বিশ্বে প্রথম ভয়ংকর পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করতে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
ছবি: সংগৃহীত
যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামায় নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগের মাধ্যমে আজ বৃহস্পতিবার কেনেথ স্মিথ নামের এক বন্দির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হবে। নাইট্রোজেন গ্যাসের মাধ্যমে ‘ভয়ংকর পদ্ধতিতে’ মৃত্যুদণ্ড কার্যকর আটকাতে আদালতের দারস্থ হয়েছিলেন কেনেথ স্মিথের আইনজীবীরা।
কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট এবং নিম্ন আপিল আদালত এই আপিল খারিজ করে দিয়েছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে কোনো আসামিকে এভাবে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার নজির নেই।
কেনেথের আইনজীবীরা বলেছিলেন, এভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের বিষয়টি নিষ্ঠুরতা এবং অস্বাভাবিক শাস্তির সমান। তারা আরও বলেছেন, মাস্কের মাধ্যমে স্মিথকে যখন নাইট্রোজেন গ্যাস শুষে নিতে বলা হবে, তখন নিজের বমিতেই দমবন্ধ হয়ে যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যু হবে তার।
১৯৮৮ সালে এক নারীকে মাত্র এক হাজার ডলারের চুক্তিতে হত্যা করেছিলেন স্মিথ এবং অপর এক ব্যক্তি। ওই ব্যক্তির ২০১০ সালেই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। বর্তমানে ৫৮ বছর বয়সী স্মিথ ও তার সহযোগীকে ১৯৮৯ সালে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
গত সপ্তাহে এই আসামী ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে বলেছিলেন, নিজের ভাগ্যে কী হবে সেটি নিয়ে অপেক্ষা করার বিষয়টি তার জন্য ‘নির্যাতনের’ সামিল। নাইট্রোজেন গ্যাস প্রয়োগের মাধ্যমে এর আগে কখনো বিশ্বের কোথাও মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়নি।
জাতিসংঘের মানবাধিকার সংগঠনও এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে। সংস্থাটি দণ্ড কার্যকর স্থগিত করার দাবিও জানিয়েছে। স্মিথের আইনজীবীরা বুধবার হাইকোর্ট এবং নিম্ন আদালতে আপিল করেন। কিন্তু আদালতের বিচারকরা সেগুলো প্রত্যাখ্যান করেন।
আইনজীবীরা জানান, যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধানে বলা আছে, কাউকে নিষ্ঠুর এবং অমানবিক শাস্তি দেওয়া হবে না। কিন্তু অপরীক্ষিত এ পদ্ধতির মাধ্যমে স্মিথের সঙ্গে মূলত নিষ্ঠুরতা করা হবে। তারা জানিয়েছেন, মাস্কের মাধ্যমে গ্যাস শুষে নেওয়ার পরই স্মিথের বমি শুরু হবে এবং এতে তার দমবন্ধ হয়ে যাবে।
তবে আলাবামার জেল কর্তৃপক্ষ আদালতকে জানিয়েছেন, গ্যাস শুষে নেওয়ার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে স্মিথ জ্ঞান হারাবেন এবং কয়েক মিনিটের মধ্যে তার মৃত্যু হবে। আলাবামা রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল স্টিভ মার্শাল একবার এক বক্তব্যে বলেছিলেন, ‘নাইট্রোজেন গ্যাসের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর সবচেয়ে মানবিক পদ্ধতি।’
যুক্তরাষ্ট্রের বিষাক্ত ইনজেকশন দেওয়ার মাধ্যমে এরআগে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছ। কিন্তু সেই বিষাক্ত পদার্থের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় আলাবামা ও আরও দুটি রাজ্যে নাইট্রোজেন হাইপোক্সিয়া গ্যাসের মাধ্যমে দণ্ড কার্যকরের পদ্ধতিকে বৈধতা দেওয়া হয়েছে। সূত্র: বিবিসি