শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

পুতিনের পাশে শি, প্রশ্নবিদ্ধ মার্কিন হুমকি

ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পর থেকে নজিরবিহীন নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়েছে রাশিয়া। আর এ অর্থনৈতিক সংকট থেকে উত্তরণের পথে রাশিয়া অনেকটাই নির্ভর করছে চীনের উপর। রাশিয়াকে সমর্থন ও আর্থিক সাহায্যের কথা আগেই নিশ্চিত করেছে চীন। চীন পাশে থাকলে যে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা কোনো কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে না, তা যুক্তরাষ্ট্রের অজানা নয়। এ বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে মার্কিন প্রশাসন। তাই হুমকি দেওয়ার পথে এগিয়েছে তারা। তবে বিশ্বের দুটি অন্যতম প্রধান পরাশক্তিকে দেওয়া হুমকি কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারবে, সেটিও প্রশ্নবিদ্ধ।

রাশিয়াকে একঘরে করার মার্কিন তৎপরতা হালে পানি পাবে বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞরা। আর এ ক্ষেত্রে পশ্চিমাদের সামনে সবচেয়ে বড় বাধা বিশ্বের সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ চীন। অর্থনৈতিক ব্যাপ্তিতে যা যুক্তরাষ্ট্রকেও ছাড়িয়ে গেছে। যে কোনো পরিস্থিতিতে রাশিয়াকে সমর্থন দেওয়ার কথা ইতিমধ্যে চীন জানিয়ে দিয়েছে। আর এতে নতুন বিশ্বব্যবস্থা গঠনের প্রশ্নটিও জোরালোভাবে সামনে এসেছে। এর আগে ২০১৪ সালে রাশিয়া যখন ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল মানচিত্রে যুক্ত করে নেয়, তখনও পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার ধার কমে গিয়েছিল চীনের সহযোগিতায়।

মার্কিন হুমকি

পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে এবার যুক্তরাষ্ট্র চীনকে সরসারি হুমকি দেওয়ার পথ নিয়েছে। ইতালির রাজধানী রোমে চীনের অন্যতম প্রভাবশালী কূটনীতিক ইয়াং জিয়েচির সঙ্গে এক বৈঠকের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের প্রধান জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান খোলাখুলি হুমকি দিয়েছেন–নিষেধাজ্ঞা ভেঙে রাশিয়াকে সাহায্যের চেষ্টা করলে চীনকে অবশ্যই এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘বেইজিংয়ের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে আমরা বলেছি, নিষেধাজ্ঞা ভাঙার বড় কোনো প্রয়াস দেখা গেলে অবশ্যই তার পরিণতি ভোগ করতে হবে। আমাদের দেওয়া নিষেধাজ্ঞা ভাঙার কোনো চেষ্টা বিশ্বের কোথাও আমরা সফল হতে দেব না।’

মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক পর্যায়ের বৈঠকটি সাত ঘণ্টা দীর্ঘ ছিল। দীর্ঘ এই বৈঠকে এই সময়ের নানা ইস্যু নিয়ে আলোচনা হয়েছে।

এদিকে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রোমের বৈঠকে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ এবং চীন-মার্কিন সম্পর্ক নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। তিনি বলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে যোগাযোগ উন্মুক্ত রাখার ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।

এর আগে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিএনএনের এক সাক্ষাৎকারে সুলিভান বলেছিলেন, চীন যদি রাশিয়াকে সমর্থন করে, তবে চীনকে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মধ্যে পড়তে হবে। এ ব্যাপারে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্র বেইজিংয়ের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক মার্কিন কর্মকর্তা বেশ একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, চীন রাশিয়াকে সামরিক সহায়তা দিতে ইচ্ছুক এমন ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।

তবে চীনা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র চীনের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকেও চীনের সামরিক সহায়তা চাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করা হয়েছে।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস সাংবাদিকদের জানান, ‘চীন কিংবা অন্য কোনো দেশ রাশিয়াকে সহায়তা করছে কি না, বিষয়টি আমরা গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছি এবং আমরা স্পষ্ট বলছি, প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে মস্কোকে সমর্থন করলে বেইজিংকে ফল ভোগ করতে হবে।’

