পালিয়ে গেলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ
পালিয়ে গেলেন সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। ছবি: সংগৃহীত
সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ পালিয়ে গেছেন। বিদ্রোহী যোদ্ধারা প্রায় বিনা বাধায় রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়ার পর বিমানে করে শহরটি ছেড়ে যান আসাদ। অবশ্য তিনি কোথায় গেছেন তা জানা যায়নি।
রোববার (৮ ডিসেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স ও সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্রোহীরা এরই মধ্যে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে ঢুকে পড়েছেন। এর কিছুক্ষণ আগে তারা অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হোমস শহর দখল নিয়েছেন বলে ঘোষণা দেন। হোমস শহর দখলের পর উদযাপনও করেন তারা।
এদিকে শহর থেকে সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নিয়েছে সিরিয়ান সেনাবাহিনী। এ ঘটনার পরপরই রাস্তায় নেমে আসেন হাজার হাজার বাসিন্দা। তারা ‘আসাদ পালিয়ে গেছেন, হোমস মুক্ত’ এবং ‘সিরিয়া দীর্ঘজীবী হোক’ বলে স্লোগান দেন।
বিবিসির পৃথক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হোমস দখলের পর বিদ্রোহী যোদ্ধারা দামেস্কে ঢুকে পড়েছেন। রাজধানী শহরের বিভিন্ন জায়গায় গোলাগুলির শব্দ পাওয়া গেছে। এছাড়া বিদ্রোহীরা কুখ্যাত সাঈদনায়া কারাগার থেকে হাজার হাজার বন্দিকে মুক্ত করে দিয়েছেন।
আরেকটি সূত্র বলছে, বিদ্রোহীরা যখন রাজধানীতে ঢুকছিলেন, দামেস্ক বিমানবন্দর থেকে তখন একটি প্রাইভেট বিমান উড়ে যেতে দেখা গেছে, যেটার ভেতর প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ ছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, বাশার আল-আসাদ ২০০০ সাল থেকে সিরিয়ার ক্ষমতায় রয়েছেন। এর আগে তার বাবা হাফেজ আল-আসাদ ২৯ বছর দেশটি শাসন করেছিলেন।
তবে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়। ওই সময় বিক্ষোভকারীদের দমনে কঠোর পন্থা অবলম্বন করেন তিনি। এরপর বিক্ষোভকারীরা সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করেন। এতে করে দেশটিতে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ।
যদিও ২০১৫ সালে বাশার আল আসাদকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে রাশিয়া। সে বছর সিরিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল লক্ষ্য করে ব্যাপক বিমান হামলা চালায় তারা। এরপর বিদ্রোহীরা পিছু হটতে বাধ্য হয়।
কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে লেবাননের শিয়া সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ দুর্বল হয়ে যাওয়ায় এবং ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার ব্যস্ত থাকার সুযোগে বিদ্রোহীরা আবারও তৎপর হয়ে উঠে। সম্প্রতি তারা ২০১৬ সালের পর প্রথমবারের মতো আলেপ্পোতে প্রবেশ করেন।
এরপর সিরিয়ার বিদ্রোহীরা দ্রুতগতিতে দামেস্কের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং ইসলামপন্থি দল হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে বিদ্রোহীরা এক সপ্তাহের মধ্যে চতুর্থ শহর হিসেবে শনিবার দারা’র নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এর আগে আলেপ্পো, হামা ও হোমস শহরও দখল করে তারা।