সীমিত পরিসরে দেশে দেশে বর্ষবরণ
করোনার বিধি নিষেধের মধ্যেও নতুন বছরকে বরণ করতে দেশে দেশে হয়েছে নানা আয়োজন। করোনা ভীতি কাটিয়ে আতশবাজির আলোয় কিছুটা সময়ের জন্য হলেও স্বস্তি মিলেছিল মানুষের মনে।
করোনার রেকর্ড সংক্রমণের মধ্যেও নানা আয়োজনে ২০২২ সালকে বরণ করে নিয়েছে বিশ্বের নানা দেশ। সবার শেষে নতুন বছরকে বরণ করল নিউ ইয়র্কবাসী। বছর বরণে নিউ ইয়র্কের টাইমস স্কয়ারে জড়ো হয় ১৫ হাজারের বেশি মানুষ।
এদিকে টাইমস স্কয়ারে প্রতিবারের মতো এবারও বসছে নতুন বছরের ক্ষণগণনার আয়োজন। তবে এই আয়োজনে জনসমাগম ছিল সীমিত। সেখানে উপস্থিত হওয়া ব্যক্তিদের সামাজিক দূরত্ব মেনে চলতে এবং করোনার টিকার সনদ সঙ্গে রাখতে অনুরোধ করেছে শহর কর্তৃপক্ষ। ১৯০৪ সাল থেকে টাইমস স্কয়ারে বর্ষবিদায় ও নতুন বর্ষবরণের উদ্যাপন হয়ে আসছে।
বর্ণিল আতশবাজির মধ্য দিয়ে ২০২২ সালকে বরণ করে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের বাসিন্দারা। নতুন বছরের প্রথম প্রহরকে বরণে সিডনি হারবারের আকাশ ছেয়ে গিয়েছিল নানা রঙের আলোয়। বিশ্বের প্রথম শহর হিসেবে নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে সিডনি।
প্রতিবছর আতশবাজির পাশাপাশি সিডনির অপেরা হাউস বিভিন্ন রঙের আলোকসজ্জায় সেজে ওঠে। এবারও নানান রঙে রেঙেছিল এই স্থাপনা। নতুন বছর শুরুর মুহূর্তে সিডনি বন্দরের ঐতিহ্যবাহী আতশবাজি সবার নজর কেড়েছে। নতুন বছরের প্রথম মুহূর্তে মেলবোর্নের আকাশও বর্ণিল আতশবাজিতে রঙিন হয়ে উঠেছিল।
তবে করোনার অতিসংক্রামক ধরন অমিক্রন ছড়িয়ে পড়ার ভীতির পরিপ্রেক্ষিতে এবার নিউজিল্যান্ডের রাজধানী অকল্যান্ডে নতুন বছরকে বরণ করে নিতে কোনো আয়োজন ছিল না। প্রতিবারের মতো এবার অকল্যান্ডের আকাশে আতশবাজির আলোকচ্ছটা দেখা যায়নি।
এদিকে, অমিক্রন সংক্রমণের ভয় থেকে যুক্তরাজ্যের লন্ডনের বিগ বেন, মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুরে পেট্রোনাস টুইন টাওয়ারসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরের আইকনিক স্থাপনাগুলোয় নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার আয়োজন সীমিত কিংবা বাতিল করা হয়েছে।
লন্ডনের বিগ বেন টাওয়ারে বর্ণময় আলোকসজ্জা আর আতশবাজিতে বরণ করে নেয়া হয় নতুন বছরকে। নানা বিধি নিষেধের মধ্যেও নতুন বছর বরণের আয়োজনে কমতি রাখেনি জার্মানিও।
বছর বরণের আয়োজনের মাধ্যমে কিছুটা সময়ের জন্য হলেও করোনার ভয়াবহতা ভুলে ছিলো ফরাসিরা। এছাড়াও, তিয়েনআনমেন স্কয়ারে পতাকা প্রদর্শনী আর অ্যানুয়াল গালা নাইটের মাধ্যমে ২০২২ সালকে স্বাগত জানিয়েছেন চীনারা।
তবে সবার আগে ২০২২ সালকে বরণ করেছে প্যাসিফিক আইল্যান্ড দ্বীপ রাষ্ট্র টোঙ্গা, সামোয়া এবং কিরিবাতি। এর পরই নতুন বছরকে স্বাগত জানিয়েছে নিউ জিল্যান্ড। ভৌগোলিক কারণে ঘড়ির কাঁটা সবচেয়ে আগে ১২টা ছুঁয়েছে এখানে। খবর সিএনএনের।
গ্লোবাল স্টান্ডার্ড টাইম অনুযায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ব উপকূলে যখন ভোর পাঁচটা, ঠিক তখন টোঙ্গা, সামোয়া এবং কিরিবাতিতে ঘড়ির কাঁটা ১২টা ছুঁয়ে যায়। আর নিউজিল্যান্ড নতুন বছরকে বরণ করে ঠিক এর এক ঘন্টা পর।
আমেরিকার একদম দক্ষিণের সামোয়া অঞ্চল, প্যাসিফিক দ্বীপ দেশ সামোয়া থেকে মাত্র ১০১ মাইল দূরে অবস্থান করলেও, সম্পূর্ণ আলাদা একটি টাইম জোনে অবস্থান আমেরিকার সামোয়ার। আর আমেরিকার সামোয়াবাসীকে নতুন বছরের উদযাপনের জন্য পুরো ১২ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে।
নানা আয়োজনে খৃষ্টিয় নতুন বছর বরণ করেছে সৌদি আরব। এদিকে, তুষারে ঢাকা রেড স্কয়ারে আতশবাজির প্রদর্শনী ছিল রাশিয়ার নতুন বছরের আয়োজনে। আয়োজনের কমতি ছিলনা ভারতেও। থাইল্যান্ড, দুবাই, গ্রিসসহ অন্যান্য দেশও আয়োজনের ঘাটতি রাখেনি নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে।
কেএফ/