গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বে করোনায় ৩৩০৬ জনের মৃত্যু
চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে দৈনিক মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে। সেই সঙ্গে কমেছে আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ হাজারের বেশি মানুষ। একই সময়ে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা নেমে এসেছে সাড়ে ১৮ লাখে।
করোনার থাবায় নাকাল গোটা বিশ্ব। ভাইরাসটির তাণ্ডব কিছুদিন আগে নিম্নমুখী হয়েছিল। কিন্তু সম্প্রতি শনাক্ত হওয়া নতুন ভ্যারিয়েন্ট অমিক্রন স্বাস্থ্যব্যবস্থাকে বড় ধরনের চাপের মুখে ফেলেছে। তবে গত কয়েক দিন ধরে বিশ্বে করোনায় মৃত্যু ও শনাক্ত কিছুটা কমতির দিকে।
সোমবার (১০ই জানুয়ারি) সকালে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান রাখা ওয়েবসাইট ওয়ার্ল্ডোমিটারস থেকে পাওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৩ হাজার ৩০৬ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় মৃত্যুর সংখ্যা কমেছে প্রায় দেড় হাজার। এতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৫৫ লাখ ৫ হাজার ৮৩৯ জনে।
একই সময়ের মধ্যে ভাইরাসটিতে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ লাখ ৫১ হাজার ৮৯৪ জন। অর্থাৎ আগের দিনের তুলনায় নতুন শনাক্ত রোগীর সংখ্যা কমেছে তিন লাখের বেশি। এতে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত ভাইরাসে আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ কোটি ৭৮ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬ জনে।
অমিক্রনের প্রভাবে সংক্রমণ বেড়ে চলেছে ভারতে। করোনায় আক্রান্তের তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে প্রতিবেশী দেশ ভারত। তবে ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যার তালিকায় দেশটির অবস্থান তৃতীয়। নানা বিধি নিষেধের পরও দেশটির বিভিন্ন রাজ্য দেখছে রেকর্ড সংক্রমণ।
ভারতে করোনায় সংক্রমণ বাড়ছে দ্রুত গতিতে। নানা বিধি নিষেধের পরও রবিবার দেশটিতে এক লাখ ৭৯ হাজারের বেশি মানুষ নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন। যা আগের দিনের তুলনায় ১২ শতাংশ বেশি।
এদিকে গত ২৪ ঘণ্টায় বিশ্বজুড়ে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণের ঘটনা ঘটেছে যুক্তরাষ্ট্রে। অন্যদিকে, দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। প্রাণহানির তালিকায় এরপরই রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো, ভিয়েতনাম, তুরস্ক ও ইতালি। এতে বিশ্বব্যাপী করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৩০ কোটি ৭৮ লাখের ঘর। অন্যদিকে মৃতের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৫৫ লাখ ৫ হাজার।
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৩ লাখ ৮ হাজার ৬১৬ জন এবং মারা গেছেন ৩০৮ জন। করোনাভাইরাসে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৬ কোটি ১২ লাখ ৬৩ হাজার ৩০ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ৮ লাখ ৫৯ হাজার ৩৫৬ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে দৈনিক প্রাণহানির তালিকায় শীর্ষে রয়েছে রাশিয়া। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৭৬৩ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ১৬ হাজার ২৪৬ জন। এছাড়া মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ কোটি ৬ লাখ ৫০ হাজার ৮৪৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৩ লাখ ১৬ হাজার ১৬৩ জনের।
লাতিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিল করোনায় আক্রান্তের দিক থেকে তৃতীয় ও মৃত্যুর সংখ্যায় তালিকার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ৫০ জন এবং নতুন করে করোনায় সংক্রমিত হয়েছেন ২৪ হাজার ৩৮২ জন। অপরদিকে মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২৫ লাখ ২৩ হাজার ৯০৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ লাখ ২০ হাজার ৩১ জনের।
এছাড়া গত এক দিনে যুক্তরাজ্যে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৪১ হাজার ৪৭২ জন এবং মারা গেছেন ৯৭ জন। মহামারির শুরু থেকে এই দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ কোটি ৪৪ লাখ ৭৫ হাজার ১৯২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং ১ লাখ ৫০ হাজার ১৫৪ জন মারা গেছেন। একই সময়ে ইতালিতে নতুন করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ৬৫৯ জন এবং মারা গেছেন ১৫৭ জন। করোনা পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ অঞ্চলে। হাসপাতালে ভর্তির সংখ্যা আগের সব রেকর্ডকে ছাড়িয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির প্রশাসন।
কঠোর বিধি নিষেধের পরও চীনের বেশ কয়েকটি শহরে করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলেছে। বেইজিং অলিম্পিককে সামনে রেখে তিয়ানজিনসহ বেশ কয়েকটি শহরে বিধি নিষেধ আরও কঠোর করার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। এদিকে সংকটের শঙ্কায় খাদ্য ও নিত্যপণ্য মজুদ বাড়ছে দেশটির বিভিন্ন শহরে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ২০২০ সালের ১১ই মার্চ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) করোনাকে 'বৈশ্বিক মহামারি' হিসেবে ঘোষণা করে। এর আগে একই বছরের ২০ই জানুয়ারি বিশ্বজুড়ে জরুরি পরিস্থিতি ঘোষণা করে সংস্থাটি। এখন পর্যন্ত বাংলাদেশসহ বিশ্বের ২২৪টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে কোভিড-১৯।
কেএফ/