সুইজারল্যান্ডে আত্মহত্যা করার নতুন যন্ত্র ‘সারকো’
বাংলাদেশে আত্মহত্যার চেষ্টা করা ফৌজদারি অপরাধ। তারপরও মানুষ সিদ্ধান্ত নেয় নিজের জীবন প্রদীপ নেভানোর। তবে সুইজারল্যান্ডে আত্মহত্যা করার পক্ষে বেশকিছু আইন রয়েছে। সেই আইনে পরিষ্কার উল্লেখ রয়েছে যে, আর্থিক সুবিধা আদায়ের জন্য কাউকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া যাবে না।
সুইজারল্যান্ডের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এগজিট ইন্টারন্যাশনাল’ সাহায্য করে মানুষকে আত্মহত্যা করতে। তাদের দাবি, সম্প্রতি তারা আত্মহত্যার জন্য ব্যথা, বেদনাবিহীন মৃত্যুর একটি যন্ত্র তৈরি করেছে। কফিন আকৃতির ওই যন্ত্রে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেন ও কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ কমিয়ে এক মিনিটেরও কম সময়ের মধ্যে মৃত্যু ডেকে আনা হয়। যন্ত্রের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সারকো’। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য ইনডিপেন্ডেন্ট এই খবর জানিয়েছে।
এগজিট ইন্টারন্যাশনালের কর্মকর্তা ফিলিপ নিৎশে, যিনি ‘ডক্টর ডেথ’ নামে পরিচিত, রয়েছেন এই যন্ত্র উদ্ভাবনের নেপথ্যে। যন্ত্রটির কর্মপদ্ধতি সম্পর্কে তিনি জানান, বাইরে থেকে যন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করার পাশাপাশি ভেতর থেকেও তা চালু করা যাবে। মৃত্যুর প্রত্যাশায় যে ব্যক্তি ওই যন্ত্রের ভেতর ঢুকবেন, তিনি নিজেও যন্ত্রটি চালাতে পারবেন।
তবে সমস্যা হলো–মরণেচ্ছু ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায়, এই পরিস্থিতিতে তারা অচেতন হয়ে পড়েন। পেশিশক্তি ব্যবহার করে কোনো কাজ করার মতো পরিস্থিতি তাদের বেশিরভাগেরই থাকে না। এই যন্ত্রে তার সমাধান করা হয়েছে বলে দাবি সংস্থাটির। এগজিট ইন্টারন্যাশনালের দাবি, ওই পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে শুধুমাত্র চোখের পাতার নড়াচাড়া আঁচ করেই যন্ত্রটি সংকেত গ্রহণ করতে পারবে।
বিশেষ ক্ষেত্রে সুইজারল্যান্ডে আত্মহত্যায় সহায়তা প্রদান করা আইনিভাবে বৈধ। গত বছর অন্তত এক হাজার ৩০০ মানুষ এই প্রক্রিয়ার সাহায্য নিয়েছেন। সংস্থার দাবি, এবার আইনি বৈধতা পেল আত্মহত্যা করার যন্ত্র ‘সারকো’।
ফিলিপ নিৎশে বলেন, ‘আগামী বছরের মধ্যে সারকো ব্যবহারের উপযোগী হয়ে যাবে সুইজারল্যান্ডে। এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে বহু অর্থ ব্যয় হয়েছে। তবে আমাদের আশা, আমরা প্রয়োগের খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেছি।’
তবে এ নিয়ে সমালোচনাও কম হচ্ছে না। অনেকে বলছেন, যন্ত্রটি আসলে গ্যাস চেম্বারকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। সমালোচকদের মতে, এই যন্ত্রের মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে আত্মহত্যাকে সব ক্ষেত্রে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।
এসএ/