পোল্যান্ড সীমান্ত থেকে ফিরতে বাধ্য হলেন ডাক্তাররা
পোল্যান্ড সীমান্তে রীতিমতো ক্যাম্প তৈরি করে ফেলেছিলেন ডক্টরস বিয়ন্ড বর্ডারের ডাক্তার এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। বেলারুশ-পোল্যান্ড সীমান্তে আটকে থাকা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সাহায্য করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য। অভিযোগ রয়েছে, গত কয়েকমাসে পোল্যান্ড তা করতে দেয়নি। বারংবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সঙ্গে দেখাই করতে দেয়নি পোল্যান্ডের সীমান্তরক্ষীরা। সে কারণেই ক্যাম্প গুটিয়ে ফিরে যেতে বাধ্য হয়েছেন সংগঠনের ডাক্তাররা।
গত বেশ কয়েকমাস ধরে একের পর এক অভিবাসনপ্রত্যাশী বেলারুশ সীমান্ত দিয়ে পোল্যান্ডে ঢোকার চেষ্টা করেছেন। পোল্যান্ড তাদের ঢুকতে দেয়নি। অভিযোগ রয়েছে, ঢুকে পড়ার পরও জোর করে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ফের সীমান্তের ধারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। সেখানে ‘নো ম্যানস ল্যান্ডে’ তাদের থাকার ব্যবস্থা করা হয়েছে। অধিকাংশ অভিবাসনপ্রত্যাশী চরম ঠান্ডায় জঙ্গলে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। তাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার, পানি কিছুই নেই। গত কয়েকমাসে বেশ কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে। অনেকে অসুস্থ।
এই পরিস্থিতিতে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া জন্য গত সেপ্টেম্বরে সীমান্তে পৌঁছান ডক্টরস বিয়ন্ড বর্ডারের কর্মীরা। তাদের দাবি, সেই সময় থেকে একাধিকবার তারা ওয়ারশর কাছে অনুরোধ করেছিলেন, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া জন্য; কিন্তু লাভ হয়নি। একাধিকবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও পোল্যান্ড চিকিৎসকদের যেতে দিতে রাজি হয়নি। বস্তুত, সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করেছে পোল্যান্ড। চিকিৎসক, সাংবাদিক কাউকেই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের কাছে যেতে দেওয়া হচ্ছে না।
বেলারুশের সঙ্গে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার সীমান্তে পোল্যান্ড কাঁটাতার লাগিয়ে দিয়েছে। স্থায়ী দেয়াল নির্মাণের কাজও শুরু হয়েছে। অভিবাসনপ্রত্যশীদের রাখা হয়েছে কাঁটাতারের অন্য পারে, নোম্যানসল্যান্ডে। ফলে বেলারুশ এবং পোল্যান্ড কোনো দেশই তাদের দায়িত্ব নিতে চাইছে না।
ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং পোল্যান্ডের দাবি, বেলারুশ ইচ্ছে করেই অভিবাসনপ্রত্যাশীদের পোল্যান্ডের সীমানায় পৌঁছে দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নকে বিড়ম্বনায় ফেলার জন্য এ কাজ করা হয়েছে। তবে একাধিক মানবাধিকার সংগঠনের প্রশ্ন, অভিবাসনপ্রত্যাশীদের প্রতি সামান্য মানবিক আচরণ কি করতে পারে না ইইউ এবং পোল্যান্ড? এই ভয়ঙ্কর ঠান্ডায় তাদের প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুর ব্যবস্থা কি করে দেওয়া যায় না?
সৌজন্যে: ডয়চে ভেলে
এসএ/