শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫ | ১৬ মাঘ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

টাটাকে নিয়ে মমতার কলকাতায় নতুন বিতর্ক

ভারতের অঙ্গরাজ্য পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতায় নতুন করে উঠে এসেছে একটি পুরনো বিতর্ক। ২০১১ সালে ৩৬ বছরের বামফ্রন্ট সরকারকে হঠিয়ে যখন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিলেন, এই প্রসঙ্গটি তখনকার।

ঢাকাপ্রকাশ-এর পাঠকদের পুরনো সেই ঘটনা একটু মনে করিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। ভারতের অন্যতম বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী টাটা গ্রুপ তথা তাদের কর্ণধার (টাটা সনস-এর চেয়ারম্যান) রতন টাটা চেয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার সিঙ্গুরে মধ্যবিত্তদের জন্য গাড়ি (টাটা ন্যানো) তৈরির একটি কারখানা করবেন।

তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার এবং সাবেক মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সাগ্রহে টাটাদের পশ্চিমবঙ্গে ডেকে নিয়ে এসেছিলেন।

কিন্তু উর্বর কৃষিজমি দখল করে শিল্প গড়া হচ্ছে এই অভিযোগ তুলে রীতিমতো জঙ্গি আন্দোলন শুরু করে দিয়েছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল। এর পরের পর্যায় দুটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা ঘটে।

প্রথমত টাটারা বাধ্য হয় সিঙ্গুর ছেড়ে প্রকল্পটি নিয়ে গুজরাতে নরেন্দ্র মোদির রাজ্যে চলে যেতে। সেখানে আনন্দ থেকে পরে ন্যানো গাড়ি বাজারে এসেছিল। আর দ্বিতীয় তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনাটি ছিল বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে বামফ্রন্ট সরকারের পতন।

কিন্তু সেই পুরনো প্রসঙ্গ আবার নতুন করে প্রাসঙ্গিক হল কেন? হলো তার কারণ, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সম্প্রতি (গত বুধবার) মন্তব্য করেছেন, টাটাদের আমি সিঙ্গুর থেকে তাড়াইনি। ওদের এই রাজ্য থেকে তাড়িয়েছিল বামফ্রন্ট সরকারই। তার এই মন্তব্য নিয়েই জলঘোলা শুরু হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের বিরোধী নেতা-নেত্রী, রাজনৈতিক কর্মী, সংবাদমাধ্যম এবং সুশীল সমাজের মধ্যে প্রশ্ন উঠেছে, সেদিন কী ঘটেছিল তা এখনো ভুলে যাওয়ার মতো পুরনো হয়নি। সকলেই তা জানে। তাহলে কী এমন কারণ ঘটলো যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমান রাজ্যের রাজনৈতিক চালচিত্রে সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক একটি পুরনো ঘটনা তুলে ধরলেন? এবং তাও পুরোপুরি বিকৃত একটি ভাষ্য?

এবার দেখা যাক সেদিনের ঘটনা পরম্পরা কেমন ছিল? গত দু’দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব বাংলা ও ইংরাজি সংবাদমাধ্যমে সেই সময়কার কাগজের ছবি দিয়ে সে কথা লিখেছে। ধিক্কারের বন্যা বয়ে গেছে সমাজমাধ্যমেও। সিঙ্গুর থেকে টাটাদের ন্যানো প্রকল্প সরে যাওয়ার দায় তাঁর নয়। তার জন্য দায়ী তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার।

বুধবার (১৯ অক্টোবর) শিলিগুড়িতে বিজয়া সম্মিলনীর অনুষ্ঠান থেকে এমনই মন্তব্য করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

মমতার দাবি, তৎকালীন শাসক সিপিএম কৃষকদের থেকে জোর করে জমি ছিনিয়ে নিয়েছিল! ক্ষমতায় আসার পর তিনি সেই জমি ফিরিয়ে দিয়েছেন। তার ওই মন্তব্যের জেরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক।