সাংহাইতে বিবিসির সংবাদদাতা রবিন ব্রান্ট বলছেন রাশিয়া চীনের কাছে সাহায্য চাইছে এ কথা খোলাখুলি বলা আমেরিকার একটি কৌশল, যার উদ্দেশ্য চীনের উপর চাপ তৈরি করা। ‘যাতে চীনকে হয় অস্বীকার করতে হয় অথবা স্বীকার করতে হয়।’

দৃঢ়তার পরীক্ষায় চীন-রাশিয়া সম্পর্ক

গত দুই দশক ধরে চীন এবং রাশিয়ার কৌশলগত সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। পশ্চিমাদের সঙ্গে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার হুমকি প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং কীভাবে মোকাবিলা করবেন, এ নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে তাকে।

চীন এখন পর্যন্ত ইউক্রেনে হামলার জন্য রাশিয়ার সমালোচনা করেনি। একাধিকার বলেছে নিরাপত্তা নিয়ে রাশিয়ার উদ্বেগ বৈধ এবং তাকে বিবেচনায় নিতে হবে। নিরাপত্তা পরিষদে এবং পরে সাধারণ পরিষদের রাশিয়াকে নিন্দা করে আনা প্রস্তাবের পক্ষে তারা ভোট দেয়নি। তবে অনেক পশ্চিমা বিশ্লেষক এখন বলছেন ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক হামলায় ভেতরে ভেতরে চীন অস্বস্তিতে। কারণ নীতিগতভাবে কোনো দেশের ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন জানায় চীন, অথচ এই হামলা তার উল্টো। ইউক্রেনে মানবিক পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় এটি চীন জন্য উদ্বেগজনক বলে মনে করা হচ্ছে।

গবেষণা সংস্থা রোয়ি ইন্সটিটিউটের গবেষক রিচার্ড ম্যাকগ্রেগর ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানে প্রকাশিত এক বিশ্লেষণে বলেছেন, গত দু সপ্তাহে ধরে বেইজিংয়ের কাছ থেকে আসা শব্দ এবং বাক্যে যে পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে, তাতে বোঝা যায় চীন খুব ধীরে মস্কোর কাছ থেকে একটি দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করছে। বিশেষ করে ইউক্রেনের মানবিক পরিস্থিতি চীনকে অস্বস্তিতে ফেলছে। তবে বেইজিংয়ের মূল বার্তা এখনো অপরিবর্তিত–এই যুদ্ধের আসল দায় আমেরিকার। চীনা রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার মন্তব্যে তা খুবই স্পষ্ট।

চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপাত্র হিসাবে পরিচিত গ্লোবাল টাইমস প্রায় প্রতিদিনই ইউক্রেন যুদ্ধ সম্পর্কিত তাদের রিপোর্ট, মন্তব্য প্রতিবেদন বা সম্পাদকীয়তে ঘুরেফিরে এই সংকটের জন্য আমেরিকাকে দায়ী করছে। পত্রিকাটি রবিবার তাদের এক উপসম্পাদকীয়তে লিখেছে, ‘মস্কো, কিয়েভ, প্যারিস এবং বার্লিন যেখানে দুই পক্ষকে মুখোমুখি বসানোর জন্য কূটনৈতিক চেষ্টা করে চলেছে, তখন সেখানে ওয়াশিংটন ক্রমাগত অস্ত্র জুগিয়ে চলেছে যাতে সংঘাত অব্যাহত থাকে।’ যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনকে কীভাবে অস্ত্র যোগাচ্ছে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের সূত্রে তার একটি হিসাবও তুলে ধরা হয়েছে।

চীন ও রাশিয়ার মধ্যে যে ঘনিষ্ঠতা গড়ে উঠেছে তা ধরে রাখতে চীন উদগ্রীব, কারণ এর পেছনে আবেগ বা অন্য কোনো কিছুর চেয়ে রয়েছে বাস্তব স্বার্থ। চীনের জ্বালানি, খাদ্যশস্য এবং অস্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ জোগানদাতা রাশিয়া।

গবেষক রিচার্ড ম্যাকগ্রেগরের মতে, বিশ্বে, বিশেষ করে ইউরোপ এবং এশিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাব খাটো করার অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে দুই দেশেরই। তা ছাড়া যদি কখনো তাইওয়ান প্রশ্নে রাশিয়ার সমর্থন দরকার হয়, সেটিও চীনের অন্যতম একটি বিবেচনা।

