ডলারের বিপরীতে ইতিহাসের সর্বনিম্নে রুপি: ভারতের অর্থনীতিতে তোলপাড়
ছবি: সংগৃহীত
ভারতীয় অর্থনীতি বর্তমানে গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে যেখানে অর্থনীতিবিদদের পূর্বাভাস ছিল ৬ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হবে, সেখানে প্রকৃত প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে মাত্র ৫.৪ শতাংশ। এটি গত ১৮ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন এবং এই পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
এ সংকটের সরাসরি প্রভাব পড়েছে ভারতীয় রুপির মানে। গতকাল (মঙ্গলবার) মার্কিন ডলারের বিপরীতে ভারতীয় রুপির বিনিময় হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৪.৭৫ রুপিতে, যা ইতিহাসে সর্বনিম্ন। রুপির এই অবমূল্যায়ন নিয়ে ব্যবসায়ী মহল ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মধ্যে উদ্বেগের সৃষ্টি হয়েছে।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ভারতের কেন্দ্রীয় ব্যাংক রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া (আরবিআই) যদি হস্তক্ষেপ না করত, তবে রুপির দর আরও বেশি হ্রাস পেত। আরবিআই ডলার বিক্রির মাধ্যমে বাজারে রুপির সরবরাহ নিয়ন্ত্রণ করে এই দরপতন কিছুটা ঠেকাতে সক্ষম হয়েছে। যদিও এই ধরণের ধারাবাহিক হস্তক্ষেপ অর্থনীতির জন্য দীর্ঘমেয়াদে ভালো নয় বলে অনেকে মনে করছেন।
রুপির মান কমে যাওয়ার ফলে ভোক্তাপর্যায়ে নানা সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। আমদানি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে। বিদেশে পড়তে যাওয়া শিক্ষার্থীদের খরচ বেড়ে যাচ্ছে, পাশাপাশি ব্যবসায়ীরা আমদানি ও রপ্তানি চুক্তি নিয়ে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। সাধারণ জনগণের জন্য এই দরপতন নতুন আর্থিক চাপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে ভারতের অর্থনৈতিক নীতিনির্ধারকরা সংকট মোকাবিলায় কী পদক্ষেপ নেবেন, সেটিই এখন দেখার বিষয়। রুপির অবমূল্যায়ন যদি অব্যাহত থাকে, তাহলে ভারতের অর্থনীতির স্থিতিশীলতা বজায় রাখা আরও কঠিন হয়ে পড়বে।