শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে এবার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মামলা
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ‘মানবতাবিরোধী অপরাধ’ ও ‘গণহত্যার’ অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) মামলা করা হয়েছে। পাশাপাশি তার মন্ত্রিসভার সদস্য ও অন্য প্রভাবশালী কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ স্বাধীনভাবে তদন্তের এ আবেদন করেছেন ব্রিটিশ বাংলাদেশি একজন আইনজীবীসহ আরও দুজন ব্রিটিশ আইনজীবী।
মামলার বাদী ‘থ্রি বোল্ট কোর্ট চেম্বার্স’ এর ব্যারিস্টার মো. আশরাফুল আরেফিন স্থানীয় সময় শুক্রবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় লন্ডন-বাংলা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরেন।
ওই আইনজীবী বলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রোম স্ট্যাটিউটের ১৫ অনুচ্ছেদের অধীনে মামলাটি দাখিল করা হয়েছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পতনের পর ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ও বিভিন্ন থানায় শেখ হাসিনাসহ তার বিভিন্ন মেয়াদের মন্ত্রিসভার সদস্য, সংসদ সদস্য এবং পুলিশসহ প্রশাসনের আমলাদের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলার মধ্যে নেদারল্যান্ডসের দ্য হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে (আইসিসি) অভিযোগ দায়েরের খবর এল।
সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাজ্যে বসবাসকারী আইনজীবী আশরাফুল আরেফিন বলেন, মামলায় তার সঙ্গে রয়েছেন ব্যারিস্টার সারাহ ফোরে ও ব্যারিস্টার এমিল লিক্সান্দ্রু।
নিরপেক্ষ তদন্তের স্বার্থে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আইসিসি থেকে গ্রেপ্তারি পরোয়ানার আবেদন করা হয়েছে বলেও তুলে ধরেন তিনি।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের আন্দোলন থেকে সরকার পতনের আন্দোলন দমাতে শেখ হাসিনা সরকারের নেয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে তিনি বলেন, তাদের বিভিন্ন অপরাধের মধ্যে রয়েছে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড, গোপন বন্দীশালায় নির্যাতন, চলাচল ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং গণহত্যার মত গুরুতর অপরাধ।
মামলায় ভুক্তভোগীদের উপর সংঘটিত সহিংসতা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নির্যাতন এবং ব্যাপক নিপীড়নের দলিলসহ প্রমাণাদি উপস্থাপন করা হয়েছে, যার মধ্যে সাক্ষী, ভিডিও প্রমাণ এবং নির্ভরযোগ্য তথ্য রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে ব্রিটিশ বাংলাদেশি আইনজীবী আশরাফুল বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত থেকে রাজনৈতিক সহায়তা পাওয়ার সম্ভাবনার কারণে স্থানীয় আদালতে ঘোষিত কোনো দণ্ড কার্যকর হওয়ার বিষয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হলে ভারত আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতায় বাধ্য হতে পারে।
তার ভাষ্য, বাংলাদেশ সরকারের এই কঠোর ব্যবস্থার ফলে দেশে গণহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যা, নির্যাতন এবং অসংখ্য বিক্ষোভকারী নিখোঁজ হয়েছেন। এই নিষ্ঠুরতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলো আন্তর্জাতিক মানবিক আইন লঙ্ঘনের উদাহরণ এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।