প্রসঙ্গত, সিঙ্গুরে ন্যানো প্রকল্পের জন্য ৯৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করেছিলেন তৎকালীন বাম সরকার। তার মধ্যে প্রায় ৪০০ একর জমির দাতা ছিলেন ‘অনিচ্ছুক’।

ইতিহাস বলছে, ২০০৬ সালের ১৮ মে সিঙ্গুরে ছোট গাড়ি তৈরির প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন রতন টাটা। ২৫ মে থেকে ৯৯৭ একর কৃষিজমি অধিগ্রহণের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। তার নেতৃত্বে ছিল বিরোধী তৃণমূল।

গোপালনগর, বেড়াবেড়ি, বাজেমেলিয়া, খাসেরভেড়ি, সিংহেরভেড়িসহ বেশ কয়েকটি আন্দোলন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ২৫ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশি হামলার অভিযোগ ওঠে। আহত হন বেশ কয়েক জন গ্রামবাসীও।

২০০৬-এর ৩০ নভেম্বর সিঙ্গুরে গিয়ে আক্রান্ত হন তৎকালীন বিরোধীনেত্রী মমতা। সেই অশান্তির রেশ এসে পৌঁছায় রাজ্য বিধানসভায়। সেদিন বিরোধী দল তৃণমূলের বিধায়কদের একাংশ বিধানসভার আসবাব ভাঙচুর করেছিলেন বলে বামেদের অভিযোগ।

সিঙ্গুরের ‘অনিচ্ছুক’ কৃষকদের জমি ফেরানোর দাবিতে ২৬ দিন (৩-২৮ ডিসেম্বর, ২০০৬) ধর্মতলার মোড়ে অনশন-অবস্থান করেছিলেন মমতা। তৎকালীন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধীর তৎপরতায় রাজভবনে আলোচনা হয়েছিল সেই ঘটনা নিয়ে।

মমতার অনশন মঞ্চে এসেছিলেন বিভিন্ন দলের নেতা। সমর্থন এসেছিল তৎকালীন কেন্দ্রীয় সরকারের তরফেও। অনশন মঞ্চে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহও। সকলের সনির্বন্ধ অনুরোধে অনশন প্রত্যাহার করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী।

১৮ ডিসেম্বর সিঙ্গুরের বাজেমেলিয়া গ্রামের বাসিন্দা ১৬ বছরের কিশোরী তাপসী মালিকের মৃত্যু ঘিরে রাজনৈতিক চাপান-উতোর শুরু হয়। খুনের জন্য সিপিএমকে দায়ী করে তাপসীর পরিবার এবং তৃণমূল। মে মাসে সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো প্রকল্প রূপায়ণের পথ সুগম করতে তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা শুরু করে তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের সরকার। কিন্তু তা সফল হয়নি।

২১ মে রাজ্যের পঞ্চায়েতে ভোটে সিঙ্গুর-সহ বিভিন্ন এলাকায় জয়ী হয় তৃণমূল। আগস্টে নতুন করে শুরু হয় জমিরক্ষা আন্দোলন। ২৪ অগস্ট থেকে টানা ১৫ দিন দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে অবস্থান করেন মমতা। ন্যানো কারখানা রাজ্যের বাইরে সরানোর হুঁশিয়ারি রতন টাটার।

৩ সেপ্টেম্বর সিঙ্গুরে কারখানা নির্মাণের কাজ স্থগিত করে টাটা মোটরস। পাশাপাশিই অন্য রাজ্যে জমির খোঁজ শুরু করে তারা। ৩ অক্টোবর সিঙ্গুর থেকে প্রকল্প সরানোর ঘোষণা করেন টাটা গোষ্ঠীর কর্ণধার। ৭ অক্টোবর আনুষ্ঠানিক ভাবে জানানো হয়, ন্যানো কারখানার পরবর্তী গন্তব্য নরেন্দ্র মোদীর রাজ্য গুজরাতের সানন্দে। তখন মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী।

