শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

ফিরে দেখা ২০২১

নিয়ন্ত্রণহীন লুকাশেঙ্কো

বছরখানেক ধরেই পশ্চিমা সংবাদমাধ্যমের আলোচিত নাম আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। বেলারুশের বিতর্কিত এই প্রেসিডেন্ট ২০২১ সালে আবারও আলোচনায় এসেছেন বেলারুশ হয়ে ইউরোপে যাওয়া গ্যাস পাইপলাইন বন্ধ করার হুমকি দিয়ে।

নভেম্বরে বেলারুশ সীমান্ত থেকে কয়েক শ শরণার্থী পোল্যান্ডের দিকে যাওয়ার পর সংকট তীব্র হয়েছে। ইউরোপে ঢোকার প্রত্যাশায় পোল্যান্ড সীমান্তে অবস্থান করা কয়েক হাজার শরণার্থী এখন তীব্র ঠান্ডার মধ্যে খোলা আকাশের নিচে দিন কাটাচ্ছে। তাদের বেশিরভাগই ইরাক, সিরিয়া ও ইয়েমেন থেকে গেছে বলে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা যায়।

পোল্যান্ড ও তার মিত্রদের দাবি, রাশিয়ার ইন্ধনে বেলারুশ শরাণার্থীদের পোল্যান্ডে প্রবেশের জন্য উসকানি দিচ্ছে, যাদের অনেকে মধ্যপ্রাচ্যের নাগরিক। বেশিরভাগের সঙ্গেই কনকনে শীতের হাত থেকে বাঁচার কাপড়টুকুও ছিল না। বেলারুশ-পোল্যান্ড সীমান্তে অন্তত ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে রয়েছে শিশু।

পোল্যান্ড সীমান্তে মানবিক সংকটের জন্য বেলারুশকে দায়ী করে নিষেধাজ্ঞা দিলে এর পাল্টায় মিনস্কও ইউরোপে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিতে পারে বলে হুমকি দিয়েছেন আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো। গত ১১ অক্টোবর তিনি বলেন, ‘ইউরোপ যদি আমাদের ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাহলে আমরাও জবাব দেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমরা ইউরোপকে গরম রাখি, আর তারা আমাদের হুমকি দেয়। এখন আমরা যদি প্রাকৃতিক গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দিই? সেজন্যই পোল্যান্ড, লিথুনিয়ার নেতা ও অন্যান্য নির্বোধদের বলতে চাই–ভেবে তারপর কথা বলবে।’
৩০ নভেম্বর লুকাশেঙ্কো বলেন, পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটো যদি পোল্যান্ডে অ্যান্টি-মিসাইল ব্যবস্থা স্থাপন করে, তাহলে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কাছে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র চাইবেন।

বিশ্লেষকদের মতে, রাষ্ট্রীয় বাহিনী নামিয়ে ভিন্নমত দমন ও প্রশ্নবিদ্ধ ভোটে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে আলেক্সান্ডার লুকাশেঙ্কো ইউরোপে নব্য স্বৈরতন্ত্রের জন্ম দিয়েছেন। তাকে ইউরোপের গণতন্ত্রের জন্য হুমকি মনে করা হচ্ছে। এ কারণে পশ্চিমাদের কাছে লুকাশেঙ্কো করোনাভাইরাস থেকে কোনো অংশে কম আলোচিত বা তাৎপর্যপূর্ণ নন। এখন এর সঙ্গে যুক্ত হলো সীমান্ত ও শরণার্থী ইস্যু। কিছুদিন আগে বিমান ছিনতাই করে সাংবাদিক গ্রেপ্তার এবং এতে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ যুদ্ধের সংগঠন হামাসের কথিত বোমা হামলার অজুহাত তুলে তিনি আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে ছিলেন।

লুকাশেঙ্কোর শত্রু মিডিয়া

গত ২৩ মে সমাজকর্মী ও সরকারবিরোধী সাংবাদিক রোমান প্রোতেসেভিচকে গ্রেপ্তার করতে গ্রিস থেকে লিথুয়ানিয়ার উদ্দেশে পাড়ি দেওয়া রায়ান এয়ারের একটি বিমানের গতিপথ ঘুরিয়ে রাজধানী মিনস্কে নামতে বাধ্য করে বেলারুশ সরকার। আকাশ থেকে বিমান নামানোর কারণ হিসেবে ‘হামাসের বোমা হামলার হুমকি’ ছিল বলে দাবি করে বেলারুশ কর্তৃপক্ষ।