তবে শি জিনপিং একটি ভারসাম্য রেখে চলার চেষ্টা করছেন। পুতিনের সরাসরি সমালোচনা তিনি হয়তো করছেন না, কিন্তু মানবিক দুরবস্থা লাঘবে ইউক্রেনে সাহায্য পাঠিয়েছেন। নিষেধাজ্ঞার নিন্দা করেছেন, কিন্তু ইঙ্গিত দিয়েছেন চীনা কোম্পানিগুলো নিষেধাজ্ঞা অমান্য করবে না।

গত ১৫ ডিসেম্বর (বুধবার) প্রায় ৯০ মিনিট ভিডিও কলে কথা বলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। রাশিয়া এবং চীনের সম্পর্ক আরও শক্তিশালী করার পাশাপাশি পশ্চিমা দেশগুলির বিরুদ্ধে সরব হন দুই নেতা। এরপর ইউক্রেন ইস্যুতে যখন গোটা বিশ্ব শঙ্কিত, তখন শীতকালীন অলিম্পিকের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অংশ নিতে চলতি মাসের শুরুতে চীন সফর করেন পুতিন। এ সফরে চীনে অতিরিক্ত ১০ বিলিয়ন কিউবিক মিটার প্রাকৃতিক গ্যাস রপ্তানি করার বিষয়টি নিশ্চিত করেন তিনি। যুক্তরাষ্ট্রের স্বেচ্ছাচারিতার মুখে আন্তর্জাতিক ন্যায্যতা ও ন্যায়বিচারের প্রশ্নে চীন ও রাশিয়ার অবস্থান এক বলে আলোচনায় একমত হয় উভয় পক্ষ। পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বাইরের দেশের হস্তক্ষেপ ও আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকি মোকাবেলায় পরস্পরকে সমর্থনেরও অঙ্গীকার করেন শি-পুতিন।

সিঙ্গাপুরের এস. রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক লি মিংজিয়াং বলেন, ‘তাইওয়ানের সঙ্গে যুদ্ধে চীন যেমন রাশিয়ার কাছ থেকে সামরিক সহায়তা প্রত্যাশা করে না, রাশিয়ার চাওয়াও ঠিক তেমন। ইউক্রেন আগ্রাসনে চীনের কাছে রাশিয়ার কোনো সামরিক সহায়তা প্রত্যাশা নেই। বরং কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থনই তাদের জন্য বেশি জরুরি।’

রুশ-চীন সম্পর্ক ২০১৪ সালের চেয়ে অনেকটাই এগিয়েছে বলেই ধরে নেওয়া যায়। কারণ ওই সময়ে ক্রিমিয়া উপদ্বীপকে একীভূতকরণের স্বীকৃতি না দিতে নিরাপত্তা পরিষদে মার্কিন প্রস্তাবে ভোট দেওয়া থেকে বিরত ছিল চীন। তবে ক্রিমিয়া দখলে নেওয়ার পর চীনা উন্নয়ন ব্যাংক ও এক্সপোর্ট-ইমপোর্ট ব্যাংক অব চায়নাসহ দেশটি কয়েকটি রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংক মার্কিন নিষেধাজ্ঞার মুখে থাকা রাশিয়ার ব্যাংকগুলোকে ঋণ দিয়েছিল।

ইউক্রেন সংকটে কোনো অর্থনৈতিক দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়তে চায় না চীন। তবে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন হলে কঠোর নিষেধাজ্ঞার মুখে পড়বে রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্কিত চীনা প্রতিষ্ঠানগুলোও। তবে দুই পরাশক্তিকে বিচ্ছিন্ন রেখে যে বিশ্ব অর্থনীতি সুস্থির থাকতে পারবে না তা বলাই বাহুল্য। সেই সঙ্গে নতুন মেরুকরণও সহজেই সামনে আসতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

নতুন বিশ্বব্যবস্থায় পুতিন-শি নেতৃত্ব

রাশিয়ার পররাষ্ট্রনীতি সংক্রান্ত চিন্তাবিদ এবং পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফিওদর লুকিয়ানভের মতে, এক মেরু কেন্দ্রিকতার মধ্য দিয়ে মার্কিন আধিপত্যের নব যুগের সূচনা হয় ১৯৯১ সালের পারস্য উপসাগরীয় যুদ্ধের মাধ্যমে। যুক্তরাষ্ট্র এ সময় সাদ্দাম হোসেনের ইরাককে কুয়েত থেকে হটিয়ে দেওয়ার জন্য একটি বিশ্ব জোট গঠন করে।

