মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৫ | ১৫ বৈশাখ ১৪৩২
Dhaka Prokash

১০ বছরের শাসনে নাগরিক চোখে 'অযোগ্য' কিম

২৭ বছর বয়সী কিম জং উন উত্তরসূরী হিসেবে উত্তর কোরিয়ার ক্ষমতায় আসেন, তাও ১০ বছর হলো। নেতা হিসেবে তিনি কেমন হবেন সে পরীক্ষা তাকে দিতে হয়নি। কিম জং ইলের পর তিনিই রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় আসবেন সেটা নির্ধারিতই ছিল। কিম জং উন তার ১০ বছরের শাসনকালে নানাভাবে হয়েছেন খবরের শিরোনাম। 

৬৯ বছর বয়সী কিম জং ইল মারা যান ২০১১ সালে। উত্তর কোরিয়ার মিডিয়া তার মৃত্যুর খবর প্রকাশ করে ১৯ ডিসেম্বর। ২৭ বছর বয়সেই তথাকথিত নেতা হিসেবেই পরিচিতি পান বিশ্ব জুড়ে। বিশ্বের বহু দেশের নেতা ভেবেছিলেন তিনি দেশকে সঠিকভাবে নেতৃত্ব দিতে পারবেন না। তবে এই ১০ বছরে কিম জং উন শুধু নিজের অবস্থানই শক্ত করেননি। 'কিম জং-ঐক্যবাদ' নামে নতুন এক যুগের সূচনা করেছেন।

ক্ষমতায় আসার পর কিম তার বিরোধীতা করা কয়েক শত মানুষকে হত্য করেছেন। পারমানবিক পরীক্ষা করিয়েছেন। শতাধিক ব্যালাস্টিক ক্ষেপনাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছেন। আর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আলোচনায় বসে বিশ্ব মিডিয়ার নজর কেড়েছেন। পারমানবিক অস্ত্রে বলীয়ান হওয়ার মূল্য এখন দিতে হচ্ছে উত্তর কোরিয়াকে, কোরিয়া এখন আগের চেয়ে বেশি গরীব আরও বেশি বিচ্ছিন্ন একটি রাষ্ট্রে পরিণত হয়েছে।

কিমকে নিয়ে যা বললেন তারা-

কিম জং ইল যেদিন মারা যান কিম জিউম-হিউক তখন ছাত্র ছিলেন। তিনি চীনে পড়ালেখা করতেন। উত্তর কোরিয়ার অভিজাত পরিবারের সন্তান তিনি। উত্তর কোরিয়ার অল্প কিছু ভাগ্যবানদের একজন, যিনি দেশের বাইরে পড়তে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। তিনি বলেন, যেদিন কিম জং ইল মারা যান, সেদিন তিনি পার্টি করেছিলেন। এ কাজের জন্য তার মৃত্যুও হতে পারতো। তিনি ভেবেছিলে কিম শাসনের অবসান হলো এবার। আর নতুন শাসক কিম জং উন যেহেতু ইউরোপে পড়ালেখা করেছেন। তাই তার দৃষ্টিভঙ্গী হবে আমাদের মতো। আমি ভেবেছিলাম নতুন যুগের সূচনা হবে উত্তর কোরিয়ায়। চীন বিশ্ব সম্পর্কে আমার চোখ খুলে দিয়েছে।

কিম জিউম-হিউক আরও বলেন, তবে চীনে থাকাকালীন দেশ সম্পর্কে বিশ্ব মিডিয়া, ইন্টারনেটে যে সব তথ্য পেয়েছি, তাতে আমার বিশ্বাস ছিলো পশ্চিমার মিথ্যা বলছে। তবে আমার বিশ্বাস ভঙ্গ হয়, দেশে ফিরে এসে, আমার দেশের ২৫ মিলিয়ন মানুষ জানে না বিশ্ব তাদের সম্পর্কে কীভাবছে। উত্তর কোরিয়ার মানুষ এভাবেই নিজ দেশে অবরুদ্ধ। এদেশের মানুষকে শেখানো হয়েছে,তাদের নেতা প্রতিভাবান, বিশ্বস্ততা পাওয়া যোগ্য।

