মারিউপোল থেকে বের হওয়ার পথে মাইন: রেডক্রস
মারিউপোল শহর থেকে বের হওয়ার পথে মাইন পোতা রয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ইন্টারন্যাশনাল কমিটি অফ দ্য রেড ক্রস (আইসিআরসি) পরিচালক (অপারেশন্স) ডোমিনিক স্টিলহার্ট। বিবিসির রেডিও ফোরকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
রেড ক্রস পরিচালক বলেন, ‘রবিবার আইসিআরসির কয়েকজন সদস্য মারিউপোলের একটি পথ দিয়ে বের হওয়ার চেষ্টা করেছিলেন; কিন্তু কিছুক্ষণ পরই তারা বুঝতে পারেন যে, তারা যেদিকে যাচ্ছেন, সেখানে রাস্তায় মাইন পোতা রয়েছে। সুতরাং এখন এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, দুই পক্ষ এমন একটি সুনির্দিষ্ট সমঝোতায় পৌঁছাবে, যা আমরা সেখানে কার্যকর করতে পারব।’
ডোমিনিক স্টিলহার্টের কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, ‘মানবিক করিডোর নিয়ে আসলে কী সমস্যা হয়েছে? উত্তরে তিনি বলেন, গত কয়েকদিন ধরেই তারা রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন যে, কীভাবে একটি যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমঝোতা করা যায়। যাতে বেসামরিক মানুষ বোমা হামলার মুখে থাকা শহরগুলো থেকে বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে পরিষ্কার, কার্যকর ও সুনির্দিষ্ট একটি সমঝোতা তৈরি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘নীতিগতভাবে দুই পক্ষ একমত হয়েছিল; কিন্তু কোন পথে কারা যাবে, তা নিয়ে দ্বিমতের জের ধরে সেই সমঝোতা আর টেকেনি।’
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
এগারো দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। সাময়িক যুদ্ধবিরতি শেষে আজ চলছে যুদ্ধের ১২তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/