এরপর চলে দীর্ঘ মামলা মোকদ্দমা। জমি পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে একদিকে টাটা, অন্যদিকে রাজ্য সরকার। ২০১৬-র ৩১ অগস্ট ঐতিহাসিক রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত ২০০৬ সালের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া বাতিল করে জানায়, বাম জমানায় আইন মেনে জমি নেওয়া হয়নি। ১২ সপ্তাহের মধ্যে টাটাকে জমি ফেরানোর নির্দেশও দেওয়া হয়।

২০১৬-র ৩১ অগস্ট ঐতিহাসিক রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট। শীর্ষ আদালত ২০০৬ সালের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া বাতিল করে জানায়, বাম জমানায় আইন মেনে জমি নেওয়া হয়নি। ১২ সপ্তাহের মধ্যে টাটাকে জমি ফেরানোর নির্দেশও দেওয়া হয়। চলতি বছরের ১৩ মে মমতার বাংলা জয়ের একাদশ বর্ষপূর্তির আগে সিঙ্গুর নিয়ে ইনস্টাগ্রামে একটি পোস্ট করেন টাটা গোষ্ঠীর ‘চেয়ারম্যান এমিরেটাস’ রতন টাটা।

সেখানে তিনি তার স্বপ্নের ন্যানো প্রকল্প শুরু করার ‘আসল কারণ’ লিখেছিলেন। পশ্চিমবঙ্গ থেকে ন্যানো প্রকল্প তুলে নিয়ে যাওয়ার সময় রতন টাটা আক্ষেপ করে বলেছিলেন, ‘‘আমি বলেছিলাম আমার মাথায় বন্দুক ঠেকালেও আমি ন্যানো প্রকল্প ছেড়ে যাব না। কিন্তু মমতা তো ট্রিগারই টেনে দিলেন।’’

বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার মাথা পর্যন্ত দুর্নীতির অভিযোগে ডুবে রয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার নম্বর টু পার্থ চট্টোপাধ্যায় সহ শিক্ষা দফতরের প্রায় সব শীর্ষ স্থানীয় পদাধিকারীরা জেলে রয়েছেন। তার পাশাপাশি কয়লা, গরু পাচার, বালি পাচার, খাদ্যশস্য পাচার, লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময়ে সরকারি চাকরি বিক্রিসহ একাধিক অভিযোগের তদন্ত চলছে তৃণমূল সরকারের নেতা ও মন্ত্রীদের বিরুদ্ধে।

এমনকি মমতার ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার পরিবারের বিরুদ্ধেও চলছে দুই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এবং ইডি-র তদন্ত। এমন একটা পরিস্থিতিতে মমতার এগারো বছর আগেকার টাটা প্রসঙ্গ উত্থাপন কি মানুষের নজর ঘোরানোর লক্ষ্যেই? উঠছে প্রশ্ন।

এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির

ছবি: সংগৃহীত

প্রথমবারের মতো কোনো আরব নেতা সিরিয়া সফরে গেলেন কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় তিনি সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে পৌঁছান। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, সিরিয়ায় প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের সরকারের পতনের পর এই প্রথমবার কোনো সরকারপ্রধান বা রাষ্ট্রপ্রধান দেশটি সফর করলেন। বর্তমানে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আহমেদ আল-শারা। সফরের সময় দামেস্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উপস্থিত থেকে কাতারের আমিরকে স্বাগত জানান তিনি।

কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে জানান, নতুন সিরীয় প্রশাসনের সঙ্গে কাতার মাঠপর্যায়ে কাজ করতে আগ্রহী। বিশেষ করে সিরিয়ার জনগণের জন্য চলমান চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা করা, ইসরায়েলি দখলদারিত্ব প্রতিহত করা এবং সিরিয়ার ওপর থেকে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারে সহায়তা করার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি।

বিশ্লেষকদের মতে, কাতারের আমিরের এই সফর মধ্যপ্রাচ্যের ভূ-রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনতে পারে। দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতার পর এই সফর দুই দেশের সম্পর্ক পুনর্গঠনে ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে।