উত্তর কোরিয়ায় এ কথাও ফিসফিসিয়ে লোকমুখে শোনা যায় যে, কিম জং উন যোগ্য উত্তরসূরী নন, তিনি বিশেষভাবে সুবিধাপ্রাপ্ত; বলেছেন উত্তর কোরিয়ার সাবেক কুয়েত বিষয়ক রাষ্ট্রদূত রিউ হিউর-উ। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ানরা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে উত্তরাধিকারের শাসন দেখতে দেখতে। বিশেষ করে অভিজাতরা। তারা নতুন কিছু চাইছেন। কিমের পরিবার ১৯৪৮ সাল থেকে শাসন করে আসছে। নাগরিকদের শেখানো হয় যে, কিমের বংশের রক্তধারা পবিত্র, দেশ শাসনের জন্য উপযুক্ত, আমাদের এই প্রিয় দেশকে সঠিকভাবে শাসন একমাত্র এ বংশের রক্তই করতে পারবে। তিনি প্রশ্ন করেন, ২৭ বছর বয়সী একজন দেশ শাসন সম্পর্কে কিজানে? কিবুঝে?

২০১২ সালে নতুন নেতা উন দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে বলেন,'কোরিয়ানদের আর কখনওই শক্ত বাঁধনে বাঁধা হবে না।' দেশের মানুষ ভাবতে শুরু করলো, নতুন নেতা তাদের ভোগান্তির অবসান ঘটাবে। ১৯৯০ সাল থেকে উত্তর কোরিয়াতে দুর্ভিক্ষ চলছে, হাজার হাজার মুনুষ না খেয়ে মারা গেছে। খাদ্য ঘাটতি দূর করবে নতুন নেতা। খাদ্যের মজুদ বাড়াবে। এটা ছিলো একটি অসাধারণ মুহূর্ত; কথাগুলো বলেছেন পূর্ব-উপকূলীয় প্রদেশের গাড়ি চালক ইয়ু সিওং-জু। তিনি বলেন,পররাষ্ট্র কর্মকর্তাতের নির্দেশ দেয়া হয় বিদেশি বিনিয়োগ সৃষ্টির সুযোগ করে দিতে এবং দেশে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছিল। সুপার মার্কেটগুলোতে পণ্য সরবরাহ বেড়ে ছিলো। আমাদের দেশের পণ্যের মান চীনের পণ্যের থেকে সবদিক থেকে উন্নত ছিলো। আসলে এটা ছিলো আমাদের গর্বের। আমাদের অহংকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছিলো।

তবে সিংহাসনের জন্য যে বা যারা হুমকি স্বরূপ তাদের প্রতি কিমের সুনজর স্থায়ীত্ব পায়নি। চীন সীমান্ত এলাকার এক ব্যবাসায়ী চোয়ি না-রাই বলেন,যাদেরই কিম হুমকি মনে করেছেন তাকেই হত্যা করেছেন। তরুণ নেতা এভাবেই তার ক্ষমতা ধরে রেখেছেন। নিজের চাচাকেও সে ছাড় দেয়নি। কুকুরের চেয়েও খারাপ পরিণতি হয়েছে তার। উনের চাচা জ্যাং সং-থায়েক মিত্রদের নিয়ে উনের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গঠন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। তিনিই ছিলেন দেশ শাসন করার যোগ্য। তিনি যদি ক্ষমতায় আসতে পারতেন তবে দেশে অর্থনীতির ব্যাপক পরিবর্তন আসতো। যদিও আমরা যা ভাবছিলাম সেটা করা সহজ ছিলো না। তবে আমরা এমনটাই আশা করছিলাম। আর এমন কথা যখন প্রচার পেয়েছিলো তখনই চাচা জ্যাং সং-থায়েককে চরম পরিণতি ভোগ করতে হলো। দলের ঐক্যে ফাঁটল ধরিয়েছেন জ্যাং সং-থায়েক, এমন অভিযোগ এনে কিম ফাঁসিকে ঝুলিয়ে হত্যা করলেন চাচাকে।