১৯৯০-এর দশকে বসনিয়া এবং কসোভোসহ বিশ্বজুড়ে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক হস্তক্ষেপের পরপরই সূচনা হয় উপসাগরীয় যুদ্ধের। ১৯৯৯ সালে সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে ন্যাটোর বোমাবর্ষণকে কেন্দ্র করে রাশিয়া দীর্ঘ দিন ধরে বলছে যে ন্যাটো নিছক প্রতিরক্ষা জোট নয়, এটি মার্কিন নেতৃত্বাধীন আন্তর্জাতিক যুদ্ধবাজ গোষ্ঠী। বেলগ্রেডের চীনা দূতাবাসে ন্যাটো বোমা হামলার ঘটনাও বেইজিং ভুলে যায়নি।

একটি নতুন বিশ্বব্যবস্থা তৈরি করা রাশিয়া এবং চীনের জন্য কেবল শক্তি প্রদর্শনের বিষয় না। এটা আদর্শের লড়াইও। পশ্চিমা উদারনৈতিক ব্যবস্থা সর্বজনীন মানবাধিকারের বক্তব্য প্রচার করে। তবে তা যে কার্যত সর্বজনীন না, সেটি আজ খুব স্পষ্ট। এর বিপরীতে রাশিয়া এবং চীনের রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের তাত্ত্বিকদের দাবি, বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং সভ্যতাকে ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে বিকশিত হওয়ার সুযোগ দেওয়া উচিত।

বেইজিং এবং মস্কো যুক্তি দেখায় যে, বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থায় প্রয়োজন মনে করলে অন্য দেশের ওপর গণতন্ত্র ও মানবাধিকার চাপিয়ে দিতে পারে আমেরিকা। এ জন্য দরকার হলে সামরিক হস্তক্ষেপেও দ্বিধা করে না তারা। এর বিপরীতে রাশিয়া এবং চীন যে নতুন বিশ্বব্যবস্থার দাবি করছে সেখানে এমন বল প্রয়োগের বদলে স্বতন্ত্র প্রভাব বলয়গুলো সুচিহ্নিত থাকবে। নিজ নিজ প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর রাশিয়া এবং চীনের আধিপত্য যুক্তরাষ্ট্র মেনে নেবে। পাশাপাশি পুতিন বা শি সরকারকে হুমকির মুখে ফেলতে কোনো আন্দোলনকে সমর্থন করাও ওয়াশিংটন ত্যাগ করবে।

শেনজেনভিত্তিক চাইনিজ ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের অধ্যাপক ঝেং ইয়াংজিয়ান বলেন, ‘আমরা যদি বড় কোনো কৌশলগত ভুল না করি তাহলে চীনের আধুনিকায়নের যাত্রা ব্যাহত হবে না। বরং, নতুন একটি বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ার ক্ষেত্রে চীনের সক্ষমতা এবং ভূমিকা আরও বৃদ্ধি পাবে।’

মার্কিন পররাষ্ট্রনীতি তাদের স্বার্থের সঙ্গে পরিবর্তনশীল, তা মধ্যপ্রাচ্যে তাদের রাজতান্ত্রিক বন্ধুদের দেখলেই বোঝা সম্ভব। সেখানে গণতন্ত্রের বালাই নেই। এ নিয়ে মুখে কোনো কথা নেই মার্কিন কথিত উদারনীতির ধারকদের। এর বিপরীতে রাশিয়া ও চীনের সাম্প্রতিক হৃদ্যতা নতুন মেরুকরণের বাস্তবতাই তুলে ধরছে। দেশ দুটির সামরিক সহায়তার প্রয়োজন তুলনামূলক কম। তবে তাদের প্রয়োজন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সমর্থন। ইউক্রেন বা তাইওয়ান ইস্যু এক নিমিশেই শেষ হচ্ছে না। আর তাই দেশ দুটির ঘনিষ্টতা পশ্চিমাদের জন্য নিশ্চিতভাবেই মাথাব্যথার কারণ। ইউক্রেনের সংকট কার্যত গোটা ভবিষ্যৎ বিশ্বব্যবস্থার লড়াই। আর এ ক্ষেত্রে মার্কিন হুমকি চীনের ক্ষেত্রে খুব বেশি কার্যকর ভূমিকা রাখবে না বলেই মনে করা হচ্ছে। আর এমন এক বিশ্ববাস্তবতায় নতুন বিশ্বব্যবস্থার বিষয়টি প্রধান হয়ে উঠেছে। যার কুরুক্ষেত্র এখন ইউক্রেন।

এসএ/জেডএকে/

Header Ad

ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২

ছবি: সংগৃহীত

ভারতীয় নৌবাহিনীর একটি সাবমেরিনের সঙ্গে দেশটির একটি মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় মাছ ধরা নৌকার দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছেন।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) দেশটির গোয়া উপকূলে এ ঘটনা ঘটে এবং সাবমেরিনে ১৩ জন ক্রু ছিল। তাদের মধ্যে ১১ জন ক্রুকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দুর্ঘটনার পরই ভারতীয় নৌবাহিনী ব্যাপক আকারে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে। উদ্ধার অভিযানে ছয়টি জাহাজ এবং বিমান মোতায়েন করা হয়েছে। সংঘর্ষের ঘটনায় মাছ ধরা নৌকার দুই জেলে নিখোঁজ রয়েছে। অন্যদিকে সাবমেরিন থেকে ১১ জন ক্রুকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, গোয়া উপকূল থেকে ৭০ নটিক্যার মাইল দূরে মাছ ধরা নৌকা মারথমার সঙ্গে সাবমেরিনের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, নিখোঁজ দুই জেলের সন্ধানে মেরিটাইম রেসকিউ কোঅর্ডিনেশন সেন্টার মুম্বাইয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে উদ্ধার অভিযান চালানো হচ্ছে। এছাড়া ওই এলাকায় কোস্টাগার্ডও মোতায়েন করা হয়েছে। তবে কীভাবে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে তার কারণ উদঘাটনে তদন্তের কথা জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।

Header Ad

সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান

এ আর রহমান ও তার প্রাক্তন স্ত্রী সায়রা। ছবি: সংগৃহীত

এ আর রহমান বিচ্ছেদের ঘোষণা করার পর থেকে তাকে নিয়ে নানা খবর ছড়িয়েছে। একদিকে যেমন রহমান ও তার প্রাক্তন স্ত্রী সায়রার সম্পর্ক নিয়ে নানা আলোচনা। অন্যদিকে সুরকারের সহশিল্পী মোহিনীর সঙ্গে পরকীয়া নিয়ে গুঞ্জন রটেছে। তবে এই নিয়ে মোহিনী বা রহমানের তরফ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি। ঠিক এরই মাঝে নতুন পোস্ট করে এ আর রহমান ভক্তদের দিলেন সুখবর।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) রহমান তার সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভিডিও পোস্ট দিয়েছেন রহমান। এতে তিনি জানান, দক্ষিণী সিনেমা ‘দ্য গোট লাইফ’র আবহসংগীতের জন্য হলিউড মিউজিক অ্যাওয়ার্ডসে সেরার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। এ সিনেমার পুরো টিমকে এ ভিডিওর মাধ্যমে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এ সংগীতজ্ঞ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এ আর রহমানের বিচ্ছেদ ঘোষণার কয়েক ঘণ্টা পরেই তার সহশিল্পী মোহিনীও স্বামী ম্যাকের সঙ্গে ডিভোর্সের ঘোষণা দেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় এ দুই ঘটনার মধ্য়েই মিল খুঁজে পেয়েছেন নেটিজেনরা। এমনকী মোহিনীর সঙ্গে পরকীয়ার কারণেই রহমান এ ডিভোর্সের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন- এমনটাও বলছেন কেউ কেউ।

 মোহিনী-এ আর রহমান। ছবি: সংগৃহীত

এ আর রহমান ও মোহিনীকে জড়িয়ে বিতর্ক শুরু হতেই মুখ খুলেছে রহমানের সবেক স্ত্রী সায়রা বানুর আইনজীবী বন্দনা শাহ। তিনি গণমাধ্যমকে জানালেন, ‘এসব বিতর্কের কোনো অর্থ নেই। মোহিনীর ডিভোর্সের সঙ্গে রহমানে ও সায়রার ডিভোর্সের কোনো সূত্র নেই। এটা তাদের একেবারে নিজস্ব সিদ্ধান্ত। তাই অযথা বিতর্ক না করাই ভালো’।

তিনি আরও বলেন, ‘প্রত্য়েকটি দীর্ঘ বিবাহিত জীবনই ভালো-মন্দের মধ্য়ে দিয়ে এগিয়ে যায়। আমি খুবই খুশি তারা খুব সচেতনভাবে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ বিচ্ছেদ একেবারেই খারাপ বৈবাহিক জীবনের ফল নয়। সায়রা ও রহমান দুজনেই দুজনকে সম্মান করেন’।

