ইসরায়েলি অভিযানে আমেরিকান নাগরিক নিহত
দখলকৃত পশ্চিম তীরে ওমর আব্দুলমাজিদ আসাদ নামে ফিলিস্তিনি বংশোদ্ভূত যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকের মরদেহ পাওয়া গেছে। ইসরায়েলি অভিযানের পর হাতকড়া পরা অবস্থায় ওই ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ এবং আসাদের স্বজনেরা মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে। ৮০ বছর বয়সী ওমর আব্দুলমাজিদ আসাদের হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করা হয়েছে।
এদিকে, এই ঘটনায় ইসরায়েলের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর রয়টার্সের।
তবে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর দাবি বুধবার তারা জিলজিলিয়া গ্রামে রাতভর অভিযান চালানোর সময় একটি চেকপোস্টে তল্লাশি চলাকালে ওমর আবদেল মজিদ আসাদ নামের এক ফিলিস্তিনিকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপরে সৈন্যরা যখন ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেয় তখন তিনি বেঁচে ছিলেন।
এক বিবৃতিতে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, মিলিটারি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ ঘটনাটি পর্যালোচনা করছে। তদন্ত শেষে ফলাফলগুলো সামরিক জেনারেল অ্যাডভোকেটের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
ওমর আবদেল মজিদ আসাদের ভাই বলেছেন, তার ভাই যুক্তরাষ্ট্রের উইসকনসিনের বাসিন্দা ছিলেন। কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস করার পরে ১০ বছর আগে তিনি পশ্চিম তীরে ফিরে এসেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নেড প্রাইস বলেছেন, আমরা এই ঘটনার তদন্ত চাই। তিনি বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মৃতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছে এবং কনস্যুলার সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছে।
ময়নাতদন্তের অনুমতি দেওয়ার জন্য আসাদের পরিবার বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দাফন বিলম্বিত করে। স্থানীয় চিকিৎসক ইসলাম আবু জাহের বলেছেন, তার কাছে আনার পরে আসাদকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন তিনি কিন্তু তখন আসাদের শরীরে অসাড় ছিল তখন। তিনি আরও বলেন, আসাদের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই এবং তার মৃত্যুর কারণও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
ইসলাম আবু জাহের বলেন, সম্ভবত তিনি হার্ট অ্যাটাক বা কোনো ধরনের আতঙ্কের শিকার হয়েছেন। এর আগে আসাদের ওপেন হার্ট সার্জারি করা হয়েছিল।
জিলজিলিয়া গ্রাম পরিষদের প্রধান ফুয়াদ কাতুম বলেছেন, আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করে বাড়ি ফেরার সময় ইসরায়েলি সেনারা ওমর আবদেল মজিদ আসাদের গাড়ি থামায়। এরপর চোখ ও হাত বেঁধে তাকে একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে যায়।
সবজি বিক্রেতা মামদুহ এলাবুদের বলেন, ২০ মিনিটের জন্য আটকে রেখেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। এর এক ঘণ্টারও বেশি সময় পরে আসাদের মৃতদেহ পাওয়া যায়। যদিও তাকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। তিনি আরও বলেন, সৈন্যরা চলে যাওয়ার পরে মাটিতে এক ব্যক্তিকে পড়ে থাকতে দেখতে পাই। তিনি মাটিতে উপুড় হয়ে ছিলেন।
একটি ফেসবুক পোস্টে, ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ শাতায়েহ ওই ব্যক্তির মৃত্যুর জন্য ইসরায়েলি বাহিনীকে দায়ী করেছেন। তিনি এটিকে একটি অপরাধ বলে অভিহিত করেছেন।
কেএফ/