কিমের নৃশংস হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে চীন সীমান্ত দিয়ে হাজার হাজার মানুষ পালিয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যেতে চেষ্টা করে। তারা শরনার্থী হয়ে সেখানে আশ্রয় নেওয়ার চেষ্টা করে। সেটা ঠেকাতে সীমান্তে পাহারা আরও জোরদার করে কিম। কাঁটা তারের বেড়া দেওয়া হয় সীমান্ত এলাকা ঘিরে। হা জিন-উ, তিনি একজন দালাল, উত্তর কোরিয়া থেকে ১০০ জনকে পালাতে সাহায্য করেছিলেন। তিনি বলেন,'সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো, যাকেই সীমান্ত পেরুতে দেখবে,দেখামাত্র গুলি করবে। তাদেরকে এ কাজের জন্য জবাবদিহি করতে হবে না। আমি প্রথম যখন এ কাজ শুরু করি তখন আমি খুব ভয় পাচ্ছিলাম। তবে আমি দায়িত্ব মনে করে আমার কাজটি করেছি, বলেন হা জিন-উ। আমি যখন ছোট ছিলাম তখন আমার মনে কেবলই প্রশ্ন আসতো আমি কেন এদেশে জন্ম নিলাম। একটা প্রাণির যে স্বাধীনতা আছে আমার সে স্বাধীনতা নেই। তাই আমি এ ঝুঁকি নিলাম। তবে পরিণতিতে আমাকে দেশ ছাড়তে হলো। আমার মাকে আটক করা হলো। তাকে জেলখানায় এমন নির্যাতন করা হলো যে, তিনি পক্ষাঘাত গ্রস্ত হয়ে পড়লেন। এ ঘটনা তাকে এখনও কষ্ট দেয়।

ভিন্নমতাদর্শী হয়েও কিম জং উন তার বাবার চেয়েও আরও বেশি গ্রহণযোগ্য আরও বেশি আধুনিক এবং বন্ধুত্বপূর্ণ মানসিকতা প্রমাণ করতে চেষ্টা করছিলেন। কিম রি সোল-জু নামে এক গায়িকাকে বিয়ে করেন। স্ত্রীকে সাথে নিয়ে তিনি বিভিন্ন শহর ও গ্রাম ঘুরে বেড়ালেন, স্ত্রীকে আলিঙ্গন করা থেকে ঘোড়ায় চড়া, রোলার কোস্টরে উঠছেন, প্রসাধনী কারখার পরিদর্শন করছেন, এসব ছবি প্রচার করেছেন কিম নিজেকে আধুনিক মানুষ হিসেবে দেখাতে। তবে দেশের সাধারণ নাগরিকের জন্য এ সবই ছিলো নিষিদ্ধ। ইউন মি-সু নামে একজন বলেন, আমি আধুনিক জীবন যাপন করতে চাই। আমি ট্রেন্ড ফলো করতে চাই। তবে আমাদের জন্য নিষিদ্ধ ছিলো। আমি জিন্স পরতে চাইতাম। অলঙ্কারও পরতে চাই। আমি তাই করলাম। কিন্ত দেশের আইন না মানার জন্য আমাকে তিরস্কার করা হলো জনসম্মুখে। আমাকে দোষী সাব্যস্ত করা হলো।

হিউন-ইয়ং একজন গায়ক বলেন, তাকে গান গাইতে হবে কিমের প্রশংসা করে। সে অস্বীকৃতি জানালো, আর সে কারণে তাকে বিচারের মুখোমুখি হতে হলো। তিনি আরও বলেন, একজন শিল্পী হিসেবে আমি যা করতে চাই তা কখনও করতে পারিনি। অনেক নিয়ম, কঠোর বিধি। কোরিয়ার একজন গায়ক হিসেবে আমি অনেক বেশি ভুক্তভোগী। সব কিছুই সরকার নিয়ন্ত্রণ করে। সব কিছুতে কঠোর নিয়ন্ত্রণ এটা প্রমাণ করে যে,তারা আত্মবিশ্বাসী নন। এমনকি তারা বিদেশী প্রভাবকেও ভয় পায়। শুধুমাত্র দক্ষিণ কোরিয়ার কে-পপ ভিডিও দেখার কারণে এই ১০ বছরে কমপক্ষে ১০ জনকে হত্যা করা হয়েছে। আর বিদেশি কোন কিছুর প্রভাবে কিম 'দুষ্টু ক্যান্সার' নাম দিয়েছেন।