Header Ad
Header Ad

শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন হত্যাকাণ্ডে পুলিশের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে প্রতিবেদন দিয়েছে তদন্ত কমিটি। তবে এই প্রতিবেদন নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে, তদন্ত কর্মকর্তারা পুলিশের দায় এড়াতে পক্ষপাতমূলক প্রতিবেদন দিয়েছেন এবং ইয়ামিনকে সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন।

সমালোচকরা বলছেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে পুলিশের নৈতিক অবক্ষয় এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে গণঅভ্যুত্থানের পরও তারা নিজেদের পরিবর্তন করতে পারেনি। বরং, কঠিন চাপে থেকেও পুলিশের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড মাঝে মাঝেই প্রকাশ পাচ্ছে।

তদন্ত প্রতিবেদনে পুলিশের দাবি, ইয়ামিন এপিসি (সাঁজোয়া যান) কারে উঠলে বাইরে থেকে সন্ত্রাসীরা গুলি ছোঁড়ে, যা তাকে আহত করে। এরপর এএসআই মোহাম্মদ আলী তাকে নামানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু তার হাতে ব্যথা থাকায় ফসকে পড়ে যান ইয়ামিন। পুলিশ আরও জানায়, জনগণের কাছে হস্তান্তরের জন্য তাকে রোড ডিভাইডারে রাখা হয়, যাতে কেউ তাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারে।

তবে এই বক্তব্যের সঙ্গে ঘটনাস্থলের ভিডিও ফুটেজের কোনো মিল পাওয়া যায়নি। ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা যায়, পুলিশের সদস্যরা নীল রঙের এপিসি কারের ওপর ইয়ামিনকে ফেলে রেখে টহল চালায় এবং ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালায়। কিছুক্ষণ পর এপিসি কারটি সাভারের রানা প্লাজা ও ভ্যাট অফিসের মাঝামাঝি এলাকায় আসে। এরপর এপিসির ভেতর থেকে এক পুলিশ সদস্য দরজা খুলে দেয় এবং আরেকজন ইয়ামিনকে টেনে-হিঁচড়ে রাস্তায় ফেলে দেয়।

ভিডিওতে আরও দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ ইয়ামিন তখনও জীবিত ছিলেন। প্রচণ্ড কষ্টে নিশ্বাস নিতে দেখা যায় তাকে। তার পরনে ছিল নেভি ব্লু ট্রাউজার ও খয়েরি রঙের জামা। এপিসি থেকে ফেলে দেওয়ার পর তার দুই হাত দুই দিকে ছড়িয়ে যায় এবং একটি পা এপিসির বাঁ দিকের চাকার সঙ্গে আটকে থাকে। মৃত ভেবে পুলিশের সদস্যরা তার পায়ে আর গুলি না করে রাস্তার এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্তে টেনে রোড ডিভাইডারের পাশে ফেলে দেয়। এরপর আরও দুই পুলিশ সদস্য নেমে এসে তাকে সার্ভিস লেনে ফেলে রেখে চলে যায়।

পুলিশের এই প্রতিবেদনকে ‘চরম পক্ষপাতদুষ্ট’ উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে অগ্রহণযোগ্য বলে ঘোষণা দিয়েছে। মন্ত্রণালয়ের এক সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে, তদন্ত কর্মকর্তারা শুধু পুলিশ সদস্যদের বক্তব্য নিয়েছেন, অথচ কোনো প্রত্যক্ষদর্শী, সংবাদকর্মী বা সাধারণ মানুষের সাক্ষ্য নেননি। এ কারণে তদন্ত প্রক্রিয়াকে পক্ষপাতদুষ্ট ও অবিশ্বাস্য বলে মনে করা হচ্ছে।

এছাড়া, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ এক প্রতিবেদনে পুলিশের আচরণকে ‘ভয়ংকর বর্বরতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, তদন্ত কমিটির তিন পুলিশ সদস্য দায়িত্বে চরম অবহেলা করেছেন এবং অপেশাদারসুলভ আচরণ করেছেন। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জননিরাপত্তা বিভাগের রাজনৈতিক শাখাকে সুপারিশ করা হয়েছে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ নীল এপিসি কার থেকে ইয়ামিনের গুলিবিদ্ধ দেহ রাস্তায় ফেলে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চেয়েছিল। ঘটনাটি ঘটে সাভারের আশুলিয়া এলাকায়। কোনো ময়নাতদন্ত বা আনুষ্ঠানিক মৃত্যুসনদ না দিয়েই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইয়ামিনের লাশ হস্তান্তর করে।