১৯৯৫ সালে রহমান ও সায়রা বানুর বিয়ে হয়েছিল। দেখাশোনা করেই নাকি এই বিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ ২৯ বছর তারা একসঙ্গে কাটিয়েছেন। তাদের ঘরে তিন সন্তানের জন্ম হয়েছে।

Header Ad

ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি

কেলি এম ফে রজরিগেজ (বামে) এবং থিয়া লি। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশে টেকসই অর্থনীতি, স্থিতিশীলতা, প্রবৃদ্ধির পাশাপাশি অর্থবহ ও মানসম্পন্ন চাকরির ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষে ৪ দিনের সরকারি সফরে ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন আন্তর্জাতিক শ্রমবিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি কেলি এম ফে রজরিগেজ এবং শ্রম বিভাগের পক্ষে ডেপুটি আন্ডার সেক্রেটারি থিয়া লি।

শুক্রবার (২২ নভেম্বর) সকালে ঢাকায় পৌঁছে শ্রমিকের কাজের পরিবেশ এবং বিস্তারিত নিয়ে শ্রমিক সংগঠন সলিডারিটি সেন্টারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন তারা। এদিন দুপুরে বৈঠক করবে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা আইএলওর সঙ্গে। এছাড়াও সরকারি প্রতিটি পক্ষের সঙ্গে বৈঠকের কথা রয়েছে।

জানা গেছে, প্রতিনিধিদল অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকর্তা, বেসরকারি খাতের গার্মেন্টস উৎপাদক এবং শ্রমিক ইউনিয়ন স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে দেখা করবে। প্রতিনিধি দলটি তৈরি পোশাক খাতে বিনিয়োগ করা আমেরিকান কোম্পানির প্রতিনিধি এবং বৈশ্বিক শ্রম বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে বাংলাদেশের অর্থনীতি, গণতন্ত্র এবং শ্রমিকদের সর্বোত্তমভাবে কীভাবে সহায়তা করা যায় সে বিষয়ে আলোচনা করবে।

এই সফর অর্থনৈতিক উন্নয়ন, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত শ্রমের মান, সেইসঙ্গে টেকসই প্রবৃদ্ধি এবং ব্যাপকভাবে ভাগ করা সমৃদ্ধির উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতির উপর জোর দেয়।

Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

ভারতীয় সাবমেরিনের সঙ্গে মাছ ধরা নৌকার সংঘর্ষ, নিখোঁজ ২
সংসার ভাঙার দুদিন পরই সুখবর দিলেন এ আর রহমান
ঢাকায় পৌঁছেছেন বাইডেনের বিশেষ প্রতিনিধি
আ.লীগকে নির্বাচনের সুযোগ দেওয়ার বিষয়ে যা বললেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
যুদ্ধবিধ্বস্ত লেবানন থেকে ফিরলেন আরও ৮২ বাংলাদেশি
পাকিস্তানে যাত্রীবাহী গাড়িতে সন্ত্রাসী হামলা, নিহত ৪৫
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ১৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন
তামিমকে অধিনায়ক করে বাংলাদেশের দল ঘোষণা
নতুন নির্বাচন কমিশন শপথ নেবে রোববার
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ছাড়াল ৪৪ হাজার
খালেদা জিয়ার সঙ্গে কুশল বিনিময় করলেন মাহফুজ-আসিফ-নাহিদ
দেশের বাজারে আবারও বাড়ল স্বর্ণের দাম
‘দেশের মানুষ এখনো কোনো রাজনৈতিক দলকেই বিশ্বাস করতে পারে না’
‘বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে সশস্ত্র বাহিনীর অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে’: প্রধান উপদেষ্টা
নওগাঁ শহরে শৃঙ্খলা ফেরাতে বিশেষ অভিযান শুরু
২০২৬ সালের মাঝামাঝিতে নির্বাচন হতে পারে: উপদেষ্টা সাখাওয়াত
সেনাকুঞ্জে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে খালেদা জিয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে আহত ৫ জনকে রোবটিক হাত উপহার
সেনাকুঞ্জের পথে খালেদা জিয়া
সুযোগ পেলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলায় লড়ব: জেড আই খান পান্না