জাতিসংঘের কর্মকর্তা হত্যায় কঙ্গোতে ৫১ জনের মৃত্যুদণ্ড
ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব কঙ্গোতে জাতিসংঘের দুই বিশেষজ্ঞকে হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে ৫১ মিলিশিয়া সদস্যকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি সামরিক আদালত।
প্রায় পাঁচ বছর ধরে শুনানি চলার পর স্থানীয় সময় গতকাল শনিবার (২৯ জানুয়ারি) ওই রায় ঘোষণা করা হয়। তবে রায় ঘোষণার দিন আদালতে বেশিরভাগ আসামি উপস্থিত ছিলেন না বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
২০১৭ সালে দেশটির কাসাই অঞ্চলে সুইডিশ-চিলিয়ান নাগরিক জাইদা কাতালান ও মার্কিন নাগরিক মাইকেল শার্পকে অপহরণ ও হত্যা করা হয়। কাতালানের শিরশ্ছেদ করা ছিল। সরকারি বাহিনী ও মিলিশিয়া দলের মধ্যে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার পর তারা একটি গণকবরের বিষয়ে তদন্ত করছিলেন।
তাদের দোভাষী বেটু তিন্তেলাও নিহত হন। অপহরণের ১৬ দিন পর তাদের মরদেহ পাওয়া যায়।
কাসাইয়ে সংঘাতে শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন। ২০১৬ সালের আগস্টে স্থানীয় নেতা কামউইনা সাপুকে হত্যার মধ্য দিয়ে ওই সংঘাতের শুরু হয়। কয়েক মাস ধরে চলা ওই সংঘাত শেষ হয় ২০১৭। যুদ্ধে ১০ লাখের বেশি মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন।
৫১ জন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির প্রায় সবাই মিলিশিয়ার সদস্য। তবে কঙ্গোতে সম্প্রতি শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের ওপর স্থগিতাদেশ দেওয়া হয়েছে। এ কারণে ধরে নেওয়া যায়, তারা মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে আমৃত্যু কারাদণ্ড ভোগ করবেন।
এই আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যাকাণ্ড, অঙ্গচ্ছেদের মাধ্যমে যুদ্ধাপরাধ সংঘটন ও সন্ত্রাসের অভিযোগসহ আরও বেশ কিছু অভিযোগ আনা হয়েছিল।
যাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে তাদের মধ্যে স্থানীয় একজন অভিবাসন কর্মকর্তাও রয়েছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে কর্নেল জঁ দে দ্যু মাম্বেনি ১০ বছরের কারাদণ্ডের সাজা পেয়েছেন। একজন সাংবাদিক ও একজন পুলিশ সদস্য বেকসুর খালাস পেয়েছেন।
এদিকে ৫১ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হলেও এই রায়ে কাতালান ও শার্পের পরিবার সন্তুষ্ট হতে পারেনি। তাদের পরিবার থেকে বলা হয়, তাদের বিশ্বাস হত্যাকাণ্ডের মূলহোতাকে বিচারের আওতায় আনা হয়নি।
বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলোরও দাবি, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে কঙ্গোর শীর্ষ পর্যায়ের সরকারি কর্মকর্তারা জড়িত। বিচারে তাদের জড়িত থাকার বিষয়টি ঠিকমতো আমলে নেওয়া হয়নি।
এসএ/