অভিশংসিত হলেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট
অভিশংসিত দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল। ছবিঃ সংগ্রহীত
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওলকে অভিশংসনের প্রস্তাব পার্লামেন্টে পাস হয়েছে। এর ফলে ইউনকে অবিলম্বে পদ থেকে বরখাস্ত করা হবে এবং প্রধানমন্ত্রী ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রপতি হবেন।
শনিবার (১৪ ডিসেম্বর) স্বল্পকালীন সামরিক আইন জেরে পার্লামেন্টে দ্বিতীয়বার অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটি হলে অভিশংসনের পক্ষে ২০৪ জন আইনপ্রণেতা ভোট দেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, দক্ষিণ কোরিয়ার ৩০০ আসনের পার্লামেন্টে ১৯২টি আসন রয়েছে বিরোধী দলগুলোর। আর প্রেসিডেন্টকে অভিশংসন করতে ২০০ ভোট দরকার ছিল। অভিশংসন প্রস্তাবের ওপর ভোটাভুটিতে পক্ষে ২০৪ জন আইনপ্রণেতা ভোট দিয়েছেন।
এর আগে, গত শনিবার ইউন বিরোধীদল নিয়ন্ত্রিত পার্লামেন্টে অভিশংসন উদ্যোগ থেকে রক্ষা পান। তার ক্ষমতাসীন দল পিপল পাওয়ার পার্টির (পিপিপি) আইনপ্রণেতারা পার্লামেন্টের ওই অধিবেশন বয়কট করায় বেঁচে যান। কিন্তু শনিবারের অভিশংসন উদ্যোগ থেকে ইউন আর রক্ষা পেলেন না।
প্রসঙ্গত, গত ৩ ডিসেম্বর রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে ‘রাষ্ট্রবিরোধী শক্তিকে’ সমূলে উৎপাটনের কথা বলে হঠাৎ করেই সামরিক আইন জারির ঘোষণা দেন ইউন। তার এ ঘোষণায় পুরো দক্ষিণ কোরিয়া স্তম্ভিত হয়ে যায়। পরে প্রবল বিরোধিতার মুখে সামরিক আইন প্রত্যাহারে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট।
কিন্তু তার এই পদক্ষেপে দক্ষিণ কোরিয়া কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে গুরুতর রাজনৈতিক সংকটে পড়ে। গণতান্ত্রিক সাফল্যের গাথা রচনাকারী দক্ষিণ কোরিয়ার অর্জিত সুনাম নষ্ট হওয়ার হুমকি তৈরি হয়। বিরোধী দলের অভিশংসন প্রস্তাবের মুখে পড়েন ইউন।
ইউনের অভিশংসনের সমর্থনকারী পিপিপির আইনপ্রণেতা আন চেওল-সু এক ফেসবুক পোস্টে বলেন, জনগণের জীবিকা, অর্থনীতি ও কূটনীতি দ্রুত স্থিতিশীলতার স্বার্থে' তিনি অভিশংসনের পক্ষে ভোট দেবেন।
অন্যদিকে, শনিবার দেশটির প্রধান বিরোধী দল ডেমোক্রেটিক পার্টি বলেছে, ইউনের 'পাগলামি' আর সহ্য করা যাবে না।
ক্ষমতাসীন দলের পক্ষ থেকে অভিশংসনে যোগ দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে দলটি এক বিবৃতিতে বলেছে, অভিশংসন প্রত্যাখ্যান করা জনগণের বিরুদ্ধে বিশ্বাসঘাতকতা।
দক্ষিণ কোরিয়ার বিরোধীদল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা লি জায়ে-মিউং বলেছেন, দেশে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার সর্বোত্তম উপায় হল প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলকে অভিশংসন।