ঢাকা ও সাভার রেঞ্জের ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তারা ইয়ামিনের মৃত্যুর ঘটনায় মামলা না করার জন্য পরিবারকে ভয়ভীতি দেখায়। পরে, পরিবার তাকে সাভারের তালবাগে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করতে চাইলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা মিজানুর রহমান মিজান বাধা দেন। শেষ পর্যন্ত ব্যাংক টাউন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী, পুলিশ দায় মুক্তি পেয়েছে। কিন্তু ভিডিও ফুটেজের ভয়ংকর দৃশ্যগুলো ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনার সঙ্গে পুলিশের বক্তব্যের কোনো মিল নেই। তাহলে, শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে যদি সত্য প্রকাশ না পায়, তবে স্বাধীন তদন্ত কমিটির মাধ্যমে পুনরায় এই হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি উঠেছে। নিহত ইয়ামিনের পরিবার এবং আন্দোলনকারীরা ন্যায়বিচারের জন্য লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

Header Ad
Header Ad

রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান

ছবি: সংগৃহীত

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও একাধিক হত্যা মামলায় সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী মোহাম্মদ নুরুজ্জামানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) রাত ৯টায় রংপুর মহানগরীর সেন্ট্রাল রোডের পোস্ট অফিসের গলির এক বাসা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) মোহাম্মদ শিবলী কায়সার।

উল্লেখ্য, ৫ আগস্টের পর থেকে মোহাম্মদ নুরুজ্জামান আত্মগোপনে ছিলেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দীর্ঘদিনের নজরদারির পর অবশেষে তাকে গ্রেফতার করা হলো।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

প্রথম আরব নেতা হিসেবে সিরিয়া সফরে কাতারের আমির
শহীদ ইয়ামিনকে হত্যা করল কে? পুলিশের তদন্তে নতুন বিতর্ক
রংপুর থেকে গ্রেফতার সাবেক সমাজকল্যাণ মন্ত্রী নুরুজ্জামান
কোটা পদ্ধতি পুনরায় পর্যালোচনার নতুন ৩ সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের
আমরা কারও কাছে চাঁদা চাইনি, চাইবোও না: জামায়াত আমির
নওগাঁ বারের নির্বাচনে সব পদে বিএনপি প্যানেলের জয়
আরব আমিরাতে চাঁদ দেখা গেছে, পবিত্র শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি
ডিপসিকের চেয়েও কার্যকর নতুন এআই আনার দাবি আলিবাবার
প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন ও গুণগত পরিবর্তনই আমাদের মূল লক্ষ্য: গণশিক্ষা উপদেষ্টা
বাণিজ্য মেলায় সংঘর্ষ, আহত ১৬
শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের বিচার দাবিতে আমরণ অনশনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিলে নিজেই জানিয়ে দিবো: তথ্য উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম
সাত কলেজের জন্য হচ্ছে ‘জুলাই ৩৬ বিশ্ববিদ্যালয়’
ভোটারদের আস্থা পুনরুদ্ধারে উদ্যোগ নিতে বলেছে ইইউ: ইসি সচিব
রংপুরের টানা চতুর্থ হার, প্লে-অফের দৌড়ে টিকে রইলো খুলনা
চিরতরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ঢাকার মধুমিতা সিনেমা হল
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে 'জয় বাংলা' স্লোগান, আটক ৫
প্রধান উপদেষ্টার উদ্বোধনে শুরু হচ্ছে একুশে বইমেলা
সুইডেনে পবিত্র কোরআন পোড়ানো সেই যুবককে গুলি করে হত্যা
বাংলাদেশ পুলিশে ১৬টি শূন্য পদে নিয়োগ, আবেদন শুরু ২ ফেব্রুয়ারি