জাতিসংঘে কোরআন হাতে ইরানের প্রেসিডেন্ট,দিলেন অবমাননার জবাব
জাতিসংঘের অধিবেশন কুরআন হাতে ইরানের প্রেসিডেন্ট। ছবি : রয়টার্স
পবিত্র কোরআন হাতে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে অংশ নিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। এসময় সম্প্রতি ইউরোপের কয়েকটি দেশে মুসলিমদের পবিত্র এই ধর্মগ্রন্থ অবমাননার নিন্দা জানান তিনি।
ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা ইরনার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চলতি বছর সুইডেন ও ডেনমার্কে পবিত্র কুরআন অবমাননার নিন্দা জানান রাইসি। এ সময় পবিত্র কুরআন মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাসের অবমাননা করতে নিষেধ করেছে জানিয়ে বলেন, মহান আল্লাহর চেয়ে ভালো আর কে মানবতাকে সংজ্ঞায়িত করেছে এবং মানবীয় মর্যাদাকে সমুন্নত করেছে?
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৮তম অধিবেশনে অংশ নিয়ে ভাষণ দেন ইরানি প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি হাতে পবিত্র কোরআনের একটি কপি ধরে রেখেছিলেন।
তিনি দাবি করেন, ‘বিশ্বকে আমেরিকানাইজ (আমেরিকাকরণ) করার প্রকল্প ব্যর্থ হয়েছে। বিশ্বজুড়ে দেশগুলোর ‘প্রতিরোধ এবং সচেতনতা’ আগের চেয়ে আরও বেড়েছে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেলকে কটাক্ষ করে ইরানের প্রেসিডেন্ট বলেন, পশ্চিমারা পরিচয় সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছে। কারণ তারা বিশ্বকে ‘জঙ্গল’ এবং নিজেদেরকে ‘বাগান হিসেবে’ দেখে থাকে।
তিনি আরও বলেন, পশ্চিমা গণতন্ত্র ‘তার যাত্রার শেষ প্রান্তে পৌঁছেছে’ এবং পশ্চিম এশিয়ার জনগণ পশ্চিমা গণতন্ত্রের ‘সত্যিকারের অর্থ’ জানে। আর তা হলো – ‘অভ্যুত্থান, দখলদারিত্ব এবং যুদ্ধ।’
রাইসি জোর দিয়ে বলেন, তার দেশ ‘অঞ্চল এবং বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক অভিন্নতার’ নীতির পক্ষে এবং ‘ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে বিশ্বের সাথে মিথস্ক্রিয়া করতে’ আগ্রহী। পশ্চিমা গণতন্ত্রের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘যে স্কুলটি বিশ্বের জন্য একটি মডেল হতে চেয়েছিল তা পাঠ (শিক্ষা) হয়ে উঠেছে এবং এটি তার যাত্রার শেষের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে।’
সাধারণ পরিষদে ভাষণ দেওয়ার সময় পবিত্র কোরআনের একটি অনুলিপি হাতে ধরে প্রেসিডেন্ট রাইসি ইউরোপের কয়েকটি দেশে মুসলিমদের পবিত্র এই গ্রন্থের অবমাননার সাম্প্রতিক ঘটনার নিন্দা করেন। তিনি বলেন, কোরআনের শিক্ষা ‘কখনও আগুনে জ্বলবে না।’
তিনি সুইডেনে কোরআন পোড়ানো এবং হিজাব পরিহিত মেয়েদের ফ্রান্সে স্কুলে যেতে বাধা দেওয়ার মতো ইসলামবিদ্বেষী কাজের নিন্দা করেন। রাইসি উল্লেখ করেন, পবিত্র কোরআন মানুষকে আধ্যাত্মিকতা, সত্য এবং নৈতিকতার শিক্ষা দেয়।
এই বছরের জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে ১৪০ টিরও বেশি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন।