বিয়ে বিচ্ছেদে ৬ হাজার কোটি টাকা পাচ্ছেন দুবাই শাসকের স্ত্রী
দুবাইয়ের কোটিপতি শাসক শেখ মোহাম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম ও তার সর্বকনিষ্ঠ স্ত্রী প্রিন্সেস হায়া বিনত আল-হুসেইনের বিয়ে বিচ্ছেদের এক আলোচিত মামলার রায় হয়েছে। এতে প্রিন্সেস হায়া সব মিলিয়ে ৫০ কোটি পাউন্ডের সমপরিমাণ অর্থ পাবেন। বাংলাদেশি টাকায় যা প্রায় ছয় হাজার কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) জর্ডানের সাবেক রাজা হুসেইনের কন্যা ৪৭ বছর বয়সী প্রিন্সেস হায়াকে এককালীন ২৫ কোটি ১৫ লাখ পাউন্ড দেওয়ার আদেশ দিয়েছে যুক্তরাজ্যের এক আদালত। তিনি শেখ মোহাম্মদের ষষ্ঠ এবং কনিষ্ঠতম স্ত্রী। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এ খবর জানিয়েছে।
শেখ মোহাম্মদ শুধু দুবাইয়ের ধনাঢ্য শাসক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রীই নন, তিনি ঘোড়দৌড়ের জগতেও রেসের ঘোড়ার একজন প্রভাবশালী মালিক।
প্রিন্সেস হায়া ২০১৯ সালে তার দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ব্রিটেনে পালিয়ে যান। তার দাবি, শেখ মোহাম্মদ এর আগে তার দুই মেয়ে শেখ লতিফা ও শেখ শামসাকে অপহরণ করিয়েছেন, ফলে তিনি এখন তার নিজের জীবন নিয়ে আশঙ্কার মধ্যে আছেন।
প্রিন্সেস হায়া তার এক ব্রিটিশ দেহরক্ষী সাবেক সেনা কর্মকর্তার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছেন বলে জানার পর শেখ মোহাম্মদ ‘তুমি বেঁচে ছিলে, তুমি মরে গেছ’ নামে একটি কবিতা প্রকাশ করেন। যাতে তাকে হুমকি দেওয়া হয় বলে অনুমান করা হয়। ব্রিটেনে আসার পরও তিনি হুমকি পেয়েছেন বলে দাবি করেন।
আদালত রায় দিয়েছে, দুবাইয়ের এই শাসকের ঘরে প্রিন্সেস হায়ার দুই সন্তানের প্রত্যেককে প্রতিবছর ৫৬ লাখ পাউণ্ড দিতে হবে, এবং তা ২৯ কোটি পাউন্ডের একটি গ্যারান্টি দিয়ে সুরক্ষিত করা থাকবে। এই দুই সন্তানের মধ্যে এক কন্যার বয়স ১৪ বছর এবং পুত্রের বয়স নয় বছর।
প্রিন্সেস হায়ার ব্রিটেনে দামি দুটি বাড়ি রয়েছে এবং এগুলো রক্ষণাবেক্ষণের খরচের কথাও রায়ে রয়েছে। এ বাড়িগুলোর একটি লন্ডনের কেনসিংটন প্রাসাদের পাশে এবং অপরটি সারে কাউন্টির এগহ্যামে।
এ ছাড়া রায়ে প্রিন্সেসের নিরাপত্তার ব্যয়, ছুটি কাটানোর খরচ, একজন নার্স ও আয়ার বেতন ও আবাসনের খরচ, পরিবারের জন্য বুলেটপ্রুফ গাড়ি এবং তার পালিত ঘোড়া ও অন্যান্য প্রাণীর খরচ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
যুক্তরাজ্যের আইনি জগতের ইতিহাসে একে বলা হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিবাহবিচ্ছেদের মামলা।
এ বছর হাইকোর্ট এক রুলিংয়ে বলেছে, শেখ মোহাম্মদ অবৈধভাবে প্রিন্সেস হায়া তার দেহরক্ষী এবং আইনজীবী দলের ফোন হ্যাক করিয়েছিলেন। এ জন্য ইসরায়েলি স্পাইওয়্যার পেগাসাস ব্যবহার করা হয়।
তবে শেখ মোহাম্মদ এ কথা অস্বীকার করে জানান, তার কাছে কোনো হ্যাক করার যন্ত্র বা এ থেকে পাওয়া তথ্য নেই এবং তার অনুমোদন নিয়ে কোনো নজরদারি চালানো হয়নি। প্রিন্সেসের কোনো ক্ষতি করার ইচ্ছে তার নেই বলেও তিনি দাবি করেন।
এসএ/