কিয়েভ দখলের দ্বারপ্রান্তে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে রাশিয়ার বিশাল সেনাবহর। বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) যুক্তরাষ্ট্রের এক জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা জানিয়েছেন শহরটির তিন মাইলের মধ্যে পৌঁছেছে রুশ সেনারা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, ইউক্রেনের রাজধানীর উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে অগ্রসর হওয়া রাশিয়ান সেনারা এখন শহরের কেন্দ্র থেকে মাত্র নয় মাইল (১৫ কিলোমিটার) দূরে রয়েছে। এ ছাড়া উত্তর-পূর্ব দিক থেকে অগ্রসর হওয়া রুশ সেনাবহর কিয়েভ থেকে প্রায় ২৫ মাইল (৪০ কিলোমিটার) দূরে রয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন মার্কিন ওই প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা।
তিনি আরও জানান, ইউক্রেনের উত্তরের শহর চেরনিহিভ এখন পুরোপুরি ‘বিচ্ছিন্ন’ হয়ে পড়েছে এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান শুরু হওয়ার পর থেকে রুশ বাহিনী বিভিন্ন ধরনের ৭৭৫টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।
এদিকে বৃহস্পতিবার (১০ মার্চ) কিয়েভের মেয়র জানান, সশস্ত্র বেসামরিক নাগরিকরা এখনও ইউক্রেনের রাজধানীকে সুরক্ষিত রেখেছে এবং শহরটি মূলত একটি দুর্গে পরিণত হয়েছে।
এর আগে গত মঙ্গলবার (৮ মার্চ) আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, রুশ সেনাবহর কিয়েভের ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে পৌঁছে গেছে। আর রুশ সেনারা কিয়েভে সর্বাত্মক হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে আগেই সতর্ক করেছেন ইউক্রেনের কর্মকর্তারা।
প্রসঙ্গত, গত ২১ ফেব্রুয়ারি সোমবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন রুশপন্থী বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত ইউক্রেনের দুই অঞ্চল দোনেৎস্ক ও লুহানস্ককে স্বাধীন রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। সেখানে ‘শান্তি রক্ষায়’ সেনা পাঠানোর নির্দেশ দেন তিনি। এরপর উত্তেজনা নতুন মাত্রা পায়। একই সঙ্গে ‘প্রজাতন্ত্র’ দুটিতে রুশ সেনাদের ‘শান্তিরক্ষী’ হিসেবে দায়িত্ব পালনের নির্দেশ দেন তিনি। পুতিনের এই পদক্ষেপের পর পশ্চিমাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসন শুরু করে দিয়েছে।
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি সকালে টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পূর্ব ইউক্রেনের বিদ্রোহীনিয়ন্ত্রিত ডনবাস অঞ্চলে বিশেষ সামরিক অভিযান শুরুর নির্দেশ দেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। বিদ্রোহী নিয়ন্ত্রিত পূর্ব ইউক্রেনের ওই অঞ্চলে গত আট বছরের লড়াইয়ে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
পনেরো দিনের যুদ্ধে ইউক্রেনের একাংশ এখন রাশিয়ার দখলে। আজ চলছে যুদ্ধের ১৬তম দিন। রাজধানী কিয়েভ ঘিরে রেখেছে রুশ সেনারা। ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক আর্থিক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে পশ্চিমা শক্তিগুলো। তবে যুক্তরাষ্ট্র, ন্যাটো বা অন্য কোনো পশ্চিমা শক্তিধর দেশ সামরিক হস্তক্ষেপ করতে এগিয়ে আসেনি।
এসএ/