রায়ানএয়ার বলেছে, বিমানে তল্লাশি চালিয়ে কিছুই পাওয়া যায়নি। পাঁচ ঘণ্টা পর বিমানবন্দর ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়। তবে তার আগে অভ্যুত্থান প্রচেষ্টার অভিযোগ তুলে রোমান প্রোতেসেভিচ ও তার রুশ বান্ধবী সোফিয়া সাপিগাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপর থেকেই ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্রসহ আন্তর্জাতিক মহলের তীব্র নিন্দার মুখে পড়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। বেলারুশের বিরুদ্ধে ‘রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের’ অভিযোগ তুলে শাস্তি দাবি করেছে তারা।

ইউরোপ-আমেরিকায় যখন নিন্দার ঝড় বইছে, তখন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট তাঁর কৃতকর্মের সাফাই দিয়েছেন। দাবি করেন, তিনি বেলারুশের জনগণকে সুরক্ষিত রাখার জন্য আন্তর্জাতিক আইনের অধীনেই এ কাজ করেছেন। সংসদে দেওয়া ভাষণে লুকাশেঙ্কো বলেন, ‘যেমনটি আমরা আভাস দিয়েছিলাম, আমাদের যারা ক্ষতি চায়, দেশের বাইরে থেকে ও দেশের ভেতর থেকেও তারা আমাদের রাষ্ট্রের উপর আক্রমণের পদ্ধতি পাল্টেছে।’

মিনস্ক বিমানবন্দরে আটকের পর গত ২৪ মে প্রথমবারের মতো ওই সাংবাদিকের একটি ভিডিও প্রকাশ করে বেলারুশ কর্তৃপক্ষ। এতে রোমান প্রোতেসেভিচ বলেছেন, তার স্বাস্থ্য ভালো রয়েছে। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রপক্ষের আনা অভিযোগ স্বীকার করতেও দেখা গেছে। তবে দেশটির প্রধান বিরোধীদলীয় নেতাসহ অ্যাক্টিভিস্টরা ভিডিওটির সমালোচনা করে বলেছেন, চাপের মুখে রোমানকে স্বীকারোক্তি দিতে বাধ্য করা হয়েছে।

লিথুয়ানিয়ায় নির্বাসিত বেলারুশের বিরোধী নেতা সভেৎলানা টিখানোভসকিয়া জানান, লুকাশেঙ্কো সরকার ২৬ বছর বয়সী রোমান প্রোতেসেভিচের বিরুদ্ধে ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ আনার পর ২০১৯ সালে দেশ ছাড়েন তিনি। এরপর নেক্সটা মিডিয়ার মাধ্যমে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের খবর প্রকাশ করেন। ওই নির্বাচন ও তার পরবর্তী সময়ে বেলারুশের বিরোধীদের পক্ষে বড় ভূমিকা রেখেছিল নেক্সটা মিডিয়া। টেলিগ্রাম চ্যানেলের পাশাপাশি টুইটার ও ইউটিউবে তাদের খবর প্রকাশিত হয়। বেলারুশ কর্তৃপক্ষ প্রোতেসেভিচকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসেবে চিহ্নিত করায় দেশে তার মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে বলে সতর্ক করেছেন সভেৎলানা।

পোলিশ সম্প্রচারমাধ্যম টিভিএনে প্রোতেসেভিচের মা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে আকুল আবেদন জানিয়ে বলেছেন, ‘দয়া করে উঠে দাঁড়ান, সাহায্য করুন। আমি আপনাদের কাছে এই কাকুতি-মিনতি করছি–কারণ, তারা ওকে মেরে ফেলবে।’

বেলারুশের মিডিয়া সম্পর্কে মিডিয়া বিশ্লেষক নিকিতা কাপ্লেংকো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘বেলারুশের পুরো মিডিয়া লুকাশেঙ্কোর পকেটে। তবুও টেলিগ্রাম নামের ফ্রি অ্যাপে চ্যানেল চালানো এক যুবক তার পুরো প্রোপাগান্ডা ইন্ডাস্ট্রির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি! কার্যত এর মধ্য দিয়েই বুঝা সম্ভব, কেন স্বৈরশাসকরা মিডিয়া নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়; আর কেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম তাদের জন্য হুমকি।’

স্বৈরতন্ত্রের ভিত্তি গড়েছে যে নির্বাচন

১৯৯১ সালের ২৫ আগস্ট সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে বেলারুশ পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। গণতন্ত্র ও মুক্তবাজার অর্থনীতির নামে দেশটিতে অসন্তোষ প্রথম থেকেই তৈরি হয়। ১৯৯৪ সালে সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে সেখানে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সোভিয়েতকালে লুকাশেঙ্কো ছিলেন অন্যতম সফল সামরিক কর্মকর্তা। নির্বাচনে তিনি একচেটিয়া পুঁজিবাদ ও সমাজতন্ত্রের মাঝামাঝি একটি জনকল্যাণকর গণতন্ত্রের প্রচারণা সামনে আনেন। বেলারুশের জনগণের মুক্তবাজার অর্থনীতির প্রতি আস্থা ছিল না; আবার সমাজতন্ত্রের নামে সোভিয়েতকালের শেষের দিকে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়, সেটিও তাদের মনে গেঁথে ছিল। এ কারণে লুকাশেঙ্কোর প্রতি জনগণের আস্থা তৈরি হয়। বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে ১৯৯৪ সালের ২০ জুলাই পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন লুকাশেঙ্কো।

গণতান্ত্রিকভাবে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ক্ষমতায় আসীন হলেও তাকে বেলারুশ থেকে ‘গণতন্ত্রকে মুছে ফেলার কুশীলব’ বলে মনে করেন অনেকেই। অনেক স্বৈরতান্ত্রিক শাসকদের মতো লুকাশেঙ্কোর শাসন কাঠামোর মূল ভিত্তিও তথাকথিত উন্নয়ন। পূর্ব ইউরোপের অন্য দেশের তুলনায় বেলারুশের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো অনেক গোছানো। অবকাঠামোগত উন্নয়নের মধ্য দিয়ে ২৭ বছরের শাসনে দেশটির প্রত্যন্ত অঞ্চলকেও মূলধারায় এনে যুক্ত করেছেন লুকাশেঙ্কো। নাগরিক সুবিধার দিক থেকেও অগ্রগতি হয়েছে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে। যা দেশটির অর্থনৈতিক অগ্রগতিতেও ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। তবে দেশটির সাধারণ মানুষের আয় মাসে ৮০ থেকে ১৩৩ ইউরো। যদিও লুকাশেঙ্কোর দাবি, বেলারুশের সাধারণ মানুষের আয় ৪৫০ ইউরোর উপরে।

বেলারুশের লিথুয়ানিয়াভিত্তিক সাংবাদিক তানিয়া হেনডেল বলেন, ‘ক্ষমতা গ্রহণের পর সম্পূর্ণ ভিন্ন এক চরিত্রের লুকাশেঙ্কোকে আমরা দেখতে পাই। দেশের সংবিধানকে তিনি সম্পূর্ণ নিজের মর্জি মতো সাজিয়েছেন। যে স্বপ্ন নিয়ে আমরা সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করেছিলাম, আমাদের সে স্বপ্নকে তিনি পুরোপুরি ধুলোয় মিশিয়ে দিয়েছেন। কার্যত তিনি আবারও বেলারুশকে রাশিয়ার স্যাটেলাইট রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। সর্বত্রই রাশিয়ার প্রভাব। আমাদের অর্জন কেবলমাত্র একটি পাসপোর্ট। আমরা স্বাধীন রাষ্ট্র, তবে সেটি কেবল নামে। বাস্তবে আমরা রাশিয়ার একটি উপনিবেশ হিসেবে বসবাস করছি।’

তানিয়া আরও বলেন, ‘জাতিগতভাবে আমরা বেলারুশিয়ান। আমাদের নিজস্ব ভাষা রয়েছে; কিন্তু এখনো স্কুল-কলেজে আমাদের ভাষা সেভাবে শেখানো হয় না। স্বাধীনভাবে আমাদের ভাষা চর্চা করতে পারি না। আমাদের দেশে রুশ ভাষার প্রভাব অনেক বেশি। আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতিকে রাশিয়া অনেকটা ধ্বংস করে দিয়েছে। লুকাশেঙ্কো এতো কিছু দেখার পরও কিছু বলেন না। কেননা, রাশিয়ার সমর্থন ছাড়া তিনি কখনোই এ পর্যায়ে আসতে পারতেন না।’

অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে নতুন করে যেভাবে রাশিয়া আবার আধিপত্য বিস্তার করতে শুরু করেছে, সেটি সম্ভব হতো না যদি না ভ্লাদিমির পুতিন একজন লুকাশেঙ্কোকে কাছে না পেতেন। এ কারণে পুতিন প্রশাসনের সবচেয়ে বিশ্বস্ত মানুষ হিসেবে বিবেচনা করা হয় লুকাশেঙ্কোকে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এত উন্নয়নের জাঁকজমকের মাঝে বেলারুশিয়ানরা হারিয়েছেন তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, এমনকি ভোটের অধিকার। ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে অন্য স্বৈরশাসকদের মতো তিনিও বেলারুশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছেন বলে অভিযোগ বিশ্লেষকদের। নির্বাচনী ব্যবস্থা, সেনাবাহিনী থেকে শুরু করে গণমাধ্যম–রাষ্ট্রের যাবতীয় প্রতিষ্ঠান তার অধীন। রাষ্ট্রীয় বাহিনীকে তিনি নিজস্ব পাহারাদারে পরিণত করেছেন। দেশটিতে কে কি করবে, না করবে প্রায় সবকিছুই এখন লুকাশেঙ্কো নির্ধারণ করে দেন। সেই সঙ্গে রয়েছে ভয়াবহ দুর্নীতি।

২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিরোধী নেতা ভিক্টর বাবারিকাকে এক আদালত ১৪ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে এই ব্যাংকারকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ওয়াশিংটনভিত্তিক সাংবাদিক নাতালিয়া আন্তোনোভা ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনে প্রকাশিত ‘লুকাশেঙ্কোর কোনো সীমা নেই’ শীর্ষক এক কলামে লিখেছেন, যদি কেউ তার অপশাসনের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলে, তাহলে তাকে নির্মম পরিণতি ভোগ করতে হয়। নির্যাতন, গ্রেপ্তার, ধর্ষণ, খুন, গুম–এসবই লুকাশেঙ্কো সরকার আন্দোলনকারীদের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছে। আর লুকাশেঙ্কো এখন সব নিয়ন্ত্রণের বাইরে।


এসএ/

Header Ad

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

২৪ এর গনঅভূ্থানে ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা, সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের মেধাবী শিক্ষার্থী, শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে যান বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন।

এ সময় মোবাইল ফোনে লাউডস্পিকারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা.শফিকুর রহমান বলেন, আব্দুল্লাহ দেশের জন্য মানুষের জন্য মানবতার কল্যাণের জন্য জীবনকে উৎস্বর্গ করে আল্লাহর দরবারে চলে গেছেন, আল্লাহ তাকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন। শহীদরা মরে না। তারা আল্লাহর জীম্মায় জীবন্ত থাকে। এ সময় শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করেন তিনি।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) দুপুর ১২ টার দিকে যশোরের বেনাপোল পোর্ট থানার বড় আঁচড়া গ্রামে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন আব্দুল্লাহর বাড়িতে গিয়ে শোকসন্তপ্ত পরিবারের খোঁজ খবর নেন,কবর জিয়ারত করেন এবং তার রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করেন।

এর আগে তিনি নাভারণ দারুল আমান ট্রাষ্টে ওলামা সম্মেলনে যোগদান করেন। পরে ২০১৬ সালে গুম হওয়া ইসলামি ছাত্র শিবিরে নেতা রেজোয়ানের বাড়িতে যান এবং খোঁজ খবর ও সমবেদনা জানান।

এসময় তিনি জানান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মৃত্যু বরনকারী সকলে ন্যায় বিচার পাবেন বলে পরিবারের সদস্যদের সান্তনা দেন। এবং গনঅভূ্থানে নিহত সকল পরিবারের সাথে বাংলাদেশ জামায়াত ইসলাম আছে থাকবে।

এসময় উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় কর্ম পরিষদ সদস্য মাওলানা আজিজুর রহমান, যশোরের জেলা আমীর অধ্যক্ষ মাওলানা গোলাম রসূল, সাবেক জেলা আমীর মাওলানা হাবীবুর রহমান, জেলা জামায়াতের নেতা মাওলানা আবু জাফর, মাওঃ শিহাব উদ্দিন শার্শা থানা আমীর রেজাউল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা ইউসুফ আলী ও ঝিকরগাছা থানা আমীর মাওলানা আসাদুল আলম প্রমূখ।

Header Ad

বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

দিনাজপুরের বিরামপুরে বিশনি পাহান (৫৫) নামের এক আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।

শনিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের ময়না মোড় এলাকার ধানক্ষেত থেকে ওই নারীর হাতবাঁধা লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত বিশনি পাহান উপজেলার কাটলা ইউনিয়নের বেণুপুর গ্রামের সাধন পাহানের মেয়ে।

নিহতের ভাই চরকা পাহান বলেন, আমার ছোট বোনের স্বামী বিশনি পাহানকে ছেড়ে চলে গেছেন। সে প্রতিরাতেই নেশা করতো। বাবা মারা যাওয়ার পর থেকেই আমার বাড়িতে থাকতো আমার বোন। আমার বোন এলাকায় মানুষের জমিতে কৃষি কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতো। শুক্রবার বিকেলে এলাকার এক ব্যক্তির জমিতে ধান কাটার কাজ শেষ করে আর বাড়িতে ফেরেননি। রাতে অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে কোথাও পাওয়া যায়নি। শনিবার সকালে ধানক্ষেতে হাতবাঁধা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়।

বিরামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক জানান, এলাকাবাসীর দেওয়া খবরে ঘটনাস্থল থেকে আদিবাসী এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা যাচ্ছে তাকে কে বা কাহারা হত্যা করেছে। তদন্ত করলেই প্রকৃত ঘটনা বেরিয়ে আসবে।

Header Ad

বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান

ছবি: ঢাকাপ্রকাশ

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, বিএনপির কাঁধে এখন অনেক দ্বায়িত্ব। এদেশের মানুষের অনেক প্রত্যাশা, আকাঙ্ক্ষা বিএনপি কে নিয়ে।  সুতারাং দেশের মানুষের আকাঙ্খা অনুযায়ী নেতা-কর্মীদের আচরন করতে হবে। তৈরী হতে হবে।

চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি আরো বলেন,  অন্তবর্তী সরকারকে বুঝতে হবে জনগন কি চায়। সংস্কার একটি চলমান প্রক্রিয়া। সব সংস্কার অন্তবর্তী সরকারের দ্বারা সম্ভব নয়। তারা একটি অবাধ সুষ্ঠ নির্বাচনের আয়োজন করে জনগণের সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। তারপর নির্বাচিত সরকার বাকী সংস্কার করবে।

এ সময় দ্রুত নির্বাচনের দেয়ার  দাবী জানান তারেক রহমান। 

বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘদিন পর বিপুল উৎসাহ ও উদ্দীপনা এবং আনন্দ মুখর পরিবেশে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সম্মেলন-২০২৪ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার বেলা সাড়ে ১০ টার সময় স্থানীয় টাউন ফুটবল মাঠে আনুষ্ঠানিক ভাবে সম্মেলনের উদ্বোধন করতে যেয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, এদেশে ফ্যাসিবাদের জনক শেখ মুজিবুর রহমান। তার হাত ধরেই অর্থাৎ তার নেতৃত্বেই এদেশে হত্যা, লুণ্ঠন, এবং অপরাজনীতি শুরু হয়। যুদ্ধ বিধ্বস্ত নতুন বাংলাদেশে গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বদলে গনতন্ত্র হত্যা করে সকল দলকে নিষিদ্ধ করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশে একটি রুদ্ধশ্বাস পরিস্থিতির সৃষ্টি করে মানুষের কথা বলার অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে একটি বদ্ধ কারাগারে পরিণত করা হয়েছিল।

এসময় তিনি আরও বলেন, ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবের উত্তরসূরী ফ্যাসিবাদের চুড়ান্ত বাস্তবায়নকারী শেখ হাসিনা গত ১৭ বছর এদেশের জনগণের ঘাড়ে অবৈধভাবে চেপে বসে আমাদের প্রিয় মাতৃভূমিকে অবরুদ্ধ করে অসংখ্য খুন গুম ব্যাংক লুট এবং অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করছিল। হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে বাংলাদেশকে দেউলিয়া এবং চরম দারিদ্র্যের শেষ সীমায় পৌঁছে দিয়ে গেছে।

মির্জা ফখরুল দ্রুততম সময়ের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন দাবি করে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, দেশকে দেশি ও বিদেশি চক্রান্তের মোকাবেলা করে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করতে হবে। আর এটা করতে হলে অবিলম্বে দেশে একটি অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দরকার।

শুরুতে সম্মেলনের উদ্বোধক বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, অন্যান্য নেতৃবৃন্দকে সাথে নিয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন। পবিত্র কোরআন ও গীতা পাঠ করা হয়। এরপরে সম্মেলনের উদ্বোধক সহ আমন্ত্রিত অতিথিদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেয়া হয়। বিগত দিনে জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা কর্মীদের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন জেলা বিএনপি নেতা ওয়াহেদুজ্জামান বুলা। সম্মেলনে ভার্চুয়ালী যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।

সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু। বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-সভাপতি শামসুজ্জামান দুদু, এড.নিতাই রায় চৌধুরী, বিএনপির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল, খুলনা বিভাগীয় সহ সভাপতি বাবু জয়ন্ত কুমার কুণ্ডু, বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য, কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, মেহেরপুর জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ মাসুদ অরুন, ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মজিদ, সাংগঠনিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন খন্দকার আব্দুল জব্বার সোনা, বক্তব্য রাখেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব শরীফুজ্জামান, শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহজাহান খান, সাধারণ সম্পাদক মোমিন মালিথা, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক আবু তালহা, জেলা জাসাসের সভাপতি সেলিমুল হাবিব, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রশিদ ঝন্টু, জেলা কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক তবারক হোসেন, জেলা মৎস্যজীবী দলের সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান বাবলু, জেলা মহিলা দলের সভানেত্রী রউফুন নাহার রিনা, জেলা শ্রমিকদলের সভাপতি এম জেনারেল ইসলাম, জেলা বিএনপি নেতা সিরাজুল ইসলাম মনি, দর্শনা থানা বিএনপির সভাপতি খাজা আবুল হাসনাত, জীবননগর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আনোয়ার হোসেন খাঁন খোকন, সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান কবির, আলমডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান পিন্টু, সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম রোকন, দামুড়হুদা উপজেলা বিএনপির সভাপতি মনিরুজ্জামান মনির, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান লিপ্টন, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মিলিমা ইসলাম বিশ্বাস মিলি, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি মির্জা ফরিদুল ইসলাম শিপলু প্রমুখ।

সম্মেলনের একপর্যায়ে জেলার বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা যারা ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আমলে নিহত হয়েছেন তাদের পরিবারের হাতে তারেক রহমানের পক্ষে উপহার সামগ্রী তুলে দেয়া হয়। 

সম্মেলনে একমাত্র প্রার্থী হিসাবে আহ্বায়ক মাহমুদ হাসান খান বাবু ইতিমধ্যেই চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হয়েছেন। সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে একাধিক প্রার্থী থাকায় আজকের সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে ৮০৮ জন কাউন্সিলর তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

শহীদ আব্দুল্লাহর বাড়িতে জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মোবারক হোসেন
বিরামপুরে আদিবাসী নারীর লাশ উদ্ধার
বিএনপির কাঁধে অনেক দ্বায়িত্ব: তারেক রহমান
'জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন হওয়া উচিত'- তোফায়েল আহমেদ
৩ মাসে জ্বালানি খাতে সাশ্রয় হয়েছে ৩৭০ কোটি টাকা : জ্বালানি উপদেষ্টা
জুটি বাধলেন মিঠুন চক্রবর্তী-আফসানা মিমি
দেশ ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠায় দ্রুত নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই : তারেক রহমান
২৪ ঘণ্টার মধ্যে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপের আশঙ্কা
অক্টোবরে সড়কে প্রাণ গেছে ৪৭৫ জনের
গায়ানায় দলের সঙ্গে যোগ দিলেন সাকিব
আইপিএল নিলামের আগেই নিষিদ্ধ হলেন ভারতের ২ ক্রিকেটার
গাজীপুরে পিকনিকের বাসে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে ৩ শিক্ষার্থীর মৃত্যু
কবে বিয়ে করবেন জানালেন তামান্না ভাটিয়া
পঞ্চগড়ে ৫০০ টাকায় সন্তান বিক্রি, অতঃপর যা ঘটল...
অ্যান্টিগায় প্রথম দিন শেষে স্বস্তিতে টাইগাররা
সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারালেন পরীমণির প্রথম স্বামী
বিচারের আগে আ.লীগের মাঠে থাকার সুযোগ নেই: উপদেষ্টা নাহিদ
মাকে হত্যার পর থানায় হাজির ছেলে
৮ ক্রিকেটারসহ ৯ জনকে নিষিদ্ধ করলো বিসিবি
উপদেষ্টাদের যাচ্ছেতাই কর্মকাণ্ড মেনে নেওয়া হবে না: রিজভী