নিউ ইয়র্কে অমিক্রনে আক্রান্ত হরিণ, বিশেষজ্ঞদের শঙ্কা
এবার পশুর শরীরেও মিলল করোনা ভাইরাসের অতি সংক্রামক সংস্করণ অমিক্রনের উপস্থিতি। নিউ ইয়র্কের স্টাটেন আইল্যান্ডে সাদা হরিণের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। এর আগে পশুর শরীরে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ মিললেও এই প্রথম অমিক্রনে পশুদের আক্রান্ত হওয়া খবর সামনে এল।
যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম এবিসিনিউজ ও রয়টার্স-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি সমীক্ষা থেকে গবষেকরা জানতে পেরেছেন, হরিণের এই প্রজাতি সহজেই অমিক্রনে আক্রান্ত হতে পারে। এতে মার্কিন প্রশাসনের চিন্তা বেড়েছে। কারণ, দেশের বিভিন্ন অংশে এই হরিণ রয়েছে। এবং তাদের সংখ্যাটাও নেহাত কম নয়। উপরন্তু, এই হরিণগুলি যেসব বনাঞ্চলে থাকে, সেগুলো লোকালয়ের কাছেই। অনেক সময় বন থেকে বেরিয়ে মানুষের বাড়িতেও ঢুকে পড়ে এই হরিণ। ক্ষতিকর প্রাণী না হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা তাদের কাছাকাছিও যান। ফলে এবার হরিণ থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমণ শুরুর আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
আমেরিকার জাতীয় খাদ্য ও কৃষি ইনস্টিটিউট-এর অর্থায়নে গেল বছরের ১৩ ডিসেম্বর থেকে চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারির মধ্যে ৬৮টি স্টেটেন আইল্যান্ড হরিণের করোনা পরীক্ষা করা হয়। পিসিআর পরীক্ষায় সাতটি হরিণের নাসিকায় অমিক্রণের উপস্থিতি পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, এর আগেও আমেরিকায় হরিণের শরীরে করোনা ভাইরাসের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে। ২০২০ সালের শেষ থেকে ২০২১ সালের শুরুর দিক পর্যন্ত, আমেরিকার লোয়া এলাকার বন্য হরিণরা দলে দলে করোনায় আক্রান্ত হয়েছিল বলে দাবি করা হয়। মার্কিন কৃষি বিভাগের তরফ থেকে জানানো হয়, দেশের ১৩টি প্রদেশে হরিণের পালে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছিল। এই তালিকায় রয়েছে আরকানসাস, ইলিনয়েস,কানসাস, মাইনে, ম্যাসাচুসেট্স, মিনেসোটা, নিউ জার্সি, নিউ ইয়র্ক, উত্তর ক্যারোলিনা, ওকলাহামা, পেনসিলভেনিয়া, টেনেসি এবং ভার্জিনিয়া। তবে সেক্ষেত্রে হরিণগুলির প্রত্যেকটিই অমিক্রনের পূর্বসূরিদের কবলে পড়েছিল। কিন্তু, অমিক্রনে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা এটিই প্রথম।
একদিকে, যখন হরিণের শরীরে থেকে আগামী দিনে অমিক্রন মানবদেহে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে, ঠিক তখনই গবেষকদের একাংশ জানাচ্ছেন, আসলে মানুষের সংস্পর্শে এসেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছে হরিণগুলি। পরে তারা যখন বনে ফিরে যায়, তখন তা বনে থাকা অন্যান্য হরিণের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। তারপর সেই সংক্রামিত হরিণের পাল যখন লোকালয়ে ঢুকছে, তখন তাদের থেকে আবার সুস্থ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। গোটা প্রক্রিয়াটিই চক্রাকারে চলছে।
এভাবে এক ধরনের প্রাণিদেহ থেকে অন্য ধরনের প্রাণিদেহে ভাইরাসের এই যাতায়াতে অন্য একটি আশঙ্কা মাথাচাড়া দিচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের অনুমান, এর ফলে খুব দ্রুত রূপ বদলাবে করোনা। তৈরি হবে নতুন এক বা একাধিক প্রজাতি। সেক্ষেত্রে নতুন ভাইরাস আরও মারাত্মক হতে পারে। যদি তা-ই হয় হাতে থাকা টিকার সাহায্যে তার মোকাবিলা করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে।
/এএস