প্রতিটি ক্ষেপনাস্ত্র পরীক্ষা আন্তর্জাতিক শিরোনাম হয়েছে। তবে দেশের মধ্যে গৌরব ধরে রাখতে পরেনি কিম। জনগণ বলে,তাদের রক্ত আর ঘাম শুষে এই পারমানবিক অস্ত্র বানানো হচ্ছে। এমনটাই বললেন উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়া চলে যাওয়া এক ব্যক্তি।

উত্তর কোরিয়া থেকে দক্ষিণ কোরিয়া চলে যাওয়া অপর এক ব্যক্তি বলেন,আমরা এটাকে বিজয় বলছি না। আমরা যা আয় করছি সেটা আমরা মিসাইল পরীক্ষায় ব্যায় করছি। তাই এ কাজকে 'ওয়াও' বলে বাহবা দিতে পারি না।

২০১৬ সালের দিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে রাষ্ট্রদূত রাইউকে নতুন নির্দেশ দেয়া হয়। তিনি বলেন, উত্তর কোরিয়ার কেন পারমানবিক অস্ত্র দরকার সে বিষয়ে ব্যাখা করতে এবং এটা এটাকে বৈধতা দিতে নির্দেশ দেয়া হয়। আশাকরা হয় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কোরিয়ার পারমানবিক পরীক্ষাকে স্বাভাবিকভাবে নিতে শুরু করতে। তবে যা ধারণা করা হয়েছিল, সে মতো কোন কিছুই হয়নি। উত্তর কোরিয়ার পারমানকিব পরীক্ষা নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের শেষ হয় কিম আর ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যকার বৈঠকের মধ্য দিয়ে বলে ধারণা করা হচ্ছি। এ বৈঠক ছিল একটি প্রদর্শনী মাত্র। সিঙ্গাপুরে বৈঠকে বসা দুই নেতার হ্যান্ডশেক করা ছবি ব্যাপক সাড়া ফেলে। গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পায়। তবে পারমানবিক অস্ত্র বৃদ্ধির যে পরিকল্পনা সেখানে কিম খুব সামান্যই সরে আসেন। ফলে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় কোরিয়ার ওপর।

উত্তর কোরিয়ার ব্যবসায়ী চোই না-রায়ে বলেন,ট্রাম্প আর কিমের ওই বৈঠক সম্পর্কে ব্যাখ্যার কিছু ছিলো না। ওই বৈঠক কিভাবে পরিস্থিতি উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাবে সে বিষয়ে কাল্পনিক কিছু ভাবা যেতে পারে আর কি। কোন চুক্তিই আর হলো না। উত্তর কোরিয়া কখনই পরমানু অস্ত্র সমৃদ্ধকরণ থেকে সরে আসবে না। উত্তর কোরিয়া মনে করে এ অঞ্চলে নিজের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে পরমানু অস্ত্রে সমৃদ্ধ হতে হবে।

জু সিওং নামে উত্তর কোরিয়ার এক গাড়ি চালক জানান, ২০২০ সালে প্রতিবেশি চীনে যখন কোভিড হানা দিলো। তখন উত্তর কোরিয়া সীমান্ত বন্ধ করে দিলো। শুধু সীমান্ত নয় ব্যবসাও বন্ধ রাখা হলো। কোরিয়ার ৮০ শতাংশেরও বেশি পণ্য চীন সীমান্ত দিয়ে আসে। ফলে দেশটি চরম সঙ্কটে পড়লো। খাদ্য সঙ্কট দেখা দিলো। অর্থনীতি সঙ্কুচিত হলো, জিনিসপত্রের দাম বাড়লো। পরিস্থিতি ক্রমান্বয়ে খারাপ হতে থাকলো। কিম জং উন এ পরিস্থিতিকে 'চরম দুর্দশা' বলে বর্ণনা করলেন।

