স্ত্রীর ফোনে আড়ি পেতে স্বামীর ১৯ কোটি টাকা আয়!
ছবি: সংগৃহীত
বাড়ি থেকে অফিস করতেন স্ত্রী, প্রয়োজনে সহকর্মীদের সঙ্গে অনেক অফিসিয়াল বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করতেন। সেই স্ত্রীর ফোনে আড়ি পেতেই প্রায় ১৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা আয় করেছেন স্বামী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসে।
মার্কিন সিকিয়োরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (এসইসি) রিপোর্টে উঠে এসেছে এই ঘটনার বিবরণ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, এমন কাণ্ড ঘটানো ওই স্বামীর নাম টেইলার লুডন। তাঁর স্ত্রী ব্রিটিশ সংস্থা বিপি পিলসিতে চাকরি করেন। কোভিড মহামারীর সময় থেকে বাড়িতে বসেই কাজ করতেন টেইলারের স্ত্রী।
গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ব্রিটিশ সংস্থাটি ঘোষণা করে, মার্কিন সংস্থা ট্রাভেল সেন্টারস কিনতে চলেছে তাঁরা। এই লেনদেন সংক্রান্ত পুরো প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন টেইলারের স্ত্রী। অফিসের অন্য কর্মীদের সঙ্গে তিনি যখন আলোচনা করতেন, সেই ফোনগুলোতে আড়ি পাততেন টেইলার।
সিকিয়োরিটিস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন জানিয়েছে, স্ত্রীর ফোনে আড়ি পেতে জানতে পারেন বিপি পিএলসি ৭৪ শতাংশ পিমিয়াম দামে আমেরিকার ট্রাভেল সেন্টারস কিনতে যাচ্ছে। এই তথ্য কাজে লাগিয়ে ট্রাভেল সেন্টারসের একের পর এক শেয়ার কেনা শুরু করেন টেইলার। পুরাতন পড়ে থাকা অ্যাকাউন্টও সচল করেন।
এভাবে ১ দশমিক ৭৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১৯ কোটি ৩২ লাখ টাকা। তবে শেষ পর্যন্ত কয়েকদিন আগে নিজের সমস্ত কীর্তি স্ত্রীর কাছে স্বীকার করেন টেইলার। সমস্ত ঘটনা শুনে ক্ষোভে ফেটে পড়েন টেইলারের স্ত্রী। সঙ্গে সঙ্গে বাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেন। দিনকয়েকের মধ্যেই ডিভোর্সেরও আবেদন করেন তিনি।
শুধু তাই নয়, নিজের সংস্থার আধিকারিকদের গিয়ে গোটা বিষয়টি জানিয়ে দেন। তাতে উলটে নিজের বিপদ ডেকে আনেন। স্বামীর কুকর্মের সঙ্গী ছিলেন, এই অভিযোগ এনে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয় টেইলারের স্ত্রীকে।
তবে একের পর এক অভিযোগের মুখে পড়ে আড়ি পেতে কামানো অর্থ ফিরিয়ে দিতে রাজি হয়েছেন টেইলার। তাঁর আইনজিবী পিটার জিডেনবার্গ এ বিষয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি। অপরদিকে বিপি এ বিষয়ে মন্তব্য করতে অস্বীকার করেছে।
কোভিড-১৯ মহামারীর শুরুতে বাড়ি থেকে অফিস করার চল শুরু হওয়ার পর থেকে এসইসি একাধিক ইনসাইডার-ট্রেডিং কেস পেয়েছে। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাড়ি থেকে কাজ করার সময় আড়ি পাতা বা তথ্য দেখে ফেলা। এতে ‘ওয়ার্ক ফর্ম হোম’ রীতি ঝুঁকির মুখে পড়েছে।