ্চিমবঙ্গের ছাত্র মহলে।
প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রদর্শনের মাঝেই বন্ধ হয়ে গেল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তৈরি বিতর্কিত তথ্যচিত্র। এসএফআইয়ের অভিযোগ, ইচ্ছা করেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এর নেপথ্যে রাজ্য সরকারের ইন্ধন রয়েছে বলেই দাবি ওই বাম ছাত্র সংগঠনের।
বৃহস্পতিবার (২৭ জানুয়ারি) যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখানো হয়েছিল বিবিসির ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চন’ তথ্যচিত্রটি। পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবার (২৭ জানুয়ারি) প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে তা দেখানোর কথা ছিল। এসএফআইয়ের অভিযোগ, তথ্যচিত্র শুরু হওয়ার আধ ঘণ্টা পরেই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এর নেপথ্যে রয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এসএফআইয়ের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস বলেন, ‘‘ছাত্রবিরোধিতায় নরেন্দ্র মোদী ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে একই জায়গায় রয়েছেন, প্রেসিডেন্সির ঘটনা তারই প্রমাণ। দিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো প্রেসিডেন্সিতেও বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যাতে মোদীকে নিয়ে তথ্যচিত্র দেখানো না যায়।’’ ময়ূখের দাবি, শুক্রবার মোদীকে নিয়ে তথ্যচিত্রটি মাত্র আধ ঘণ্টা দেখানো সম্ভব হয়, তার পরেই বিদ্যুৎ বন্ধ করে দেন কর্তৃপক্ষ। প্রেসিডেন্সি রাজ্যের আওতায় থাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে রাজ্যের অঙ্গুলিহেলন ছাড়া এমন পদক্ষেপ অসম্ভব বলেই মনে করেন ময়ূখ।
তথ্যচিত্রটির প্রদর্শনী রুখতে আজ সকাল থেকেই দিল্লিতে তৎপর ছিল পুলিশ বাহিনী।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) পর এবার দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়। বিবিসি-র তথ্যচিত্র ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদী কোয়েশ্চেন’-এর প্রদর্শন ঘিরে আবার অশান্তি দেশের রাজধানীতে। ২০০২ সালের গোধরা পরবর্তী গুজরাতে সাম্প্রদায়িক হিংসা এবং সে রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে নিয়ে তৈরি তথ্যচিত্রের প্রদর্শন শুরু হওয়ার পরে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঢুকে দিল্লি পুলিশ হামলা চালায় বলে অভিযোগ জানিয়েছেন শিক্ষার্থীদের একাংশ।
শুক্রবার বিকাল ৪টায় তথ্যচিত্র প্রদর্শনের ঘোষণা করেছিল দলিত ছাত্র সংগঠন ভীম আর্মি স্টুডেন্টস ফেডারেশন। কিন্তু আর্টস ফ্যাকাল্টির ভিতর প্রদর্শন শুরুর আগেই পুলিশের তরফে ১৪৪ ধারা জারি করা হয় ক্যাম্পাসের বাইরে। অভিযোগ উঠেছে গেটের বাইরে ছাত্রদের জমায়েত সরাতে পুলিশ বলপ্রয়োগ করে, এরপর ক্যাম্পাসে ঢুকে পুলিশ লাঠিচার্জ করে এবং কয়েক জন শিক্ষার্থীকে আটক করে।
/এএস