কিম সাং-হিউ নামে সাবেক এক চিকিৎসক বলেন, বেশিভাগ ওষুধ কালোবাজারে চলে গেলো। বিদ্যুৎ সঙ্কটের কারণে অস্ত্রপচার করা কঠিন হয়ে পড়লো। চিকিৎসা সামগ্রীর চরম অভাব দেখা দিলো। কোভিড মোকাবেলায় প্রস্তুত ছিলো না উত্তর কোরিয়া। করোনায় জনস্বাস্থ্যের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা অজানা,যোগ করেন তিনি।

বর্তমানে চলতে থাকা পরিস্থিতি বিবেচনায় দক্ষিণ কোরিয়ায় চলে যাওয়া কিছু মানুষ এত বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছেন যে তারা অভ্যুত্থান চান। আদূর ভবিষ্যতেও উত্তর কোরিয়ায় অভ্যুথানের কোন সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না।কিম যুগের আবসানের যত ভবিষ্যৎ বাণী সবই মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে। কিমের পারিবারিক শাসন উল্লেখযোগ্যভাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। প্রায় ৭০ বছর ধরে বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন উত্তর কোরিয়া। এই প্রতিবেদন তৈরির সময় যাদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে তাদের প্রত্যেকেরই একই আশা, উত্তর কোরিয়া সীমান্ত খুলে দেবে, জনগণ স্বাধীনভাবে চলতে শিখবে, কারও কারও শুধু এতটুকুই প্রত্যাশা, তারা যেন তাদের পরিবারের সঙ্গে আবার মিলিত হতে পারেন।

কিম জং উনের শাসনকালে তারা কথা বলার অধিকার হারিয়েছে, গায়ক হায়ুন-হাঙ এমনটাই জানান। আমার নিজের জন্য গান করার অর্থ দাঁড়ায় আমি আমার জীবনের ঝুঁকি নিচ্ছি। যারা উত্তর কোরিয়া যারা ছাড়ছেন, তারা তাদের মনকে কবর দিয়ে তবেই দেশ ছাড়ছেন।

শাসনামলের ১০ বছর পালন করতে চলেছেন কিম, তার কাছে কয়েক ডজন পারমানবিক অস্ত্র আছে, তবে তার দেশের মানুষ রয়েছে অনাহারে। কিম তার আঙ্গুলের এক ইশারায় একজন মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করে দিতে পারেন। সে ক্ষমতা তার আছে। উত্তর কোরিয়ার ২৫ মিলিয়ন মানুষ বিশ্ব থেকে আগের চেয়েও বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন করছে। আর এ অবস্থা থেকে মুক্তির কোন আশা আদূর ভবিষ্যত দেখা যাচ্ছে না। এখানে যারা সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তাদের জীবন ঝুঁকির মুখে ছিলে, তারা দেশ ছেড়ে দক্ষিণ কোরিয়া বা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করছেন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি

কেএফ/জেডএকে

Header Ad
Header Ad

নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল

ছবি : ঢাকাপ্রকাশ

নওগাঁয় আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ৩ সক্রিয় সদস্যসহ ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এদের মধ্যে বাকি ৫ জন চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে ১টি অটো চার্জার ভ্যান এবং ১৯টি অটো চার্জার ভ্যানের ব্যাটারিসহ ১৫০ কেজি খুচরা যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়েছে।

রোববার (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহীর জেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে নওগাঁ জেলা পুলিশ কর্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) ফারজানা হোসেন এসব তথ্য জানান।

গ্রেপ্তারকৃত ডাকাত দলের সদস্যরা হলেন, জেলার পোরশা উপজেলার সোভাপুর গ্রামের মৃত আব্দুল হাকিমের ছেলে আব্দুল জব্বার (৪০) চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুর উপজেলার পাথরপূজার গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে নুরুজ্জামান (৪০) এবং নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ধবলডাঙ্গা গ্রামের ইব্রাহিমের ছেলে মোহাম্মদ সেলিম (৩০)।

