গাজায় ২ লাখ ৬০ হাজারের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত: জাতিসংঘ
ইসরায়েলি হামলায় গুঁড়িয়ে গেছে গাজার সুসি মসজিদ। ৯ অক্টোবর আল-সাথি শরণার্থী শিবিরের। ছবি : সংগৃহীত
ইসরায়েলের মুহুর্মুহু হামলায় কেঁপে উঠছে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা। পুরো গাজা যেন ধ্বংসের জনপদে পরিণত হয়েছে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলের হামলায় গাজায় বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন প্রায় ২ লাখ ৬৪ হাজার মানুষ।
জাতিসংঘের মানবিক সহায়তাবিষয়ক সংস্থা ওসিএইচএ গতকাল মঙ্গলবার জানায়, গাজায় ২ লাখ ৬৩ হাজার ৯৩৪ জন বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
শনিবার হামাসের হামলার জবাবে ইসরায়েলের পাল্টা বোমা হামলার পর থেকে ভয়ঙ্কর লড়াইয়ে উভয় পক্ষের হাজার হাজার লোক নিহত হয়েছে।
ইসরায়েলের ৭৫ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় হামলায় দেশটির ১ হাজারের বেশি লোক নিহত হয়েছে। এদিকে গাজার কর্মকর্তারা বলেছে, বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে গাজায় ৯০০ জন নিহত হয়েছেন।
ওসিএইচএ ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে বলেছে, বোমা হামলায় ১ হাজারটিরও বেশি আবাসন ইউনিট ধ্বংস হয়েছে এবং এর মধ্যে ৫৬০টি এতটাই মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যে তারা বসবাসের অযোগ্য।
সংস্থাটির হিসাবে, বাস্তুচ্যুত প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার ৫০০ মানুষ গাজায় জাতিসংঘ পরিচালিত আশ্রয়শিবিরে উঠেছেন। সেখানকার ৮৮টি বিদ্যালয়ে এসব শিবির খোলা হয়েছে। ৭৪ হাজারের মতো মানুষ নিজেদের ঘরবাড়ি ছেড়ে আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন। অনেকে উপাসনালয়ে আশ্রয় নিয়েছেন।
ইসরায়েলের সঙ্গে ফিলিস্তিনের প্রতিরোধ সংগঠন হামাসের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সূত্রপাত গত শনিবার।
ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ওই দিন নজিরবিহীন রকেট হামলা চালায় হামাস। মাত্র ২০ মিনিটে ৫ হাজারের মতো রকেট ছুড়ে নিজেদের শক্তির জানান দেয় সংগঠনটি। ভেদ করে ইসরায়েলের নিশ্ছিদ্র সুরক্ষাবলয়।
শুধু তা–ই নয়, সীমান্ত পেরিয়ে ইসরায়েলে ঢুকে পড়েন হামাসের যোদ্ধারা। শুরুতে হতবাক হলেও দ্রুত পাল্টা জবাব দেয় ইসরায়েল। পাল্টা আক্রমণ করে গাজা উপত্যকায়। এর পর থেকে ফিলিস্তিনে মুহুর্মুহু বোমা পড়ছে।
পাঁচ দিন ধরে ইসরায়েলি বিমান হামলায় গাজায় অসংখ্য ভবন ধসে পড়েছে। দেখা দিয়েছে খাবারের চরম সংকট।
ইসরায়েল ইতোমধ্যে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ‘সম্পূর্ণ অবরোধ’ আরোপ করেছে, খাদ্য, পানি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দিয়েছে। এই পদক্ষেপের ব্যাপারে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এটি ইতিমধ্যেই ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতির অবনতি ঘটাবে।