পাঞ্জাবে সড়ক অবরোধে বাতিল হলো মোদির জনসভা
পাঞ্জাবে সমাবেশ করতে গিয়ে সড়ক অবরোধের মুখে পড়েন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শেষ পর্যন্ত ওই জনসভা বাতিল করতে হয়।
বুধবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে পাঞ্জাবের ফিরোজপুরে মোদির জনসভা আয়োজন করা হয়েছিল। তবে সড়ক অবরোধের কারণে জনসভায় যেতে পারেননি তিনি।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআই জানায়, সড়ক অবরোধ করেছিলেন পাঞ্জাবের স্থানীয় কৃষকেরা। কৃষি আইন প্রণয়নের কারণে পাঞ্জাবের কৃষকসমাজ বহুদিন ধরেই কেন্দ্রের ওপর ক্ষুব্ধ। যদিও সড়ক অবরোধ কারা করেছিলেন এবং কোন দাবিতে, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে কিছু জানানো হয়নি। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ কারণে রাজ্য প্রশাসনকে কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তার দিক থেকে এটা এক নিদারুণ গাফিলতি।
ওই ঘটনার পর বিমানবন্দরে ফিরে কর্মকর্তা উদ্দেশে মোদি বলেন, ‘বেঁচে ফিরতে পেরেছি, এই অনেক! এর জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে (পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী) আমার পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাবেন।’
গত দুই বছরে এটাই ছিল প্রধানমন্ত্রীর প্রথম পাঞ্জাব সফর। এ সফর আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছিল রাজ্য নির্বাচন ও দীর্ঘ সময় ধরে চলা কৃষক আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে। বিতর্কিত তিনটি কৃষি আইন বাতিল করার পর সফরের আগে মোদি টুইট করে লিখেছিলেন, ‘পাঞ্জাবে আমার ভাইবোনদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার অপেক্ষায় আছি। বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর হবে, যা রাজ্যের জনগণের জীবনযাত্রার মান উন্নত করবে।’
মোদি বুধবার বিমানে ভাতিন্ডা পৌঁছান। সেখান থেকে হেলিকপ্টারে তার যাওয়ার কথা ছিল ফিরোজপুর জেলার হুসেইনিওয়ালায় জাতীয় শহিদ স্মৃতিসৌধে। শতদ্রু নদীর তীরে রাজগুরু, ভগত সিং ও সুখদেবের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা জানিয়ে তার জনসভায় ভাষণ দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার দরুন হেলিকপ্টার ওড়ার অনুমতি না মেলায় প্রধানমন্ত্রী সড়কপথে ফিরোজপুর যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। দুই ঘণ্টার যাত্রাপথের শেষাংশে এক ফ্লাইওভারে তার গাড়িবহর থেমে যায়। উড়ালসড়কের অন্য প্রান্ত ট্রাক ও অন্যান্য গাড়ি দিয়ে অবরোধ করা ছিল। মিনিট বিশেক অপেক্ষার পর অবরোধ না ওঠায় প্রধানমন্ত্রী মোদি সফর বাতিল করে ফিরে যান।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতি অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর সফর সব সময় রাজ্য সরকারকে জানিয়ে চূড়ান্ত করা হয়। এ ক্ষেত্রেও তা করা হয়েছিল। তা সত্ত্বেও কী করে এমন ধরনের সড়ক অবরোধ করা হলো, সেটাই বিস্ময়ের। সরকারি বিবৃতিতে অবরোধের চরিত্র নিয়ে কিছু বলা না হলেও সামাজিক মাধ্যমে কৃষকদের বিক্ষোভের দৃশ্য ছড়িয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মনসুখ মান্ডবীয় ফিরোজপুরের জমায়েতে জানান, ইচ্ছা থাকলেও বিশেষ কারণে প্রধানমন্ত্রী জনসভায় আসতে পারেননি। ফলে এসব প্রকল্প উদ্বোধনের কাজ স্থগিত রাখা হচ্ছে। ভোটের আগে ৪২ হাজার ৭৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তরের জন্য এ জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বিষয়টি নিয়ে পাঞ্জাব পুলিশের পরিচালককে জবাবদিহি চেয়েছেন বলেও ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে জানা যায়।
বিজেপি সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডা এই গাফিলতির জন্য পাঞ্জাব পুলিশের সঙ্গে ও বিক্ষোভকারীদের যোগসাজশকে দায়ী করেছেন। পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী চরণজিৎ সিং চান্নি ফোন ধরেননি বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এসএ/