গ্রেপ্তারকৃত চোরাই মালামাল ক্রয়-বিক্রয় চক্রের সদস্যরা হলেন, জেলার মান্দা উপজেলার উত্তর কাঞ্চন গ্রামের আলম খানের ছেলে শহিদ খান (৩৪) একই গ্রামের পরেশ আলী মৃধার ছেলে কাওছার আলী মৃধা (২৪), উপজেলার কালিকাপুর গ্রামের তমিজউদদীন মোল্লার ছেলে আব্দুল মতিন মোল্লা (৫০), কামারকুড়ি গ্রামের মৃত ময়েন উদ্দিনের ছেলে জিয়াউর রহমান (৪২) এবং শ্রীরামপুর গ্রামের মৃত সোলায়মান মন্ডলের ছেলে আজিজুল মন্ডল(৬৪)।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন বলেন, বুধবার (২৩ এপ্রিল) রাত অনুমানিক ৮ টার দিকে সাপাহার থানার নোচনাহার বাজার থেকে সাদিকুল ইসলাম (৩২) নামে এক অটো চার্জার ভ্যান চালক তার নিজের অটো চার্জার ভ্যান চালিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। ফেরার পথে সাপাহার থানাধীন ইলিমপুর মোড় হইতে হরিপুর বাজারগামী রোডে ইলিমপুর ব্রীজের নিকট পৌছাতেই রাস্তার পাশে ওৎপেতে থাকা ০৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি তার অটো চার্জার ভ্যান থামিয়ে তাকে ভ্যান থেকে টেনে নামায় এবং তার গলার চাকু ধরে হত্যার ভয় দেখিয়ে পাশের আম বাগানে নিয়ে এলোপাতাড়ি ভাবে মারপিট করে।

পরবর্তীতে তারা সাদিকুলের অটো চার্জার ভ্যানটি ছিনতাই করে নিয়ে যায়। অপর আরো একটি ঘটনায় একই ডাকাত দল গত শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৩ টার দিকে পোরশা থানার সরাইগাছি - আড্ডা আঞ্চলিক মহাসড়কের মশিদপুর এলাকায় এক অটো চার্জার ভ্যান চালককে আটক করে। তাকে এলোপাতাড়ি মারপিট করে হত্যার ভয় দেখিয়ে তার অটো চার্জার ভ্যান ছিনতাই করে নিয়ে যায়।

তিনি আরও বলেন, এই দুই ঘটনায় পোরশা এবং সাপাহার থানায় আলাদা দুইটি মমলা হয়। মামলার পর থেকেই পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবির) একটি বিশেষ টিম অভিযান অব্যাহত রাখে। গতকাল (২৭ এপ্রিল) নওগাঁ এবং রাজশাহী জেলার বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে ৩ জন ডাকাত এবং চোরাই ভ্যানের মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের সঙ্গে জড়িত এমন ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

ফারজানা হোসেন আরও বলেন, গ্রেফাতারকৃত ডাকাতদের মধ্যে মোহাম্মদ সেলিম (৩০) বহুল আলোচিত সাপাহার উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ হিল কাফি হত্যা মামলার অন্যতম প্রধান আসামী। সেলিমের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৮টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। এছাড়াও ডাকাত আব্দুল জব্বারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ১০ টি এবং ডাকাত নুরুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় ৪ টি চুরি এবং ডাকাতির মামলা রয়েছে। আসামীদের বিজ্ঞ আদালতের মাধ্যমে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড আবেদন করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার(ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) সুমন রঞ্জন সরকার জেলা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক (ওসি ডিবি) আব্দুল মান্নানসহ পুলিশের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Header Ad
Header Ad

নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল

বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

বলিউডের বর্ষীয়ান অভিনেতা পরেশ রাওয়াল সম্প্রতি এক বিস্ময়কর অভিজ্ঞতার কথা প্রকাশ করেছেন। ‘ঘাতক’ ছবির শুটিং চলাকালে হাঁটুর মারাত্মক আঘাতের পর দ্রুত সেরে ওঠার জন্য তিনি নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলে জানিয়েছেন।

রাকেশ পান্ডের সঙ্গে একটি দৃশ্যের শুটিং চলাকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আঘাতের পর পরিচালক তিন্নু আনন্দ ও অভিনেতা ড্যানি দেনজোংপা তাকে দ্রুত মুম্বাইয়ের নানাবতী হাসপাতালে নিয়ে যান।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নিজের ক্যারিয়ার নিয়ে গভীর উদ্বেগে ছিলেন পরেশ রাওয়াল। তখনই প্রয়াত অ্যাকশন ডিরেক্টর বীরু দেবগণ তাকে পরামর্শ দেন প্রতিদিন সকালে নিজের মূত্র পান করার জন্য। বীরু দেবগণের যুক্তি ছিল, বহু যোদ্ধা শরীরের দ্রুত আরোগ্যের জন্য এমন পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। পরেশ রাওয়াল সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে জানান, তিনি তখন এমন এক মানসিক অবস্থায় ছিলেন যে সুস্থতার জন্য যেকোনো কিছু করতে রাজি ছিলেন।

 

বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল। ছবি: সংগৃহীত

নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে টানা ৩০ দিন নিজের মূত্র পান করেন পরেশ। পরে চিকিৎসকরা তার স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে চমকপ্রদ ফলাফল পান। চিকিৎসকদের মতে, তার চোট সারাতে যেখানে আড়াই মাস সময় লাগার কথা ছিল, সেখানে তিনি মাত্র দেড় মাসেই পুরোপুরি সুস্থ হয়ে ওঠেন।

বর্তমানে পেশাগত জীবনেও ব্যস্ত সময় পার করছেন পরেশ রাওয়াল। শিগগিরই তিনি প্রিয়দর্শনের পরিচালনায় নির্মিত হরর-কমেডি 'ভূত বাংলা' ছবিতে অক্ষয়কুমার ও টাবুর সঙ্গে অভিনয় করবেন। পাশাপাশি ‘হেরা ফেরি ৩’-তেও পুরনো সহ-অভিনেতা অক্ষয়কুমার ও সুনীল শেঠির সঙ্গে আবার পর্দা ভাগ করবেন।

 

Header Ad
Header Ad

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ

নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে উল্লেখ করেছেন এনসিপির মূখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ।

সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে নিজের ভেরিফায়েড পেজে নাহিদ ইসলামের জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফেসবুক পোস্টে হাসনাত আব্দুল্লাহ লেখেন, "শুভ জন্মদিন। বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী নাহিদ ইসলাম।" তার এই মন্তব্য সামাজিক মাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

 

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় ডাকাত দলের ৩ সদস্যসহ ৮ জন গ্রেপ্তার, উদ্ধার লুণ্ঠিত মালামাল
নিজের মূত্র পান করেছিলেন বলিউড অভিনেতা পরেশ রাওয়াল
নাহিদ ইসলামকে বাংলাদেশের আগামীর প্রধানমন্ত্রী বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
কিছু লোডশেডিং না হলে ভর্তুকি বেড়ে যাবে: বিদ্যুৎ উপদেষ্টা
গণপিটুনির পর কারাগারে ইমামের মৃত্যু, গাজীপুরের পূবাইলে চাঞ্চল্য
ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ না পড়াতে লিগ্যাল নোটিশ
পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়ে ৭টি অস্ত্রবাহী বিমান পাঠালো তুরস্ক
বিএনপির ৩ সংগঠনের নতুন কর্মসূচি ঘোষণা
পাঁচ জেলায় বজ্রপাতে ১১ জনের মৃত্যু
জামিন পেলেন মডেল মেঘনা আলম
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান অধিদপ্তর গঠন করলো সরকার
নিরীহ কাউকে মামলা দিয়ে হয়রানি করা যাবে না: আইজিপি
পাকিস্তানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত: নিউইয়র্ক টাইমস
ঢাকায় অটোরিকশা ও চার্জিং স্টেশন বন্ধে ডিএনসিসির অভিযান শুরু হতে যাচ্ছে
চাঁদা না দিলে রেলের কমান্ড্যান্টকে বদলির হুমকির অভিযোগ দুই ছাত্র প্রতিনিধির বিরুদ্ধে (ভিডিও)
বলিউডে সেনারা হিরো, বাস্তবে কেন জিরো ভারতীয় বাহিনী!
কুমিল্লায় বজ্রপাতে স্কুলছাত্রসহ নিহত ৪
মে মাসে শেখ হাসিনার বিচার শুরু হচ্ছে: প্রধান উপদেষ্টা
ঢাকাসহ সারাদেশে বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে
সবাই মিলে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করাই লক্ষ্য: আলী রীয়াজ